যে জায়গাটায় আমি সবচেয়ে বেশি স্বচ্ছন্দ, সেই টেনিস কোর্টে বিশ্বযুদ্ধে নামার সময়টা চলে এল। খুব বেশি কথা বলতে আমার ভাল লাগে না। অনেক সময় বেশি কথা বললে চেঁচামেচিই বেশি হয়। তার চেয়ে আমার কাজে জবাব দেওয়াটা বেশি পছন্দের। যাক, আমি খুশি যে অলিম্পিক্স নির্বাচনের পর্বটা মিটে গিয়েছে। এ বার আমরা প্লেয়াররা আরও দরকারি জিনিস, মানে কোর্টে জেতার ব্যাপারে ফোকাস করতে পারব। অলিম্পিক্স এমন একটা মঞ্চ যেখানে বিশ্বসেরা অ্যাথলিটরা একে অপরের সঙ্গে লড়াইয়ে নামে। সেই মঞ্চে পারফর্ম করতে পারাটা যে কোনও অ্যাথলিটের কেরিয়ারে শিখর ছোঁয়ার মতো।
আমি বিশ্বাস করি আমার আর রোহন বোপান্নার রিওতে একটা পদক জেতার দারুণ সুযোগ রয়েছে। নিজের দিক থেকে বলতে পারি, কী ভাবে তৈরি হব সেই পরিকল্পনা সেরে ফেলেছি। এমন একটা ট্রেনিংয়ের মধ্যে দিয়ে যাব, যা সপ্তম বার অলিম্পিক্সে নামার আগে আমাকে ফিটনেসের দিক থেকে সেরা জায়গায় রাখবে, শক্তি বাড়িয়ে নিতে সাহায্য করবে, আর হ্যাঁ, বাড়িয়ে দেবে জেতার খিদেটাও।
গত শুক্রবার আমার জন্মদিন গেল। তেতাল্লিশটা বছর পেরিয়ে এলাম। আমার বেশ মজার লাগে যখন বয়স্ক অ্যাথলিটদের শারীরিক ক্ষমতা, জেতার ইচ্ছে এসব নিয়ে নানা রকম জল্পনা চলে। আপনাদের মধ্যে যাঁরা সত্যি খেলাধুলোর ক্ষেত্রে লম্বা সময়ে সফল টিকে থাকার রহস্যটা জানতে আগ্রহী তাঁদের বলি, কোথাও কোনও ম্যাজিক ফর্মুলা নেই। তার বদলে রয়েছে কঠোর শৃঙ্খলা, প্রতিদিন ধারাবাহিক কঠোর পরিশ্রম আর সবচেয়ে জরুরি এমন একটা জীবনযাপন যার একমাত্র লক্ষ্য নিজেদের সেরাটাকে দেওয়ার চেষ্টা করা।
ব্যাপারটা শুনে খুব একঘেয়ে লাগছে? হ্যাঁ, একঘেয়ে। তবে ঘাম ঝরানোর সুফলটা কিন্তু সব সময় পাওয়া যায়। অলিম্পিক্সের আগে অবশ্য সামনেই উইম্বলডন। যুদ্ধক্ষেত্রে আমার সবচেয়ে পছন্দের সারফেস: ঘাস। সেই কলকাতা সাউথ ক্লাবে টেনিস শেখার বছরগুলো থেকেই আমি সবচেয়ে স্বচ্ছন্দ এই সবুজ ঘাসে। অবশ্য আজকাল উইম্বলডনের মতো টুর্নামেন্টে আপনারা যে ঘাসটা দেখেন সেটা বরিস বেকার, গোরান ইভানিসেভিচ, পিট সাম্প্রাসের মতো বিগ সার্ভারদের যুগের চেয়ে অনেক আলাদা। এখন যে ঘাস ব্যবহার হয়, সেটা টেকে অনেক বেশি। ফলে এখনকার কোর্টে, ঘাসের সবুজ ভাবটা অনেক বেশি দিন থাকে। কিন্তু দুঃখের হল এই ঘাসের যা চরিত্র তাতে সেই যে স্লাইস সার্ভ বা ঘাসের উপর হড়কে গিয়ে মারা ড্রপভলি, সেগুলো আর আগের মতো নিখুঁত করা সম্ভব নয়।
ঘাসের কোর্টে টেনিস তাই আর আগের মতো নেই। বিগ সার্ভারদের সেই দাপটও তাই আর নেই। নেই সেই নিয়মমাফিক নেটে উঠে খেলা। আজকালকার অনেক ঘাসের কোর্টেই বল পড়ে এতটাই বাউন্স করে যে ক্লে কোর্ট বিশেষজ্ঞদের মতো লম্বা ব্যাকসুইংয়েও খেলা যায়। ডাবলসে অবশ্য এখনও হার-জিতের ফয়সালাটা নেটে উঠে খেলতে পারার উপরই নির্ভর করে। তাই আমাকে বেসলাইনে ঘাঁটি গেড়ে বসে থাকতে দেখবেন না। উইম্বলডন পর্যন্ত আপনাদের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই কথা হবে। আসলে এই কলম লেখার ব্যাপারটা আমার কাছে একদম নতুন। তবে চেষ্টা করব আমার লেখা পড়ে আপনারা যাতে মজা পান। লেখালেখিটা আমার দক্ষতার জায়গা নয়, তবে কথা দিচ্ছি এখানেও উন্নতি করার চেষ্টা করব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy