Advertisement
E-Paper

‘ওয়াটসন ঝড় দেখিয়ে দিল, মাহি-মন্ত্রই মোক্ষম’

চেন্নাই সুপার কিংস এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদ—দু’টো দলই কিন্তু দক্ষিণ ভারতের। এ রকম একটা হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ শেষ পর্যন্ত একপেশে করে দিলেন চেন্নাইয়ের অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান শেন ওয়াটসন।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৮ ০৪:১৭
চ্যাম্পিয়ন: ধোনির হাতে ট্রফি তুলে দিচ্ছেন ভারতীয় বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট সি কে খন্না। ছবি: পিটিআই

চ্যাম্পিয়ন: ধোনির হাতে ট্রফি তুলে দিচ্ছেন ভারতীয় বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট সি কে খন্না। ছবি: পিটিআই

এ বারের আইপিএলের দু’টো যোগ্য দল রবিবার ফাইনাল খেলতে নেমেছিল ওয়াংখেড়েতে। মজার ব্যাপার হল, চেন্নাই সুপার কিংস এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদ—দু’টো দলই কিন্তু দক্ষিণ ভারতের। এ রকম একটা হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ শেষ পর্যন্ত একপেশে করে দিলেন চেন্নাইয়ের অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান শেন ওয়াটসন। ৫৭ বলে ওয়াটসনের অপরাজিত ১১৭ রানই তৃতীয় আইপিএল ট্রফিটা এনে দিল চেন্নাই সুপার কিংসকে। দু’বছর নির্বাসনের পরে আইপিএলে ফিরে হায়দরাবাদকে আট উইকেটে হারিয়ে ট্রফিটা ঠিক হাতে তুললেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।

রবিবার লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচ জিতেছে পাকিস্তান। ঐতিহ্যের সেই লর্ডসের জায়ান্ট স্ক্রিনেও টেস্ট শেষ হওয়ার পরেই দেখানো হল ওয়াংখেড়ের ফাইনাল। গোটা বিশ্বে আইপিএলের জনপ্রিয়তা এমন জায়গাতেই গিয়েছে।

এ দিনের খেলাটা ছিল চেন্নাইয়ের ব্যাটিংয়ের সঙ্গে হায়দরাবাদের বোলিংয়ের। কেন উইলিয়ামসনের দল ১৭৮-৬ করার পরে ভেবেছিলাম ধোনিদের লড়াই খুব সহজ হবে না। ভুবনেশ্বর কুমার শুরুটাও সে রকমই করেছিলেন। ভুবি প্রথম বলেই ওয়াটসনকে লেটসুইংয়ে পরাস্ত করার পরে তাই হায়দরাবাদের জন্য আশা জেগেছিল। ভুবি এই সময় বলের সিম সোজা রেখে অফস্টাম্পের বাইরে থেকে ইনসুইং আর অফস্টাম্প থেকে আউটসুইং করিয়ে ত্রাসের সঞ্চার করেছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও ম্যাচটা ওঁদের হাত থেকে বেরিয়ে গেল দু’টো কারণে।

এক, ওয়াটসনের দুরন্ত ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে। দুই, চেন্নাই অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনির নিখুঁত পরিকল্পনায়।

দু’বছর নির্বাসিত থাকার পরে আইপিএলে ফিরেই বিজয়ী চেন্নাই সুপার কিংস।

কেমন ছিল ধোনির পরিকল্পনা? কলকাতা আগের ম্যাচে রশিদ খানকে আক্রমণ করতে গিয়ে ডুবেছিল। ধোনির দল সেখানে আজ রশিদের বিরুদ্ধে ঝুঁকি নেয়নি। সিঙ্গলস নিয়ে হায়দরাবাদের অন্য বোলারদের জন্য অপেক্ষা করেছে। উইলিয়ামসনের দলের সন্দীপ শর্মা, সিদ্ধার্থ কলসহ বাকি বোলাররা সেই চাপটা রাখতে পারেননি বলেই খেলাটা ওয়াটসনদের কাছে এতটা একপেশে হয়ে গিয়েছিল। বিশেষ করে, ১৩তম ওভারে সন্দীপ শর্মা ২৭ রান দেওয়ার পরেই ম্যাচটা থেকে হারিয়ে যায় সানরাইজার্স।

ওয়াটসন প্রথমবার আইপিএল জয়ী রাজস্থান রয়্যালস দলে ছিলেন। টুর্নামেন্ট এগারো বছরে চলে আসার পরেও দাপটের সঙ্গে খেলে ট্রফি জিতছেন। এর পিছনে কিন্তু আমি বলব এমএস ধোনির মস্তিষ্কই কাজ করেছে। এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মধ্যে না থাকা ওয়াটসনকে ওপেন করতে পাঠিয়ে ফুরফুরে মেজাজে খেলাটা উপভোগ করতে দিয়েছেন চেন্নাই অধিনায়ক। যার ফল, আইপিএলে দু’টো শতরান করে ফেললেন ওয়াটসন। এত দিন আইপিএলে বিধ্বংসী ইনিংস বললেই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভেসে উঠত ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারদের মুখ। ওয়াটসন আজ সে রকমই খেললেন। প্রথম দশ বলে কোনও রান পাননি। তার পরে ৫১ বলে শতরান।

হায়দরাবাদের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন (৩৬ বলে ৪৭) এ বারের আইপিএলে দারুণ খেলেছেন। কিন্তু বিপক্ষের এনগিডি লুঙ্গি আজ নিয়ন্ত্রিত বল করে হায়দরাবাদকে বিধ্বংসী হতে দেননি। এ বার আসা যাক, ধোনির অধিনায়কত্বে। এর আগে হরভজন সিংহকে দলে নিয়েও বল করাননি। বুঝেছিলেন বিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা ওঁকে আক্রমণ করতে পারেন। এ দিন হরভজনকে বাদ দিয়ে কর্ণ শর্মাকে দলে রাখলেন চেন্নাই অধিনায়ক। আসলে ধোনি এমন এক জন বাস্তববাদী অধিনায়ক যিনি জানেন জেতার আসল মন্ত্র কী হতে পারে। এ দিন রবীন্দ্র জাডেজা মার খেতেই কর্ণ শর্মাকে দিয়ে বল করিয়ে নিলেন ধোনি। দল গঠন থেকে বোলিং পরিবর্তন, সিএসকের পুরনো ক্রিকেটার ধরে রাখা— সব ব্যাপারেই অনবদ্য ধোনি। এই খেতাব জয় যতটা চেন্নাইয়ের, ততটাই ধোনিরও।

সব শেষে একটা কথা। ব্যাটিংয়ের সময় রান আউট হয়ে তাড়াতাড়ি প্যাভিলিয়ানে ফিরে গিয়েছিলেন কলকাতার ছেলে শ্রীবৎস গোস্বামী। চেন্নাইয়ের ব্যাটিংয়ের সময় ডান দিকে ঝাঁপিয়ে সুরেশ রায়নার দুর্দান্ত ক্যাচ নিলেন শ্রী। বলের সঙ্গে ওঁর লাফানোর সময়জ্ঞানটা দারুণ। এ রকম মঞ্চে একটা বড় ইনিংস খেলতে পারলে বাংলা ক্রিকেটের মুখটা উজ্জ্বল করতে পারতেন শ্রীবৎস।

MS Dhoni CSK Champion IPL 11 IPL 2018 Cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy