সনি নর্ডিদের আই লিগ জয়ের আশায় ‘জল ঢেলে’ দেওয়ার জন্য মরিয়া ওকোলি ওডাফা। মোহনবাগানের একদা গোলমেশিন এখন গোয়ার স্পোর্টিং ক্লুবের আশার প্রদীপ ওডাফা সোমবার বলে দিলেন, ‘‘আমাদের টিম অবনমন বাঁচানোর জন্য লড়ছে। এই পরিস্থিতিতে গোল করে টিমকে জেতানোই আমার একমাত্র লক্ষ্য। মোহনবাগান ম্যাচ না জিততে পারলে আমরা আরও সমস্যায় পড়ে যাব।’’ গোয়া থেকে ফোনে শান্ত গলায় নিজের জেদের কথা জানিয়ে দেন ওডাফা। আসলে ‘অবনমন বাঁচানো’-র মোড়কে চতুর গোলমেশিন বুঝিয়ে দিতে চান নিজের মনোভাব। তাঁকে তাড়িয়ে সনিকে আনার ক্ষত যে এখনও দগদগে সেটা বোঝা যায় কথা বললেই।
লিগ শীর্ষে থাকা সঞ্জয় সেনের টিমের সঙ্গে ওডাফাদের ম্যাচ শনিবার। আর অনেকেই বলছেন গঙ্গাপাড়ের ক্লাবে পাঁচ বছর পর কোনও ট্রফি আসবে কী না সেটা ঠিক হয়ে যাবে ওই দিনই। আর সেই ম্যাচে ওডাফা যে প্রধান কাঁটা সেটাও বলছেন সবাই।
গোয়ায় ফোন করে জানা গেল, কার্ডের জন্য ওই ম্যাচে খেলতে পারবেন না ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর বিশ্বকাপার অ্যান্টনি উলফ। চুকুয়ামারা তাই ঠিক করেছেন ওডাফার সঙ্গে ভিক্টোরিনো ফার্নান্ডেজকে খেলাবেন। শেষ দু’ম্যাচে চোটের জন্য মাঠে না নামা ওডাফা নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে টিম মিটিং-এ বলেছেন, ‘‘কোনও চিন্তা নেই আমি ফিট আছি। গোল করবই।’’
আর এ দিন সন্ধ্যায় যখন ফোনে ধরা হল তিনি বলে দিলেন, ‘‘মোহনবাগান চ্যাম্পিয়ন হলে ভাল লাগবে। কারণ আমি এতদিন খেলেও টিমটাকে আই লিগ দিতে পারিনি। কিন্তু আমারও তো উপায় নেই। বাঁচতে হবে।’’ সকালে টানা অনুশীলন করে গিয়েছেন। একের পর এক গোলে শট মেরে গিয়েছেন। লক্ষ্য একটাই, পুরনো দলের বিরুদ্ধে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য দু’পায়ে শান দেওয়া। মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘কলকাতা আমার প্রিয় শহর। বাংলার ফুটবল উন্মাদনা আমাকে বারবার ছুঁয়ে যায়। বিশেষ করে ডার্বিতে। কত সুখ-দুঃখ জড়িয়ে আছে। একসময় তো ফুটবল জীবনই শেষ হতে বসেছিল ডার্বিতে নবির সেই মাথায় চোট লাগার পর। কিন্তু মনে রাখবেন আমার যাবতীয় সাফল্য কিন্তু গোয়াতেই। প্রচুর গোল করেছি। সেরা গোলদাতা হয়েছি। ট্রফি জিতেছি।’’
মোহনবাগান ম্যাচকে কেন পাখির চোখ করেছেন ওডাফা, সেটা ধরা পড়ে যায় কথা বললেই। ‘‘ জানি জেতাটা সহজ হবে না। আমরা লাস্ট বয়। আর ওরা ফার্স্ট। তবে শেষ ম্যাচে কল্যাণী ভারত এফসি-কে হারিয়েছি আমরা। এটা আমাদের টিমকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলছে। সবাই ধরে নিয়েছে আমরাও জিততেই পারি।’’ তাঁর চোট নিয়ে জল্পনা চলছে কলকাতায়। বাগানে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে ওডাফা পুরো সুস্থ নন। সেটা সম্ভবত কানে গিয়েছে তাঁরও। ‘‘আমার চোট এখন অনেক ভাল। পুরো অনুশীলন করেছি। কোচও নানা পরামর্শ দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত যদি পুরো সময় মাঠে থাকতে পারি তা হলে সেরাটা দিয়ে টিমকে জেতাবই। গোলও করব।’’
বাগান ম্যাচ জেতা ছাড়াও ওডাফার আরও একটা লক্ষ্য আছে। তা হল, পরের মরসুমের জন্য নিজেকে ‘সফল’ দেখানো। এ বছর লাইসেন্সিং সমস্যার জন্য চার্চিল ব্রাদার্সে সই করে খেলতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত লোনে স্পোর্টিং-এ সই করে ‘মুক্ত’ হয়ে ফিরেছেন আই লিগে। শনিবারের ম্যাচটা তাঁর কাছে অনেক কিছু। বলছিলেন, ‘‘ফুটবলাররা চোট পানই। সেরেও ওঠেন। আমিও সুস্থ। নিজেকে প্রমাণ করতে চাই।’’
ওডাফা যখন ‘জিততে মরিয়া’ তখন তাঁকে আটকানোর জন্য মরিয়া সঞ্জয় সেনও। জোনাল মার্কিংয়ে গোলমেশিনকে অকেজো করার ছক কষছেন বাগান কোচ। তাঁর প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন এ দিন থেকে।
বাগানে অবশ্য ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে, ফিট ওডাফা মানেই ভয়ঙ্কর।
শুরু হল অ্যাস্ট্রোটার্ফের কাজ: শুরু হয়ে গেল যুবভারতীতে অ্যাস্ট্রোটার্ফ তুলে নতুন মাঠ তৈরির কাজ। ফেডারেশন কর্তাদের আশা ৩০ অগস্টের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। কলকাতা লিগের ডার্বি দিয়ে উদ্বোধন করার চেষ্টা হচ্ছে মাঠের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy