আন্তোনিও হাবাসের টিম এফসি পুণের নাটকীয় জয়। আর তার সুবাদেই আইএসএল থ্রি-র লিগ টেবলে চারের নীচে নেমে গেল আটলেটিকো দে কলকাতা। এ বারের টুর্নামেন্টে এই প্রথম পস্টিগা-অর্ণবরা চলে গেলেন লিগ টেবলে পাঁচ নম্বরে।
শুক্রবার ঘরের মাঠ বালেওয়াড়ি স্টেডিয়ামে দিল্লি ডায়নামোসকে ৪-৩ হারিয়ে এফসি পুণে সিটি দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়াল টুর্নামেন্টে। এ দিন জেতায় তারা আপাতত চার নম্বরে। কলকাতা আবার চেন্নাইয়ানের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে কিছুটা চাপে পড়ল। যদিও হিউম-দেবজিতদের পক্ষে আশার খবর, পুণে ইতিমধ্যেই জোসে মলিনার টিমের চেয়ে এক ম্যাচ বেশি খেলে ফেলেছে। তাদের পয়েন্ট ১৫। আর কলকাতার ১০ ম্যাচে ১৪।
পুণে এ বারের আইএসএলে কখনও নিজেদের ঘরের মাঠে কলকাতাকে হারিয়েছে। কখনও আবার অন্য টিমের বিরুদ্ধে জিতে কলকাতাকে টপকে গিয়ে চাপে ফেলে দিচ্ছে মলিনাদের। স্বাভাবিক কারণেই তাই এ দিন পুণে আটকে যাক চাইছিল এটিকে। বিকেলে বিধানগরের সেন্ট্রাল পার্কে ক্লোজড ডোর প্র্যাকটিস সেরে এসে পুরো এটিকে ব্রিগেড টিভি-র সামনে বসে পড়ে দিল্লি-পুণের লড়াই দেখতে। তারা চেয়েছিল ম্যাচটা যেন নিদেনপক্ষে ড্র হয়। আর ফয়সালা হলে যেন জেতে দিল্লি।
এটিকে ফুটবলারদের যুক্তি ছিল— চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে লিগ টেবলে চারের মধ্যে থাকতে পারলে মনোবল আরও অটুট থাকবে। থাকবে বাড়তি মোটিভেশন। কিন্তু মাতেরাজ্জির টিমের বিরুদ্ধে নামার আগে কলকাতাকে স্বস্তিতে থাকতে দিল না হাবাসের টিম। স্বভাবতই কলকাতার কাছে চেন্নাই ম্যাচের গুরুত্ব আরও বেড়ে গেল। চেন্নাইয়ান ইতিমধ্যেই কলকাতার সমান ম্যাচ খেলে ১৩ পয়েন্ট পেয়ে গিয়েছে। মলিনার টিমের চেয়ে মাতেরাজ্জিরা পিছিয়ে মাত্র এক পয়েন্টে।
এ দিনের দিল্লি-পুণে ম্যাচকে এ বারের আইএসএলে এ পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে বেশি রক্তচাপ বাড়ানো লড়াই বলা যেতেই পারে। বালেওয়াড়িতে শুক্রবার দু’দল মিলিয়ে হল মোট সাত গোল। যা এ বারের আইএসএলে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি। এর আগে দিল্লিতে জামব্রোতার টিম আর মুম্বই সিটি এফসি ৩-৩ ড্র করেছিল। এ ছাড়াও দিল্লি মাতেরাজ্জির চেন্নাইকে চার গোল দিলেও, নিজেরা মাত্র এক গোল খেয়েছিল। কিন্তু সে সব ছাপিয়ে গিয়েছে এ দিনের দিল্লি-পুণে ম্যাচ। মজার বিষয়, এ দিন ইনজুরি টাইমে দুই দলই গোল করেছে। তবে পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচে জামব্রোতার দিল্লি শেষ রক্ষা করতে পারেনি।
ম্যাচের প্রথমার্ধটা অবশ্য পুণের পক্ষে একেবারেই ছিল না। সিসোকো পেনাল্টি মিস করেছিল শুরুর দিকে। আর তার কিছুক্ষণের মধ্যেই দিল্লির কেন লুইস ১-০ এগিয়ে দেন টিমকে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে একেবারে নাটকীয় ভাবে ঘুরে যায় ম্যাচের ফলাফল। বিরতিতে হাবাসের পেপটকের কারণেই হোক বা অন্য কোনও কারণে, দ্বিতীয়ার্ধে গোটা পুণে টিম-ই অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিল। মাঠে হাজির ছিলেন পুণের অন্যতম মালিক হৃতিক রোশন। বিরতিতে হৃতিক বলছিলেন, ‘‘আমাদের টিম এক গোলে পিছিয়ে থাকলেও যে ভাবে অ্যাটাক করছে তাতে মনে হচ্ছে দ্বিতীয়ার্ধে অন্য পুণেকে দেখতে পাবে সবাই।’’ শেষ পর্যন্ত বলিউড তারকার আশাই সত্য বলে প্রমাণ করে দেন হাবাসের ছেলেরা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আনিবাল জুর্দোর সমতা ফেরানোর আট মিনিটের মধ্যেই সিসোকো এবং জুর্দোর আরও একটি গোলে ৩-১ এগিয়ে যায় পুণে। এদুয়ার্দোর আত্মঘাতী গোলে দিল্লি কিছুটা অক্সিজেন পেলেও, কাজের কাজ কিছু হয়নি। বরং ইনজুরি টাইমে পরিবর্তে নামা লেনি রডরিগেজ ব্যবধান বাড়ান। দিল্লির মালসোয়ামজুয়ালা পরে ৪-৩ করলেও শেষ হাসি হাসে হাবাস বাহিনীই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy