Advertisement
E-Paper

সন্ধ্যায় পদত্যাগ করতে চলেছেন, বুঝতে দেননি সকালেও

তাঁর আনা সহকারি কোচ ওয়ারেন হ্যাকেটকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল আগেই। তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। হ্যাকটের বকেয়া টাকা দেওয়া দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার জন্য সোমবার সকালে ফোন করেছিলেন ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্যকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:১৭
বিদায়: হঠাৎ পদত্যাগে ইস্টবেঙ্গল পর্ব শেষ হল মর্গ্যানের। ফাইল চিত্র

বিদায়: হঠাৎ পদত্যাগে ইস্টবেঙ্গল পর্ব শেষ হল মর্গ্যানের। ফাইল চিত্র

তাঁর আনা সহকারি কোচ ওয়ারেন হ্যাকেটকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল আগেই। তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। হ্যাকটের বকেয়া টাকা দেওয়া দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার জন্য সোমবার সকালে ফোন করেছিলেন ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্যকে। কিন্তু তাঁকে কোচ করার ব্যাপারে যিনি এ বার প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন সেই ফুটবল সচিবের সঙ্গেই বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করলেও ট্রেভর জেমস মর্গ্যান বুঝতেও দেননি তিনি সন্ধ্যায় পদত্যাগ করতে চলেছেন। সন্তোষবাবু রাতে বললেন, ‘‘সকালেই তো কথা হয়েছে। ওঁকে আমরা তো সরে যেতে বলিনি। পরপর চারটে ম্যাচ হারার পরে হয়তো বুঝেছেন আর হবে না। সে জন্যই হয়তো পদত্যাগ করেছেন।’’

সন্তোষবাবুকে কিছু না বললেও জানা গিয়েছে সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাঁর ঘনিষ্ঠ লোকজন ও ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলে উইলিস প্লাজাদের হেড মাস্টার বুঝে যান আজ না হোক কাল তাঁকে সরতে বাধ্য করা হবে। তাঁর প্রিয় গোলকিপার কোচ অভিজিৎ মণ্ডলকে সরানোর ইঙ্গিতও পেয়েছিলেন তিনি। আজ মঙ্গলবার অনুশীলনে নামলে ফের সমর্থক বিক্ষোভের ইঙ্গিতও না কি পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল তাঁর কানে। এমনিতে ক্লাব সচিব-সহ বিভিন্ন কর্তারা তাঁর বিরুদ্ধে নানা কথা বলে চাপ সৃষ্টি করছিলেন ডার্বির আগে থেকেই। মোহনবাগানের কাছে বিশ্রী হারের পর শিলিগুড়িতেই কর্তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে মর্গ্যান আরও বিরাগভাজন হয়েছিলেন কর্তাদের। কেউ তাঁর সঙ্গে বাক্যালাপও করছিলেন না গত কয়েকদিন। ফলে পদত্যাগ করা ছাড়া লাল-হলুদ কোচের সামনে কোনও উপায় ছিল না।

সাত বছরে প্রায় চার বছর লাল-হলুদের কোচ মর্গ্যান। আই লিগ এনে দিতে পারেননি আগের তিন মরসুমেও। এ বারও পারলেন না। কিন্তু এভাবে মাথা নিচু করে কখনও ব্রিটিশ কোচকে সরে যেতে হয়নি। এর আগে গোয়াতেও ডেম্পোকে অবনমনে ফেলে সরে গিয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: সনিদের বিরুদ্ধে এগিয়ে আইজল, বলছেন ওডাফা

লাল-হলুদে চার নম্বর ইনিংস শুরু থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে ছিলেন সচিব কল্যাণ মজুমদার। ফুটবল সচিব-সহ অন্য কর্তাদের জোরাজুরিতে সচিব মেনে নেন মর্গ্যানকে। এ দিন মর্গ্যানের পদত্যাগ পত্র হাতে পাওয়ার পর সচিব বললেন, ‘‘ও এর আগেও নানা নাটক করেছে। শিলিগুড়িতে এ বার সেটা শুরু হয়েছিল। যে কোণঠাসা হয়, সে অন্যকে দোষারোপ করে বাঁচার চেষ্টা করবে সেটা স্বাভাবিক। মর্গ্যান সেটা করছিল। আমি তো আগেই বলে দিয়েছিলাম আমরা এ বারও আই লিগ পাব না। কারণ আমি এতদিনের অভিজ্ঞতায় বুঝেছিলাম, লোকটার টিম নামানোর দ্বিতীয় কোনও ফর্মুলা নেই।’’ আরও কিছু বাছা বাছা শব্দ প্রয়োগ করেন লাল-হলুদ সচিব। মর্গ্যান পদত্যাগ করার পর ক্লাবে গিয়ে দেখা গেল কর্তাদের মধ্যে স্বস্তির হাওয়া। তার রেশ ধরা পড়ে ক্লাব সচিবের গলাতেই, ‘‘যখন টিমটাকে লিগের শেষ ল্যাপে ভাল খেলে তৈরি করানোর কথা, তখন উনি ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে গেলেন। সেই টিম তো হারবেই। বেঙ্গালুরু ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধ আর লুধিয়ানার ম্যাচ ছাড়া বাকি ম্যাচ তো আমরা খেলতেই পারিনি।’’

ব্রিটিশ কোচের রোখও যে একেবারে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে, সেটা বোঝা গিয়েছিল রবিবার বারাসতে ডিএসকে শিবাজিয়ান্স ম্যাচ হারার পরই। টানা চার নম্বর ম্যাচ হেরে আই লিগ থেকে ইস্টবেঙ্গল ছিটকে যাওয়ার পরে তাঁর পক্ষে আর থাকা সম্ভব নয় সেটাও আঁচ করেছিলেন তিনি। কিন্তু আর্থিক দর কষাকষি না করে হঠাৎ-ই তিনি কেন এ ভাবে সরে গেলেন তা নিয়ে অবাক লাল-হলুদের সব কর্তাই। আসলে ‘মর্গ্যান লাও, ক্লাব বাঁচাও’ শ্লোগান যে এভাবে ‘মর্গ্যান হটাও, ক্লাব বাঁচাও’ হয়ে বদলে যাবে স্বপ্নেও হয়তো ভাবেননি ইস্টবেঙ্গলে চার নম্বর ইনিংসে কোচিং করতে আসা মর্গ্যান।

Trevor Morgan East Bengal Football Resignation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy