Advertisement
E-Paper

ওডাফার বাজি বাগান, চিডির বেঙ্গল

গত দু’বছর যত ডার্বি হয়েছে প্রতিটিতেই ওঁদের ঘিরে আলোড়িত হয়েছে ময়দান! দুই ক্লাবের সমর্থকরা ডার্বি জয়ের স্বপ্ন দেখতেন ওঁরা গোল করে জেতাবেন, এই ভরসা থেকেই!

তানিয়া রায়

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৪ ০৩:১৮
এক বছর আগেও কলকাতা ডার্বির মুখ্য চরিত্র ছিলেন তাঁরাই।

এক বছর আগেও কলকাতা ডার্বির মুখ্য চরিত্র ছিলেন তাঁরাই।

গত দু’বছর যত ডার্বি হয়েছে প্রতিটিতেই ওঁদের ঘিরে আলোড়িত হয়েছে ময়দান!

দুই ক্লাবের সমর্থকরা ডার্বি জয়ের স্বপ্ন দেখতেন ওঁরা গোল করে জেতাবেন, এই ভরসা থেকেই!

ইস্ট-মোহনের যে দুই নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকারের লড়াই ঘিরে ময়দানের উত্তাপ ওঠা নামা করেছে এত দিন, সেই এডে চিডি আর ওকোলি ওডাফা এখন ডার্বি থেকে অনেক দূরে। বড় ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা এডে চিডি বসে আছেন নাইজিরিয়ার বাড়িতে। জানাচ্ছেন, ভারতের একটি দলের সঙ্গে আই লিগে খেলা নিয়ে কথাবার্তা চললেও হাতে এই মূহূর্তে বড় কোনও ক্লাব নেই। স্থানীয় একটি ক্লাবে খেলছেন। আর হোসে ব্যারেটো-জমানার পর মোহনবাগানের শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষার সঙ্গী ওডাফা ওকোলির এ মরসুমে টিম আছে। তবে সেটা না থাকার মতোই। তাঁর টিম চার্চিল যে আই লিগেই নেই।

ডার্বি থেকে দূরে থাকলে কী হবে, দু’জনেই কিন্তু রবিবারের ডার্বিতে কাকে সমর্থন করবেন ঠিক করে ফেলেছেন এখনই। এনুগু-র বাড়ি থেকে ফোনে ইস্টবেঙ্গল থেকে ছাঁটাই হয়ে যাওয়া চিডি বলে দিলেন, “আমি দুই ক্লাবের হয়েই ডার্বি খেলেছি। গোল করেছি। তবে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে শেষ খেলেছি বলেই হয়তো ওই ক্লাবের প্রতি একটি আলাদা টান রয়ে গিয়েছে। তাই চাইব, রবিবারের ডার্বি ইস্টবেঙ্গল জিতুক।” আর ওডাফা? তিনিও তো ছাঁটাই হয়ে গিয়েছেন বাগান থেকে। তিন বছর পর। গোয়া থেকে ফোনে বললেন, “মোহনবাগানে আমি তিন বছর খেলেছি। ভাল মন্দ অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ক্লাবের সবার সঙ্গে আমার ভাল সম্পর্ক। এই ম্যাচে তাই মোহনবাগানকেই সমর্থন করব।”

ডার্বি নিয়ে নিজেদের সমর্থনের কথা বলার পর দু’জনেই অবশ্য খোঁজ নিচ্ছেন দু’দলের নতুন বিদেশি ফাতাই, বোয়া, লিও বার্তোসদের। ওডাফা যেমন মজা করে বললেন, “আমার চেয়ে নিশ্চয়ই বোয়া ভাল খেলছে।” আর চিডি জানতে চাইলেন, বিশ্বকাপার বার্তোস কতটা ভাল?

ডার্বি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে দেখা গেল দু’জনেই প্রচণ্ড আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছেন।

চিডি ২০০৯-এর ২৫ অক্টোবর মোহনবাগানের জার্সিতে ৫-৩ ম্যাচের জয়ের নায়ক ছিলেন। একাই করেছিলেন চার গোল। আবার লাল-হলুদ জার্সিতে সেই চিডিই ২০১৩-র ডার্বিতে জোড়া গোল করে জয় এনে দিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলকে। “ডার্বি নিয়ে আমার অনেক স্মৃতি। চার গোল যেমন আমাকে তৃপ্তি দেয়। আবার দু’গোলের কথা মনে হলে উত্তেজনা অনুভব করি। ২০১২-র ডার্বিতে নবি যে ভাবে রক্তাক্ত হয়েছিল, সে কথা এখনও ভাবলে খারাপ লাগে। তবু বলছি, কলকাতার ডার্বির উত্তেজনা আমি মিস করছি।”

২০১১-১২ মরসুমে প্রথম মোহনবাগানের জার্সি পরে খেলতে নেমে টানা তিন ডার্বিতে গোল করেছিলেন ওডাফা। সেই গোলমেশিনই আবার ডার্বির কথা উঠতেই একটু যেন আনমনা। খানিকক্ষণ চুপ থাকার পর যেন স্বগতোক্তির ঢঙে বললেন, “রবিবার মরসুমের প্রথম ডার্বি! আমি নেই!” মিস করছেন? হেসে ফেললেন প্রাক্তন বাগান স্ট্রাইকার, “ফুটবল জীবনের অনেক কিছুই তো মিস করি। ডার্বিও তার ব্যতিক্রম নয়।” তবে ২০১২-এর ৯ ডিসেম্বরের ডার্বির স্মৃতি সবচেয়ে যন্ত্রণার বলেই মনে করেন ওডাফা। সেই মরসুমে আই লিগের প্রথম ডার্বিতে মাথা গরম করে ঝামেলায় জড়িয়ে লাল কার্ড দেখেন ওডাফা। তার পরই উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো যুবভারতী। ইঁটের আঘাতে গুরুতর আহত হন রহিম নবি। এই ঘটনার জেরে ওডাফার ফুটবল জীবনই অনিশ্চিত হয়ে যেতে বসেছিল। বেকায়দায় পড়ে গিয়েছিল তাঁর টিম মোহনবাগানও। এ দিন সেই কলঙ্কিত ডার্বির প্রসঙ্গ উঠতেই ওডাফা বলে দিলেন, “ওই সময়ের কথা আমি মনে হরর মুভির চেয়েও ভয়ানক হয়ে উঠেছিল আমার ফুটবল জীবন।”

রবিবার মরসুমের প্রথম ডার্বিতে কে জিতবেন তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও আটচল্লিশ ঘণ্টা। চিডি এবং ওডাফার সঙ্গে ফোনে কথা বলে মনে হল পুরনো দলকে সমর্থন করলেও তাঁরা কেমন যেন দুঃখিত, হতাশ। হয়তো এটা ভেবেই যে, ম্যাচের পর দুই প্রধানের যে-ই জিতুক তাদের নিয়ে আর কেউ নাচানাচি করবে না। মিডিয়ার ভিড় উপচে পড়বে না বাড়িতে। যে দৃশ্য এত দিন তাদের সঙ্গী ছিল, সেটা তো ফেলে গিয়েছেন দু’জনেই।

tania roy derby football odafa chidi sports news east bengal online new mohun bagan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy