দীর্ঘ টেনিসজীবনে বহু বার বিতর্কে জড়িয়েছেন। কখনও দর্শকদের সঙ্গে, কখনও আম্পায়ারদের সঙ্গে, আবার কখনও নিজের কোনও আচরণের জন্য। পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি (২৪) গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী নোভাক জোকোভিচের মুখে হঠাৎই আক্ষেপের সুর। তিনি মনে করেন, কখনও রজার ফেডেরার এবং রাফায়েল নাদালের ভালবাসা পাননি। চিরকাল ‘অবাঞ্ছিত সন্তান’ হয়েই থেকে গিয়েছেন।
ফেডেরার, নাদাল, জোকোভিচকে একত্রে ‘বিগ থ্রি’ বলা হয়। গ্র্যান্ড স্ল্যামের নিরিখে ফেডেরার (২০) এবং নাদালকে (২২) আগেই টপকে গিয়েছেন জোকোভিচ। সাফল্য পেয়েও সে ভাবে দর্শকদের মন জিততে পারেননি। উইম্বলডনে ফেডেরার বা প্যারিসে নাদাল যে রকম ভালবাসা পান, তার ছিটেফোঁটাও পান না জোকোভিচ। যে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে তিনি সবচেয়ে সফল, সেখানেও একাধিক বার বিদ্রুপের মুখে পড়তে হয়েছে।
জোকোভিচ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “ফেডেরার বা নাদালের মতো ভালবাসা কখনও পাইনি। হয়তো ওদের দ্বৈরথের গল্পটা আমার ভেঙে দেওয়ার কথা ছিল না। আমি তৃতীয় ব্যক্তি ছিলাম যে সাহসী হয়ে বলেছিল, ‘আমি বিশ্বের এক নম্বর হতে চাই’। সবাই সেটা খোলা মনে মেনে নেয়নি।”
জোকোভিচের সংযোজন, “আমি আসার আগেই ওদের (ফেডেরার-নাদাল) লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছিল। আমি আসার কয়েক বছর আগে নাদাল খেলতে শুরু করে। কেউ এসেছে সুইৎজ়ারল্যান্ড, কেউ স্পেন থেকে। নিঃসন্দেহে ইউরোপের পশ্চিমী শক্তি। সকলের পছন্দ আলাদা। ত্রয়ীর মধ্যে নিজেকে অবাঞ্ছিত সন্তান মনে হত। নিজেকেই প্রশ্ন করতাম, কেন এ রকম মনে হয়। খুব কষ্ট লাগত।”
জোকোভিচ জানিয়েছেন, নিজেকে এক সময় বদলে ফেলেছিলেন। তাতেও সুবিধা করতে পারেননি। তাঁর কথায়, “ভেবেছিলাম নিজের আচরণ বদলে ফেলে লোকের ভালবাসা জিতে নেব। তাতেও সফল হইনি। আসলে আমি এমন একজন মানুষ যার অনেক খুঁত রয়েছে। তা সত্ত্বেও আমি হৃদয় দিয়ে, সদিচ্ছার সঙ্গে বাঁচার চেষ্টা করেছি বরাবর।”
আরও পড়ুন:
জোকোভিচ জানিয়েছেন, কোর্টে যতই শত্রুতা থাক, ফেডেরার বা নাদালের সঙ্গে কখনওই বন্ধুত্বের সম্পর্ক হারিয়ে যায়নি। তাঁর কথায়, “কেউ আমার সবচেয়ে বড় শত্রু মানেই তার ক্ষতি চাই, ঘৃণা করি বা অন্য কোনও ভাবে তাদের হারানোর চেষ্টা করি, এমন ইচ্ছা কখনওই ছিল না। আমরা জেতার জন্য খেলতাম। যে ভাল খেলত সেই জিতত।”
জোকোভিচের সংযোজন, “বরাবর ফেডেরার এবং নাদালকে সমীহ করেছি। কখনও ওদের নিয়ে খারাপ কথা বলিনি এবং বলবও না। ওদের থেকে এখনও শিখি। নাদালের সঙ্গে আমার সম্পর্ক বেশি ভাল।”