Advertisement
E-Paper

লেন্ডল-মারে জুটিকে নকল শুরু হল বলে

আর উইম্বলডনের দুই ফাইনালিস্টই যেখানে কোচ হিসাবে দুই প্রাক্তন তারকাকে নিয়ে বুক ফুলিয়ে গর্ব করছে, সেখানে নিশ্চিন্তে বলে দেওয়া যায় যে, বাকিরা এদের নকল করা শুরু করল বলে।

লিয়েন্ডার পেজ

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৬ ০৪:১৫

এ বারের উইম্বলডন থেকে টেনিসের সাম্প্রতিক দু’টো ট্রেন্ড খুব পরিষ্কার।

প্রথমেরটা সবচেয়ে সহজবোধ্য, প্রাক্তন তারকা প্লেয়ারদের কোচ রাখা। এই প্লেয়ার-কোচ ব্যাপারটা কিন্তু থাকতে এসেছে এবং আগামী দিনে আমরা আরও বেশি করে প্রাক্তন প্লেয়ারদের কোচিং করাতে দেখব। কার্লোস ময়া যেমন মিলোস রাওনিচের খেলায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনে দিয়েছে অল্প সময়ের মধ্যেই। আমাদের লম্বা-চওড়া কানাডিয়ান আগে যে কোনও পয়েন্ট খেলতে গিয়ে অসম্ভব তাড়াহুড়ো করত। কিন্তু ময়ার কোচিংয়ে ও দেখলাম এক একটা পয়েন্ট বুদ্ধি করে গড়ে তুলছে। সঙ্গে নিজের শট খেলায় ধারাবাহিকতা আমদানি করে প্রতিপক্ষকে খেলিয়ে ক্লান্ত করে তোলার চেষ্টা করছে।

ইভান লেন্ডল কোচ হিসাবে ফেরার প্রভাবটা অ্যান্ডি মারের খেলাতেই পরিষ্কার। লেন্ডল যখন ওর কোচ হয়ে প্রথম আসে, তখনই অ্যান্ডির খেলায় একটা বড় ফারাক গড়ে দিয়েছিল। এ বার লেন্ডল কোচের চেয়ারে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে নিজের দ্বিতীয় উইম্বলডন জিতে ফেলল অ্যান্ডি।

আর উইম্বলডনের দুই ফাইনালিস্টই যেখানে কোচ হিসাবে দুই প্রাক্তন তারকাকে নিয়ে বুক ফুলিয়ে গর্ব করছে, সেখানে নিশ্চিন্তে বলে দেওয়া যায় যে, বাকিরা এদের নকল করা শুরু করল বলে। তাই আগামী দিনে ট্যুরে আমরা আরও অনেক বেশি সেলিব্রিটি কোচদের দেখব। কথাটা পরে মিলিয়ে নেবেন, ভবিষ্যদ্বাণী আমি এখনই করে রাখলাম।

দ্বিতীয় যে ট্রেন্ডের কথা বলছিলাম, সেটা আধুনিক টেনিসে ক্রমশ লম্বা ছেলেদের দাপট বাড়ার। আধুনিক ট্রেনিং পদ্ধতিগুলো আরও বেশি করে বিজ্ঞাননির্ভর হয়ে ওঠা এর একটা কারণ। সঙ্গে কোর্টের বাইরে শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে ওয়ার্কআউটের ভূমিকা নিয়ে এরা দারুণ ওয়াকিবহাল। নিজের শরীরের প্রয়োজন বুঝে সুনির্দিষ্ট ওয়ার্কআউট করে। টেনিসের তালগাছেরা তাই আর আগের মতো ল্যাগব্যাগে নেই। আজকাল এরা অনেক বেশি শক্তিশালী আর মজবুত।

আগে কিন্তু খুব লম্বা প্লেয়াররা ধারাবাহিক ভাবে তেমন সাফল্য পেত না। মাঝারি উচ্চতার প্লেয়ারদের তুলনায় এরা চোটও পেত অনেক বেশি। আসলে যারা লম্বা তাদের শরীরের সেন্টার অব গ্র্যাভিটি একটু উপরের দিকে হয়। তাই হাত-পায়ের, বিশেষ করে পায়ের পেশি খুব শক্তিশালী না হলে এদের পক্ষে টানা পাঁচ সেট খেলার ধকল নেওয়া সহজ হয় না। আপনারা কি রাওনিচের পা দু’টো দেখেছেন? ওর কোয়াড্রিসেপ এমন জবরদস্ত যে থাইগুলো দেখলে বোল্ডার মনে হয়। ছেলেটার কাফ মাসলগুলোও সাধারণ লোকের থাইয়ের সমান মোটা! রাওনিচ যদি নিজের ফিটনেস ধরে রাখতে পারে আর মাথা ঠিক রাখে, ও কিন্তু সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে অনেক উপরে উঠবে।

টেনিস খেলাটা যাঁরা বোঝেন, তারা নিশ্চয়ই মানবেন যে, এ বারের উইম্বলডনে নোভাক জকোভিচের পতনটা স্রেফ অফিসে ওই দিনটা খারাপ যাওয়ার কারণে। ও কিন্তু এখনও এক নম্বরই আর সিংহাসনে বসে আরও বেশ কিছু দিন দাপটে রাজত্ব করবে। তবে রজার ফেডেরারকে হাঁটুর চোট সারিয়ে দারুণ ভাবে ফিরে আসতে দেখে আমি সত্যিই খুব খুশি। ওর সেমিফাইনাল খেলাই বলছে রজার পুরোপুরি সুস্থ। আর রজার যখন নিজের সেরা টেনিসটা খেলে তখন তার চেয়ে সুন্দর দৃশ্য আর কিছু হয় না। এই উইম্বলডনে রজারকে দেখে বোঝা গিয়েছে জেতার তাগিদটা ওর মধ্যে এখনও কতটা তীব্র। এই তাগিদটা যতদিন থাকবে, ততদিন কিন্তু রজারকে হিসেবের মধ্যে রাখতেই হবে।

এটা সত্যিই খুব দুর্ভাগ্যজনক যে আজকাল ঘাসে আর বেশি টুর্নামেন্ট খেলা হয় না। অথচ এই সারফেসে প্লেয়ারদের পা বা কোমরে চোট পাওয়ায় সম্ভাবনা অনেক কম। কংক্রিটের উপর পাতা সিন্থেটিক কোর্টে যার আশঙ্কা থাকে অনেক বেশি। ঘাসের কোর্টে যেমন শট খেলায় বৈচিত্র্য আমদানি করা যায়, সৃষ্টিশীল হওয়া য়ায়, তেমনি ট্যাকটিসের দরকারও পড়ে বেশি। ভাবলে খারাপ লাগে যে আজকাল সারা বছর ঘাসে আর বেশি টুর্নামেন্ট খেলা হয় না।

যতই হোক, ঘাসের টুর্নামেন্টের সংখ্যা বাড়লে প্লেয়ার-কোচ হিসাবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা তো আমারই হবে!

Leander Paes
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy