লখনউয়ের মাঠে কুয়াশার দাপট কমল না রাত সাড়ে ৯টাতেও। ষষ্ঠ বার পরিদর্শনের পর ম্যাচ বাতিল ঘোষণা করতে বাধ্য হলেন আম্পায়ারেরা। শীত কালে উত্তর ভারতে কুয়াশা এবং ধোঁয়াশা নতুন কোনও ঘটনা নয়। তা-ও এই সময় লখনউয়ে ম্যাচ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বুধবারের ম্যাচ হাতিল হওয়ায় ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই সিরিজ়ের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবে গৌতম গম্ভীরের দল।
কুয়াশার জন্য সাড়ে ৬টার নির্ধারিত সময় টস হয়নি। ৬টা ৫০, ৭টা ৩০, ৮টা, ৮টা ৩০, ৯টা এবং ৯টা ২৫-এ মোট ছ’বার পরিস্থিতি পরিদর্শনের পর ম্যাচ বাতিল ঘোষণা করতে বাধ্য হন আম্পায়ারেরা। পরিস্থিতি আঁচ করে ততক্ষণে দু’দলের ক্রিকেটারেরা তার অনেক আগেই সাজঘরে ফিরে যান। এর মাঝে সাড়ে ৮টার সময় পিচ ঢেকে দেওয়া হয় শতরঞ্জি দিয়ে। কুয়াশা এবং শিশিরের জন্য ভিজে যাচ্ছিল লখনউয়ের ২২ গজ। পিচ বাঁচাতে শতরঞ্জি দিয়ে পিচ ঢেকে দেন মাঠকর্মীরা। তা ছাড়া চোট-আঘাতের ঝুঁকি এড়াতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে কুয়াশার মধ্যে ম্যাচ খেলার ঝুঁকি নিতে চায়নি কোনও দলই। স্বাভাবিক ভাবেই এই সময়ে লখনউয়ে ম্যাচ রাখা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।
ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা চতুর্থ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ায় সিরিজ়ের ফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে পঞ্চম ম্যাচ পর্যন্ত। ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় সূর্যকুমার যাদবদের সিরিজ় হারের সম্ভাবনা অবশ্য থাকল না। সিরিজ়ের পঞ্চম তথা শেষ ম্যাচ আগামী শুক্রবার অহমদাবাদে। সেই ম্যাচ সূর্যেরা হারলেও সিরিজ় ড্র হবে।
লখনউয়ের ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ায় সমালোচনা শুরু হয়েছে বিসিসিআইয়ের। ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশ ক্ষুব্ধ। ডিসেম্বরের এই সময় উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে কুয়াশার দাপট স্বাভাবিক ঘটনা। গত কয়েক বছরে তার সঙ্গে যোগ হয়েছে দূষণজনিত ধোঁয়াশা। সন্ধের পর তাপমাত্রা কমতে শুরু করলেই কুয়াশার দাপট শুরু হয়। কমে যায় দৃশ্যমানতা। ডিসেম্বরের শুরু থেকেই সাধারণত এই সমস্যা দেখা যায়। বিমান এবং ট্রেন চলাচলও বিঘ্নিত হয় কুয়াশার জন্য। যা অজানা নয় বিসিসিআই কর্তাদেরও। তবু কেন এই সময় লখনউয়ে রাতের ম্যাচ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। বিতর্ক তৈরি হয়েছে আরও একটি কারণে। খেলা শুরুর আগে ওয়ার্মআপ করার সময় মুখে মাস্ক পরে ছিলেন হার্দিক পাণ্ড্য। মাঠে ধোঁয়াশা ছিল বলেও মনে করা হচ্ছে।
হার্দিক পাণ্ড্যর মুখে মাস্ক। ছবি: পিটিআই।
বিরক্ত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন জোরে বোলার ডেল স্টেনও। তিনি বলেছেন, ‘‘মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ আমি হাঁটতে বেরিয়ে ছিলাম হোটেল থেকে। তখন ২০ মিটার দূরের কিছুও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল না। তা দেখেই আমার মনে ম্যাচ হওয়া নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল।’’
আরও পড়ুন:
ভারতীয় বোর্ডের তৈরি সূচি নিয়ে বিতর্ক আগেও হয়েছে। বছরের শুরুর দিকে দিল্লিতে রাখা হয়েছিল ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ় টেস্ট। সে সময়ও দিল্লির দূষণ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ক্রিকেটারেরা। বাধ্য হয়ে সেই টেস্ট দিল্লি থেকে কলকাতায় সরিয়ে আনতে হয়েছিল বোর্ডকে। এ ছাড়া চলতি সিরিজ়ের তৃতীয় ম্যাচ ধর্মশালায় রাখা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। রাত ৮টার পর সেখানকার তাপমাত্রা ৪-৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যায়। সঙ্গে হাড় কাঁপানো হাওয়া দেয়। এই পরিস্থিতিতে মাঠে খেলা বেশ কঠিন।