Advertisement
E-Paper

‘রান তাড়া করতে হলে ধোনি নামুন চার নম্বরেই’

‘মিশন অস্ট্রেলিয়া’র শেষে এসে বোঝা গেল, ‘মিশন বিশ্বকাপ’-এর জন্যও ঠিক রাস্তায় হাঁটছে ভারত।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩৬
হাফসেঞ্চুরির হ্যাটট্রিক করে সিরিজ সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। —ফাইল চিত্র।

হাফসেঞ্চুরির হ্যাটট্রিক করে সিরিজ সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। —ফাইল চিত্র।

অবিশ্বাস্য একটা ক্রিকেট রূপকথা অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে লিখে ফিরছে বিরাট কোহালির দল। একই সঙ্গে টেস্ট এবং ওয়ান ডে সিরিজ জয়। যা এর আগে এশিয়ার কোনও দেশ করে দেখাতে পারেনি।

‘মিশন অস্ট্রেলিয়া’র শেষে এসে বোঝা গেল, ‘মিশন বিশ্বকাপ’-এর জন্যও ঠিক রাস্তায় হাঁটছে ভারত। বিশ্বকাপ অবশ্যই অন্য খেলা, ইংল্যান্ডের পরিবেশে হবে। কিন্তু এতটুকু বলা যায়, ভারতীয় দল একটা দিশা পেয়ে গিয়েছে।

শুক্রবার মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়াকে সাত উইকেটে হারিয়ে ওয়ান ডে সিরিজ জেতার পাশাপাশি ভারতের প্রাপ্তির ঘরে আরও কিছু জমা পড়ল। যেমন, এক) ধোনির ছন্দে ফেরা। দুই) রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তি দেখে নেওয়া। তিন) আদর্শ ব্যাটিং অর্ডারের আঁচ পাওয়া।

হাফসেঞ্চুরির হ্যাটট্রিক করে সিরিজ সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। যার মধ্যে দু’টো ম্যাচে অপরাজিত থেকে খেলা শেষ করে ফিরলেন। মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার ২৩০ রানটা মোটেও খুব বড় রান ছিল না। কিন্তু ভারত এই রান তুলতেও একটা সময় চাপে পড়ে গিয়েছিল। কোহালি-ধোনি যখন খেলছিলেন, মনে হচ্ছিল, ম্যাচ সহজেই বেরিয়ে যাবে। কোহালি আউট হওয়ার পরে রান রেটটা একটু কমে গিয়েছিল। কিন্তু ধোনি-কেদারের জুটি কাজের কাজটা করে দিল।

ধোনি এখন যে খেলাটা খেলছেন, তাকে বলা যেতে পারে ‘ক্যালকুলেটিভ ক্রিকেট’। অঙ্ক কষে ব্যাটিং। কোন ওভারে ঝুঁকি নেব, কোন বোলারকে মারব— এ সব যেন মাথার মধ্যে ছকা থাকছে। শেষ দিকে টিভি-তে দেখলাম, আম্পায়ারের কাছে গিয়ে ধোনি দেখে নিচ্ছেন কোন বোলারের কত ওভার বাকি। এই ম্যাচে ধোনি মারার জন্য বেছে নিয়েছিলেন মার্কাস স্টোয়নিস আর পিটার সিডলকে। স্টোয়নিসকে মারা একটা শট তো দিনের সেরা। একটু স্টেপ আউট করে মিড অনের পাশ দিয়ে লিফ্‌ট করে চার।

মেলবোর্নে ধোনি বড় শট নেননি। হয়তো প্রয়োজনে নেবেন। কিন্তু পরের দিকে নয়, রান তাড়া করতে হলে চারেই নামুন ধোনি। তা সেই লক্ষ্য তিনশোর ওপর হলেও। আসলে চার নম্বরে ধোনির কাজটা হবে শেষ পর্যন্ত থেকে একটা দিকের উইকেট বাঁচিয়ে রাখা। অন্য দিক থেকে বিগ শট খেলার লোক তো আছেই। আরও একটা কথা মাথায় রাখতে হবে। শেষ দিকে ধোনি কিন্তু দীনেশ কার্তিক, কেদার যাদব বা হার্দিক পাণ্ড্যের মতো ব্যাটসম্যানকে পেয়ে যাবেন। এঁদের সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ ফিনিশ করা তাই কঠিন হবে না ধোনির।

ধোনি এই মুহূর্তে একটা ‘প্যাকেজ’। যিনি ফিল্ডিংয়ের সময় বোলারদের পরামর্শ দেবেন। আবার ব্যাট করতে নেমে এককে দুই, দুইকে তিন করবেন। আগের মতো না হলেও ধোনি কিন্তু এখনও যথেষ্টই ক্ষিপ্র। আর শেষ পর্যন্ত থেকে ম্যাচটা ‘ফিনিশ’ করবেন। আমি ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের অংশ হলে ধোনিকে চারে পাঠিয়ে বলতাম, শেষ পর্যন্ত খেলে এসো। হয়তো রবি শাস্ত্রী-কোহালি সেটাই করছেন।

বিশ্বকাপের আগে ভারতের রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তিও বোঝা গেল। শুক্রবার রিজার্ভ বেঞ্চের তিন ক্রিকেটার নামিয়েছিলেন কোহালি। যুজবেন্দ্র চহাল, কেদার যাদব, বিজয় শঙ্কর। যার মধ্যে প্রথম দু’জন ম্যাচ জেতানোয় বড় ভূমিকা নিলেন।

মেলবোর্নের বড় মাঠে খুব সহজ একটা কৌশলে বল করেছেন লেগস্পিনার চহাল। স্টাম্প টু স্টাম্প আক্রমণ, বলটা ব্যাটের কাছাকাছি ফেলেছেন। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা চহালকে ভাল করে না বুঝেই শট খেলতে গিয়ে আউট হন। ম্যাচের সেরা চহালের ছয় শিকারের মধ্যে সেরা অবশ্যই স্টোয়নিস। লেগ-মিডলে পড়া বল ঘুরে গিয়ে স্টোয়নিসের ব্যাট ছুঁয়ে স্লিপে চলে গেল।

পরের যে দশটা ওয়ান ডে ভারত খেলবে (প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া) তাতে বড় কোনও অঘটন না ঘটলে বিশ্বকাপে ভারতের ব্যাটিং লাইন এ রকম হওয়া উচিত। রোহিত, ধওয়ন, কোহালি, ধোনি, কেদার, কার্তিক, হার্দিক, ভুবনেশ্বর, শামি, বুমরা, চহাল। মিডল অর্ডারে আমি যে কোনও দিন অম্বাতি রায়ডুর জায়গায় কেদারকে খেলাব। কেদারের বোলিংটাও ইংল্যান্ডে কাজে দেবে।

Cricket Cricketer MS Dhoni
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy