গ্রুপ লিগের শেষ পর্যন্ত নাটক।
নেপিয়ারে তুমুল ঝড়-বৃষ্টির আতঙ্কের মধ্যে আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে নেমে সাড়ে তিরিশ ওভারে জয়ের রান তুলেও নিশ্চিন্তে ছিল না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গোটা দল তখন তাকিয়ে অ্যাডিলেডের দিকে। সেখানে পাকিস্তান-আয়ারল্যান্ড লড়াই কার্যত প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল। ওই ম্যাচ টাই হয়ে গেলে বা বৃষ্টিতে ভেস্তে গেলে ছিটকে যেতে হত ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। শেষ পর্যন্ত মিড উইকেট দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে উইকেটকিপার সরফরাজ আহমেদ তাঁর জীবনের প্রথম ওয়ান ডে সেঞ্চুরি করে স্বস্তি এনে দিলেন ক্যারিবিয়ান শিবিরেও।
শেষ আটে চার দলই দক্ষিণ এশিয়ার। ক্রিকেট বিশ্বকাপে এই প্রথম। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা। রবিবার গ্রুপ লিগের শেষে তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা শুরু হল অজি ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নারের বলা সেই কথাগুলো নিয়ে। বিশ্বকাপের আগে বলেছিলেন, “অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশে ও উইকেটে ভারত-সহ উপমহাদেশীয় দলগুলোকে বেগ পেতে হবে।” টুইটার, ফেসবুকে অনেকেই এখন প্রশ্ন তুলছেন, এ বার কী বলবেন ওয়ার্নার? রবিবার সাত উইকেটে জিতে পাকিস্তান শেষ আটে অস্ট্রেলিয়ার সামনে। তাও আবার অ্যাডিলেডে। আইরিশদের হারিয়ে উঠে মিসবা উল হক বলেই দিলেন, “আমরা এখন বিশ্বকাপ জেতার অবস্থায় চলে এসেছি। এই স্লো উইকেটে নিজেদের নিংড়ে দিয়ে বল করেছে আমাদের পেসাররা। তার পর সরফরাজের ওই ব্যাটিং। এ তাই বিশ্বকাপ জিততেই পারি।” এ সেই আয়ারল্যান্ড যাদের কাছে ২০০৭-এ হারতে হয়েছিল পাকদের। তার পরই বব উলমারের রহস্য-মৃত্যু। আট বছর পর আইরিশদের হারিয়ে সেই হারের বদলা নেওয়ার পর অবশ্য উলমারের আত্মার প্রতি এই জয় উৎসর্গ করার কথা বলেনি পাকিস্তান শিবির। সোশ্যাল মিডিয়ায় অবশ্য রব উঠল, “অবশেষে উলমারের আত্মা শান্তি পেল।” তাঁর ছেলেও এক পাক সংবাদপত্রে বলেছেন, “বাবা স্বর্গ থেকে নিশ্চয়ই সব দেখছেন। পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা এই ভাবনাটাকে মোটিভেশন হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।”
ভারতের বিরুদ্ধে বদলা নেওয়ারও সুযোগ পেতে পারেন মিসবারা। তবে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে অঘটন ঘটাতে পারলে। অন্য দিকে বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা দাবিদার নিউজিল্যান্ডের সামনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আইরিশদের চেয়ে নেট রানরেট বেশি রাখতে ১৭৬-এর টার্গেট ৩৬ ওভারের মধ্যে তুলে ফেলার লক্ষ্য নিয়ে নেমে সেই রান ৩০.৩ ওভারেই তুলে ফেলেন হোল্ডাররা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পারফরম্যান্স দেখে কিংবদন্তি ব্রায়ান লারা তো বলেই দিলেন, “নিউজিল্যান্ডকে হারানোর ক্ষমতা আছে আমাদের।”