Advertisement
E-Paper

পাঁচ বছর বয়সে দাবা শুরু, বছর ঘুরতেই সাফল্য, ধারাবাহিক উত্থানে বিশ্বকাপ ফাইনালে নাগপুরের ১৯ বছরের দিব্যা

আগ্রাসী খেলা পছন্দ হলেও দিব্যা দেশমুখ ঝুঁকি নেন হিসাব কষে। নিখুঁত কৌশল এবং ঠান্ডা মাথা তাঁর অন্যতম শক্তি। মহিলাদের বিশ্বকাপে প্রথম ১০এ থাকা তিন জনকে হারতে হয়েছে দিব্যার কাছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৫ ১৯:১৪
Divya Deshmukh

দিব্যা দেশমুখ। —ফাইল চিত্র।

মহিলাদের বিশ্বকাপ দাবার আগে দিব্যা দেশমুখের নাম খুব বেশি মানুষ জানতেন না। মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার এবং আন্তর্জাতিক মাস্টার দিব্যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আগেও সাফল্য পেয়েছেন। দাবা অলিম্পিয়াডে তিনটি সোনার পদক রয়েছে তাঁর। তবু নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে তেমন পরিচিতি ছিল না এত দিন। বিশ্বকাপ দাবার সেমিফাইনালে জয় তাঁকে হঠাৎই তারকার মর্যাদা দিচ্ছে।

একাধিক আন্তর্জাতিক সাফল্য থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় দাবার নতুন চমক হিসাবে অভিহিত হচ্ছেন দিব্যা। আরও আগেই হয়তো তাঁর স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। ১৫ বছর বয়সে মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার পর ১৭ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক মাস্টার হন দিব্যা। তবু ভারতের ক্রীড়াপ্রেমী মানুষের কাছে সুপরিচিত হওয়ার জন্য ১৯ বছরের দাবাড়ুকে অপেক্ষা করতে হল বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা পর্যন্ত! ভারতে মহিলা দাবার মুখ দীর্ঘ দিন ধরে কনেরু হাম্পি। তিনিই দেশের এক নম্বর। ঘটনাচক্রে তাঁর বিরুদ্ধেই বিশ্বকাপ ফাইনাল দিব্যার।

Divya Deshmukh

দিব্যা দেশমুখ। — ফাইল চিত্র।

নাগপুরে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। বাবা জিতেন্দ্র দেশমুখ এবং মা নম্রতা দেশমুখ দু’জনেই চিকিৎসক। দিদিকে ব্যাডমিন্টন খেলতে দেখে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। পাঁচ বছর বয়সেই দাবাকে আপন করে নেন। সেই ছোট্ট বয়সেই সাদা-কালো ৬৪ খোপের খেলাকে নিজের স্বপ্নপূরণের মাধ্যম করে নিয়েছিলেন। পাঁচ বছরে দাবা খেলতে শুরু করে সাত বছর বয়সেই জাতীয় স্তরে সাফল্য। ছ’বছর পূর্ণ হওয়ার কিছু দিন পর নাম দেন অনূর্ধ্ব-৭ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে। ‘দাবাড়ু দিব্যা’র বয়স তখন বছর খানেক। ২০১২ সালের সেই প্রতিযোগিতাতেই পদক জয়। এর পর ২০১৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনূর্ধ্ব-১০ বিশ্বখেতাব। ২০১৭ সালে ব্রাজিলে অনূর্ধ্ব-১২ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন। একের পর এক সাফল্যে ভর করে এগিয়েছেন দাবাড়ু দিব্যা। দেখতে দেখতে মহিলাদের ফিডে মাস্টার এবং ২০২১ সালে মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার। ঠিক দু’বছর পর ২০২৩ সালে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার হয়েছেন। গত বছর জিতেছেন অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্ব জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ। একের পর এক সাফল্য ধরা দিয়েছে দিব্যার দাবার বোর্ডে। দাবায় এমন ধারাবাহিকতা সহজ নয়। অথচ এই কঠিন কাজটাই করে দেখাচ্ছেন ভারতীয় দাবার বিস্ময় বালিকা। চেন্নাইয়ের ‘চেজ গুরুকুল’এর আরবি রমেশ দিব্যার কোচ। রমেশের তত্ত্বাবধানেই দিব্যার উত্থান। আগ্রাসী খেলা পছন্দ হলেও ঝুঁকি নেন হিসাব কষে। নিখুঁত কৌশল এবং ঠান্ডা মাথা দিব্যার অন্যতম শক্তি।

গত বছর দাবা অলিম্পিয়াডে ভারতের সোনাজয়ী মহিলা দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। দেশের সোনার সাফল্যে দিব্যার পারফরম্যান্স ছিল নজরকাড়া। গত বছরই ওয়ার্ল্ড টিম র‍্যাপিড এবং ব্লিৎজ চ্যাম্পিয়নশিপেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেন। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে এশিয়া এবং বিশ্ব পর্যায়ের একাধিক খেতাব। প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে হারানোর অভিজ্ঞতা।

দেশ-বিদেশে বহু লড়াই জয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে দিব্যা গিয়েছিলেন ফিডে বিশ্বকাপে। ব্যক্তিগত দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতায় একের পর এক প্রতিপক্ষকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছেন। প্রথম ১০এ থাকা তিন জনকে হারতে হয়েছে দিব্যার কাছে। না, তাঁকে ঘিরে এতটা প্রত্যাশা ছিল না ভারতীয় দাবা মহলের। দেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের তো নয়ই। প্রত্যাশার চাপ না থাকাটাও হয়তো সাহায্য করেছে প্রতিযোগিতার ১৫তম বাছাইকে।

chess
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy