Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
দাবার বিশ্বযুদ্ধ

আসল চ্যালেঞ্জ এ বারই শুরু হতে যাচ্ছে আনন্দের

সাদা ঘুঁটিতেও পঞ্চম গেমে ফের ড্র। আনন্দের কতটা সুবিধে হল এই ফলে? তৃতীয় গেমে জয়ের পর আরও দুটো গেম গড়িয়ে গেল। পাল্লা আনন্দ না কার্লসেনের দিকে ভারি? দাবার বিশ্বযুদ্ধের যা পরিস্থিতি তাতে এই প্রশ্নগুলো ওঠাই এখন স্বাভাবিক। প্রথমেই বলতে হয় ভিশির সমর্থক হিসেবে আমি খুব খুশি। বিশেষ করে শেষ তিনটে গেমে যে ভাবে ভিশি ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে সেটা অনবদ্য। হ্যাঁ, শুক্রবার সাদা ধুঁটিতে ড্র করার পরেও এটা বলছি।

সোচিতে সেয়ানে-সেয়ানে। ছবি: এএফপি

সোচিতে সেয়ানে-সেয়ানে। ছবি: এএফপি

দিব্যেন্দু বড়ুয়া
শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৩
Share: Save:

সাদা ঘুঁটিতেও পঞ্চম গেমে ফের ড্র। আনন্দের কতটা সুবিধে হল এই ফলে?

তৃতীয় গেমে জয়ের পর আরও দুটো গেম গড়িয়ে গেল। পাল্লা আনন্দ না কার্লসেনের দিকে ভারি?

দাবার বিশ্বযুদ্ধের যা পরিস্থিতি তাতে এই প্রশ্নগুলো ওঠাই এখন স্বাভাবিক। প্রথমেই বলতে হয় ভিশির সমর্থক হিসেবে আমি খুব খুশি। বিশেষ করে শেষ তিনটে গেমে যে ভাবে ভিশি ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে সেটা অনবদ্য। হ্যাঁ, শুক্রবার সাদা ধুঁটিতে ড্র করার পরেও এটা বলছি।

গ্যারি কাসপারভের জমানা থেকেই সর্বোচ্চ স্তরের দাবায় আমরা তাত্ত্বিক লড়াই দেখতে অভ্যস্ত। তাত্ত্বিক লড়াই মানে প্রথম ১৫-২০টা চাল হবে তত্ত্ব মেনে। তা সে আক্রমণাত্মক বা রক্ষণাত্মক দুটোই হতে পারে। তার পর দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে কেউ নতুন চাল দিলে তার উপর নির্ভর করে চলত বাকি গেম।

যে ছবিটা পাল্টে দেয় কার্লসেন। ওপেনিংয়ে তত্ত্ব-টত্ত্বের ধার ধারে না নরওয়ের বিশ্বজয়ী। নিজস্ব স্টাইলে তত্ত্বের বাইরে নতুন চালে শুরু করাটাই কার্লসেনের বরাবরের স্টাইল। যে কারণে ২৩ বছরের বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে এখন সবচেয়ে নিষ্ঠুর ঘাতক বলে ধরা হয় দাবা মহলে। যার সামনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে গত বার পাল্লা দিতে পারেনি আনন্দ। এ বার কিন্তু সেই ছবিটাই পাল্টে দিচ্ছে পাঁচ বারের ভারতীয় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।

কার্লসেনকে এ বার তাত্ত্বিক যুদ্ধে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে ভিশি। শেষ তিনটে গেমে সে রকমই ইঙ্গিত। শুধু তাই নয়, কার্লসেনের স্টাইলে চ্যালেঞ্জ জানাতেও ভিশি যে প্রস্তুত সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছে। চতুর্থ গেমে সেটা সবচেয়ে ভাল দেখা গিয়েছিল। ভিশি যেন কার্লসেনকে বলতে চাইছে, ‘তুমি যে ভাবেই লড়তে আসো না কেন আমিও তৈরি।’

সেই সঙ্গে আনন্দের চুয়াল্লিশেও দুরন্ত এনার্জি লেভেল, ইতিবাচক হাবভাব তো আছেই। যেটা পরিষ্কার ইঙ্গিত করছে গত বারের তুলনায় ভিশি এ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে কতটা ছন্দে রয়েছে। এ দিন ৩৯ চালে গেম ড্র হয়ে যায়। তার মধ্যেও আনন্দের ১৩ নম্বর চালটা কিন্তু নতুন। এর পর ২০ নম্বর চালটাও অসাধারণ। সেটাও ইতিবাচক ইঙ্গিত। তাবড় দাবাড়ুরাও যার প্রশংসা করেছে। এই পর্যায়ের দাবায় এত চাপের মধ্যে নতুন চাল দেওয়ার ঝুঁকি নেওয়ার অর্থটা পরিষ্কার আনন্দের প্রস্তুতি দুরন্ত।

চাপে বরং লাগছে কার্লসেনকেই। ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে দেখে কিছুটা হতাশই লাগছে। এ দিন হয়তো চাপে পড়েই তাই গত চার গেমের তুলনায় একটু দ্রুতই চাল দিতে দেখা গিয়েছে কার্লসেনকে। তবে প্রথম গেমটা যেহেতু আনন্দ সাদা ঘুঁটিতে শুরু করেছিল নিয়মানুযায়ী ষষ্ঠ ও সপ্তম অর্থাত্‌ এর পরে টানা দুটো গেম কার্লসেন সাদা ঘুঁটিতে খেলার সুযোগ পাবে। নিশ্চিত ভাবে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করবে। আনন্দের কাছে তাই পরের দুটো গেমে কার্লসেনকে রুখে দেওয়াটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE