Advertisement
E-Paper

বাগানের রথ আটকে গেল শিবাজির শহরে

এক ব্রিটিশ কোচ স্বস্তি এনে দিলেন আর এক ব্রিটিশ কোচকে! মঙ্গলবার পুণেতে ডিএসকে শিবাজিয়ান্সের ব্রিটিশ কোচ ডেভ রজার্সের স্ট্র্যাটেজিতে এ বারের আই লিগে প্রথম আটকাল মোহনবাগান। শিবাজির শহরে এসে আটকে গেল সনি-ডাফিদের জয়ের রথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০৪:০৩

এক ব্রিটিশ কোচ স্বস্তি এনে দিলেন আর এক ব্রিটিশ কোচকে!

মঙ্গলবার পুণেতে ডিএসকে শিবাজিয়ান্সের ব্রিটিশ কোচ ডেভ রজার্সের স্ট্র্যাটেজিতে এ বারের আই লিগে প্রথম আটকাল মোহনবাগান। শিবাজির শহরে এসে আটকে গেল সনি-ডাফিদের জয়ের রথ। আর সঞ্জয় সেনের টিমের প্রথম পয়েন্ট নষ্ট করা দেখে স্বভাবতই খুশি হয়েছেন ইস্টবেঙ্গলের ব্রিটিশ কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। তিনি এ দিন বাড়িতে বসে পুরো ম্যাচই টিভিতে দেখেছেন। প্রকাশ্যে অবশ্য উচ্ছ্বাস দেখাননি। বরং ডিকা-প্লাজাদের কোচ বললেন, ‘‘এত তাড়াতাড়ি একটা ম্যাচ দেখে কী বলব! এখনও লিগের অনেক ম্যাচ বাকি। আর অন্য টিমের ফলাফলের চেয়ে আমার কাছে বেশি গুরুত্ব পায়, নিজের টিমের জয়।’’ শুধু মর্গ্যানের টিমই নয়, আইজল, বেঙ্গালুরুও এ দিনের ম্যাচের ফলাফলে লাভবানই হল।

শিবাজিয়ান্স ম্যাচের পর লাল-হলুদের সঙ্গে বাগানের পয়েন্টের পার্থক্য দাঁড়াল তিন। ২৯ জানুয়ারি মিনার্ভা পঞ্জাবের বিরুদ্ধে জিততে পারলেই স়ঞ্জয় সেনের টিমকে ধরে ফেলবেন মেহতাব-ওয়েডসনরা।

মর্গ্যান যখন কলকাতায় বসে টিভিতে মোহনবাগান-শিবাজিয়ান্স ম্যাচ উপভোগ করছেন, তখন বালেওয়াড়িতে সবুজ-মেরুন কোচের কপালের ভাঁজ বাড়ছিল। ভাঙা হাত নিয়েই বারবার উঠে চিৎকার করে সনিদের নানা নির্দেশ দিতে দেখা গেল সঞ্জয়কে। তাতে অবশ্য সনি-ডাফিদের পারফরম্যান্সের গ্রাফ উর্ধ্বমূখী হয়নি। আগের চার ম্যাচের জোশটাই কোনও এক অজ্ঞাত কারণে উধাও হয়ে গিয়েছিল এ দিন।

এর কারণ কি সনি-ডাফিদের আত্মতুষ্টি?

না কি ছত্রপতি শিবাজির মতোই ‘মোহনবাগান রোকো’ লড়াইয়ে নির্মল ছেত্রী-সাসাদের মরিয়া জেদ বাগানের জয়রথকে থামিয়ে দিল লিগের পাঁচ নম্বর ম্যাচেই?

কোন কারণে আই লিগের শীর্ষে থাকা টিম মঙ্গলবারের বালেওয়াড়িতে একেবারেই নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ল?

বাগান কোচ সঞ্জয় সেনের কাছে প্রশ্নগুলো রাখা হলে তিনি নানা যুক্তি দিলেন। পুণে থেকে ফোনে বলছিলেন, ‘‘ছয় পয়েন্ট আমাদের লক্ষ্য ছিল। দু’ পয়েন্ট কম হয়েছে। পরের ম্যাচগুলোতে এটা মাথায় রাখতে হবে। কিছু ভুল তো হয়েছেই। লম্বা লিগে এ রকম হতেই পারে। ’’

শেষ চার ম্যাচে যে ভাবে ঝলমল করেছিল বাগান, বিপক্ষের উপর যে ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা গিয়েছিল সনিদের, যে ভাবে প্রথম থেকেই আক্রমণের ঝড় তুলছিল সঞ্জয় ব্রিগেড, এ দিন সেই টিমটাকেই মনে হল একেবারে সাদামাঠা। ফ্যাকাসে। জেতার সেই তাগিদটাও যেন ছিল না কাতসুমি-প্রণয়দের।

সনি-ডাফি-জেজেদের ঘাড়ে একজন করে ফুটবলারকে তুলে মোহনবাগানের আক্রমণের জায়গাটা প্রথমেই আটকে দিয়েছিলেন শিবাজিয়ান্সের ব্রিটিশ কোচ। স্বভাবতই লেফট উইং ধরে সনি যে ভাবে স্বচ্ছন্দে আক্রমণে উঠে থাকেন, সেই রাস্তাটা এ দিন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তার মধ্যেও মোহনবাগান যে সুযোগ পায়নি এমনটা নয়, কিন্তু সেই সুযোগুলোও কাজে লাগাতে পারেননি ডাফি, জেজেরা। উল্টে পুণের টিম কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে বেশ কিছু ভাল সুযোগ তৈরি করে ফেলছিল। বিরতির আগেই এগিয়ে যেতে পারত শিবাজিয়ান্স। কিন্তু পুণের টিমের বেশির ভাগ ফুটবলারের অভিজ্ঞতার অভাব আর বাগানের গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদারের সৌজন্যে শেষ পর্যন্ত পুণে থেকে একেবারে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে না মোহনবাগানকে। গোলশূন্য ড্র করার সুবাদে অন্তত এক পয়েন্ট পেলেন সনিরা।

সঞ্জয় সেন সব সময়ই বলে থাকেন, তাঁর টিমের সাফল্যের পিছনে নির্দিষ্ট কোনও ফুটবলারের ভূমিকা থাকে না। একতা এবং টিমগেমই মোহনবাগানের সাফল্যের চাবিকাঠি। মঙ্গলবার অবশ্য পুণেতে পুরো টিমই একসঙ্গে খারাপ পারফরম্যান্স করল। প্রথমার্ধে বিশ্রী ফুটবল খেলেছে মোহনবাগান। তুলনায় ঘরের মাঠে ডাভ রজার্সের টিম অনেক বেশি চনমনে ছিল। বিরতির পর অবশ্য কিছুটা লড়াই করতে দেখা গিয়েছে সনিদের। কিন্তু গোলের মুখ খুলতে পারেননি তাঁরা। বাগান কোচ স্বীকারও করে নিলেন, ‘‘বিরতির আগে আমার টিম সত্যিই খেলতে পারেনি। বরং শিবাজিয়ান্স এগিয়ে যেতে পারত। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা কিছুটা লড়াইয়ে ফিরেছিলাম। গোলের সুযোগগুলো নষ্ট না করলে ফল অন্য রকমও হতে পারত।’’

মোহনবাগান এর পর এএফসি কাপ খেলতে কলম্বো চলে যাচ্ছে। তার আগে চোট পেয়ে সঞ্জয়ের চিন্তা বাড়িয়েছেন এডুয়ার্ডো। ফিরে এসে আবার রবীন্দ্রসরোবরে আই লিগের ম্যাচ রয়েছে বাগানের। আইজলের বিরুদ্ধে। তার পর আবার এএফসি কাপের ম্যাচ। এ রকম টানা ম্যাচ খেলার মাঝেই মোহনবাগানের সমস্ত ভুলত্রুটিগুলো ঢাকার চেষ্টা করতে হবে সঞ্জয়কে। সঙ্গে চোট-আঘাত সমস্যাগুলোও কাটিয়ে উঠতে হবে। না হলে লম্বা লিগে সাফল্য পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। তেরো বছর পর বাগানকে আই লিগ এনে দেওয়া কোচ নিশ্চয়ই এটা মাথায় রাখবেন।

মোহনবাগান: দেবজিৎ, প্রীতম, এডুয়ার্ডো (আনাস), বিক্রমজিৎ, শুভাশিস, কাতসুমি, বিক্রমজিৎ, প্রণয়, সনি, জেজে (প্রবীর), ডাফি।

Sanjoy Sen Mohun Bagan I-League DSK Shivajians
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy