জয়ে ফেরার উচ্ছ্বাস। শুক্রবার পুণেকে হারিয়ে টিম বিরাট। ছবি আইপিএল ওয়েবসাইট।
আইপিএলের এই একটা ম্যাচের রিপোর্টে নানা অ্যাঙ্গেল পাওয়া যায়। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি বনাম বিরাট কোহালি, ভারতের ওয়ান ডে ক্যাপ্টেন বনাম টেস্ট ক্যাপ্টেন— এর চেয়ে দুর্দান্ত প্লট আর কী হতে পারে? কিন্তু সোজাসুজি বলছি, এই ম্যাচ থেকে কোহালিকে মনে রাখার মতো অনেক কিছু পেলাম। ধোনির থেকে বিশেষ কিছু পেলাম না।
বিরাট-এবি জুটি আবার দারুণ খেলল। ক্যাপ্টেন বিরাটও দুর্দান্ত। ক্যাপ্টেন ধোনির বিরুদ্ধে ম্যাচ শেষে কতটা এগিয়ে শেষ করল ক্যাপ্টেন কোহালি, সেই তুলনায় ঢুকব না। কারণ ধোনি শুরুই করেছে পিছিয়ে। একটা আনসেটেলড টিম। ম্যাচের মধ্যে চোটে পিটারসেনের বেরিয়ে যাওয়া। স্টিভ স্মিথের দুর্ভাগ্যজনক রান আউট। পুণের অনেক কিছু আজ বিপক্ষে গিয়েছে। বিরাট উল্টো দিকে বুঝিয়েছে, ওকে আউট করা এখন বোলারের ভাগ্যের ব্যাপার। আবার ধোনিকে রান তাড়ার সময় বিশেষ হাত খোলার সুযোগও দেয়নি। আরসিবি বোলাররা ওকে অফস্টাম্পের বাইরে ইয়র্কার দিয়ে, ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারি করে আটকে রেখেছে। আর আরসিবি সেটেলড টিম। গত তিন-চার বছর ধরে এক টিম রেখেছে ওরা।
কিন্তু ধোনির পক্ষে কথাগুলো বলেও বলতে বাধ্য হচ্ছি, ধোনির ব্যাপারস্যাপার আমি বুঝতে পারছি না। পুণে টিমের সেরা বোলার কে? রবিচন্দ্রন অশ্বিন। আর তাকেই চার ওভার দেওয়া হল না! ক্রিজে বিরাট-এবি, কিছুতেই যাদের আউট করা যাচ্ছে না, সেই পরিস্থিতিতে টিমের সেরা বোলার এক ওভার কম করবে? মানছি, অশ্বিন ওর চেনা ফর্মে নেই। উইকেট বিশেষ পাচ্ছে না। কিন্তু তার পরেও ওকে ইচ্ছেমতো মারা সম্ভব নয়। বিরাট বা এবি কেউ ওকে এ দিন বলে-বলে ফেলতে পারেনি। সেখানে কেন ওকে মাত্র তিন ওভার করানো হল, সত্যিই বুঝতে পারিনি। মনে রাখতে হবে, রানটা কিন্তু আজ দশ-পনেরো বেশি হয়েছে। যেটা না হলে পুণে জিততেও পারত।
তার পর ম্যাচ শেষে ধোনিকে বলতে শুনলাম, কেপি চোট পেয়ে যাওয়ায় ওর নাকি শাপে বর হল! পরের ম্যাচগুলোয় ও মিচেল মার্শ বা অ্যালবি মর্কেলকে খেলিয়ে বোলিংকে আরও পোক্ত করতে পারবে। বুঝলাম না। কেপি, কেপি-ই। অ্যালবি এমন কিছু আহামরি প্লেয়ার নয়। মার্শকেও ভাল বোলার বলা যাবে না। আবার ও ব্যাটিংয়েও পিটারসেনের চেয়ে ভাল, মানতে পারছি না। আমি অন্তত বলব, কেকেআরের আগে কেপির চোট পাওয়াটা বড় ধাক্কা। পুণে টিমটার বোলিং যে দুর্দান্ত কিছু নয়, বোঝাই যাচ্ছিল। ব্যাটিংটা ভাল ছিল। সেটাও কিন্তু আজকের পর কিছুটা দুর্বল হয়ে গেল।
আসলে পুণে টিমটায় সমস্যা অনেক। যেমন টিমের অনেকে জানে না তার ভূমিকাটা কী। একে টিমটায় উইকেট বার করার মতো বোলার প্রায় নেই। একমাত্র অশ্বিন। তাকেও পুরো ওভার না করালে উইকেট কে তুলবে? আমার মতে, ধোনির কাজ এর পর বেশ বেড়ে গেল। অশ্বিনকে ঠিকমতো ব্যবহার করতে হবে। ব্যাটিংকেও এ বার ওকেই ধরতে হবে। এ দিনের মতোই উঠে আসতে হবে চার নম্বরে। থিসারা এ দিন খেলেছে, কিন্তু আবার কবে খেলবে কেউই জানে না। সবচেয়ে বড় চিন্তা— পুণের এখনও একটা সেটেলড টিম না পাওয়া। চারটে ম্যাচ হয়ে গেল। ধোনি কিন্তু এখনও বদলের পর বদল করেই যাচ্ছে। করার কথাও বলে যাচ্ছে। নতুন টিম হলেও এখনও এত বদল— অবাক করারই মতো!
সংক্ষিপ্ত স্কোর: রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ২০ ওভারে ১৮৫-৩ (কোহালি ৮০, ডে’ভিলিয়ার্স ৮৩, পেরেরা ৩-৩৪), রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টস ২০ ওভারে ১৭২-৮ (রাহানে ৬০, ধোনি ৪১, পেরেরা ৩৪, রিচার্ডসন ৩-১৩, ওয়াটসন ২-৩১)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy