Advertisement
E-Paper

টাম্পাইন্সের বিরুদ্ধে বাগানে একা কুম্ভ আজ সঞ্জয়

অসমের নতুন সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামার জন্য হেলিপ্যাড তৈরি হচ্ছে স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায়। মঙ্গলবার এএফসি কাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটাই তাই প্রায় বাতিল হতে বসেছিল।

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৬ ০৩:২২
পাহাড়ের রং সবুজ-মেরুন। গুয়াহাটিতে এএফসি কাপের প্রস্তুতিতে মগ্ন জেজেরা। ছবি: উজ্জ্বল দেব

পাহাড়ের রং সবুজ-মেরুন। গুয়াহাটিতে এএফসি কাপের প্রস্তুতিতে মগ্ন জেজেরা। ছবি: উজ্জ্বল দেব

অসমের নতুন সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামার জন্য হেলিপ্যাড তৈরি হচ্ছে স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায়। মঙ্গলবার এএফসি কাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটাই তাই প্রায় বাতিল হতে বসেছিল।

হাতে গরম লাখ তিনেক টাকা খরচ করে, স্টেডিয়াম খুলিয়ে, পুলিশের হাতে পায়ে ধরে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত সংগঠনের অনুমতি পেয়েছে মোহনবাগান।

অনেক লড়াই করে শেষ পর্যন্ত জরিমানা থেকে বাঁচল সদ্য ফেড কাপ জয়ী ক্লাব। কিন্ত আজ টাম্পাইন্স রোভার্সের বিরুদ্ধে সঞ্জয় সেন বাঁচবেন কী করে? সবই যে বাগান কোচের বিপক্ষে।

সনি নর্ডি হাইতি চলে গিয়েছেন। চোটের জন্য খেলতে পারবেন না টিমের তিন সেরা ফুটবলার কাতসুমি, প্রীতম কোটাল ও প্রণয় হালদার। আরও বড় কথা, আগের দিন রাতে হঠাৎ-ই আবিষ্কার হয়, নিয়মানুযায়ী রিজার্ভ বেঞ্চ ভর্তি করারও ফুটবলার নেই বাগান হোটেলে। যেটা না থাকলে এএফসি জরিমানা করতই। তাই সোমবার ভোরে তড়িঘড়ি তিনের বদলে পাঁচ ফুটবলারকে ঘুম থেকে উঠিয়ে নিয়ে এসে তুলে দেওয়া হয় গুয়াহাটির বিমানে। কেন লুইস, তীর্থঙ্কর সরকার, সুভাষ সিংহ, পঙ্কজ মৌলা আর সার্থক গলুই। আশ্চর্যজনক তথ্য, তাঁদের নিয়েই সোমবার বিকেলে আন্তর্জাতিক ম্যাচ জেতার প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন বাগান কোচ। অকুতোভয় ভঙ্গিতে সঞ্জয় বলেও দিলেন, ‘‘নতুন ছেলেরাই প্রমাণ করে দেবে ওরা সনি-কাতসুমিদের বিকল্প। এটাই তো চ্যালেঞ্জ।’’

সিঙ্গাপুরের টাম্পাইন্স রোভার্স আহামরি কোনও দল নয়। এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যুবভারতীতে সুন্দ্রামূর্তির টাম্পাইন্সকে ৩-১ হারিয়েছিল বাগান। ওটাই ছিল সনি-জেজেদের এই মরসুমে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। বাগানের পুরো টিম থাকলে আইজলের মতো না হলেও বলে বলে হারিয়ে দিতে পারত সিঙ্গাপুরের টিমকে। কিন্তু এখন অবস্থা যা তাতে জিততে হলে জেজে-কর্নেল-কিংশুকদের নিজেদের ছাপিয়ে যেতে হবে। টাম্পাইন্স কোচ সুন্দ্রামূর্তি এ দিন আবার বলে দিলেন, ‘‘যখন বাগানের কাছে কলকাতায় হেরেছিলাম তখন আমাদের প্রি সিজন চলছে। ওটাই ছিল আমাদের প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ। এখন আমরা এস লিগ খেলছি। দু’নম্বরে আছি। বাগান ভাল দল। তবে আমরা এখন তৈরি। জিততে এসেছি।’’ তাঁর গলায় জোরের কারণ আর্সেনাল-লিভারপুলে খেলা তাদের সেরা মিডিও জার্মেইন পেনান্ট খেলবেন আজ। এফ সি পুণে সিটিতে খেলে যাওয়া পেনান্ট আগের ম্যাচটায় খেলেননি। তবে তাদের আর এক সেরা স্ট্রাইকার বিলি মেমেট কার্ডের জন্য বাইরে। চোট রয়েছে প্রথম একাদশের আরও দুই ফুটবলারের।

বাগান কোচ অবশ্য এসব নিয়ে ভাবছেনই না। কারণ মরসুমের শেষ ম্যাচের আগেও জেজে-দেবজিৎ-কিংশুক-লুসিয়ানোরা যে মানসিকতা নিয়ে স্টেডিয়ামে অনুশীলন করছিলেন তাতে সঞ্জয়ের মুখটা ঝকঝক করছিল। সেই মুখাবয়বে আরও আলো ছড়িয়ে দিলেন জেজে এই বলে যে, ‘‘ফেড কাপ থেকে এএফসিতে—দু’দিনের মধ্যেই ফোকাস বদলে ফেলাটা কঠিন। তবে আমরা তো এটাই করে আসছি মরসুমের শুরু থেকেই। ম্যাচটা জিতে মরসুম শেষ করতে চাই।’’ নিজের ফুটবলার জীবনের সোনালি বছরে ট্রফির পর ট্রফি আর কুড়ি গোলের লম্বা ইনিংস জেজেকে যেন আরও আগুনে মেজাজের করে তুলেছে। এএফসিতেও রয়েছে ছ’টা গোল। যখন তাঁকে প্রশ্ন করা হল, সনি-কাতসুমি না থাকায় তো গোল করার সব চাপ তো আপনার উপরই? ‘‘ওরা না থাকায় আমাদের একটু সমস্যা হবে। কিন্ত যারা আছে তারাও গোল করে ম্যাচ জেতাতে পারে।’’ জেজের বক্তব্য শুনে সমর্থনের হাসি পাশে বসা তাঁর কোচের মুখেও। সঞ্জয়ের মন্তব্য, ‘‘আমরা প্রথম থেকে একটা নির্দিষ্ট রোড ম্যাপ ধরে এগিয়েছি। খাওয়া, যাওয়া, আসা, মানসিকতা তৈরি—সবকিছুই ঠিকঠাক হয়েছে। সব থেকে বড় কথা কেউ চোট পায়নি। এটাই আপাতত আমাদের শেষ ম্যাচ। সবাই জিততে চাইছে।’’

টুর্নামেন্টের যা নিয়ম, তাতে টাম্পাইন্সকে হারালেই শেষ আটে উঠে যাবে সঞ্জয়ের টিম। কারণ এটা এক পর্বের খেলা। নক-আউট। অতিরিক্ত সময়, টাইব্রেকার সবই আছে। বাগান জিতলে তাদের কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচ পড়বে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি। এবং যখন সেটা হওয়ার কথা তখন আইএসএলে খেলার জন্য চলে যাবেন বাগানের প্রায় সব ফুটবলারই। পড়ে থাকবেন আজহারউদ্দিন, সার্থক, পঙ্কজরা। ফলে বছরের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেরই কোনও গুরুত্ব নেই এখন কর্তাদের কাছে। বাগানের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে, ম্যাচ জিতে লাভ কী? জিতলে তো টিমই নামানো যাবে না কোয়ার্টার ফাইনালে। এবং সেটা কিছু ফুটবলারের মধ্যেও মনে হল সংক্রমিত। বাগান কোচ অবশ্য বলে চলেছেন, ‘‘পরে কী হবে ভেবে লাভ নেই। ক্লাবের গৌরবের জন্যই ম্যাচটা জিততে হবে। দেখবেন আমরা জিতবই।’’

আজ ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামে বাগান কোচ যেন সত্যিই একা কুম্ভ।

মঙ্গলবারে
এএফসি প্রি কোয়ার্টার ফাইনাল—মোহনবাগান: টাম্পাইন্স রোভার্স (গুয়াহাটি ৭-০০)।

Tampines Rovers Mohunbagan AFC Cup
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy