Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

করুণদের ভাল খেলার জন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য বিরাটদের

ভারতীয় ক্রিকেটে সাপ্লাই লাইন তৈরি এখন যাঁর দায়িত্ব, সেই রাহুল দ্রাবিড় অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে এশিয়া চ্যাম্পিয়ন করার পর কথা বললেন বোর্ডের ওয়েবসাইটে। সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ... ভারতীয় ক্রিকেটে সাপ্লাই লাইন তৈরি এখন যাঁর দায়িত্ব, সেই রাহুল দ্রাবিড় অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে এশিয়া চ্যাম্পিয়ন করার পর কথা বললেন বোর্ডের ওয়েবসাইটে। সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ...

টেনশনটা এখন অনেক বেশি বলছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।

টেনশনটা এখন অনেক বেশি বলছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:২৭
Share: Save:

প্র: যুব এশিয়া কাপ জয়ের জন্য অভিনন্দন। এই সাফল্য নিয়ে কী বলবেন?

রাহুল: এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা টুর্নামেন্ট। দলের ছেলেদের অনেকেই এই প্রথম সাদা কোকাবুরা বলে খেলল। ফাইনালে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত জেতাটা সত্যিই বড় ব্যাপার। ছেলেরাও যেমন অনেক কিছু শিখতে পারল, আমরাও ওদের সম্পর্কে অনেক ধারণা পেলাম।

প্র: কোনও ম্যাচের উত্তেজক ফিনিশের সময় কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের আচরণ কি ক্রিকেটার রাহুল দ্রাবিড়ের চেয়ে আলাদা?

রাহুল: অবশ্যই আলাদা। কোচের টেনশনটা বেশি থাকে। মাঠে থাকলে কিন্তু যেটা অত হয় না। কারণ, মাঠে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সুযোগ থাকে। কোচের তা থাকে না। তার তো মাঠের বাইরে বসে থাকা ছাড়া কোনও উপায় নেই। তাই তার টেনশন অনেক বেশি। তবে কোচের কাজটা প্লেয়ারদের থেকে সোজাই হয়।

প্র: সিনিয়র টিম একটা শক্তিশালী রিজার্ভ বেঞ্চ পাচ্ছে। যেটা আপনিই তৈরি করে দিচ্ছেন। এই প্রক্রিয়াটা সম্পর্কে একটু বলুন না?

রাহুল: ভারতীয় ক্রিকেটের এখন ভাল সময় যাচ্ছে। শুধু সিনিয়র টিম নয়, তার বাইরেও প্রচুর প্রতিভাবান ক্রিকেটার রয়েছে। ‘এ’ টিমে, অনূর্ধ্ব-১৯ টিমে। এদের সর্বোচ্চ স্তরের জন্য তৈরি করা হচ্ছে। গত কয়েক বছরে আমরা যা যা সাফল্য পেয়েছি, সেগুলোর উপর ভিত্তি করেই এই কাজটা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ইংল্যান্ড সিরিজেই তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে। ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গিয়ে ছেলেরা আগের চেয়ে এখন অনেক সহজে অ্যাডজাস্ট করে নিতে পারছে। ‘এ’ টিমের বিদেশ সফরগুলোই সেতুর কাজ করছে। আমি যে দু’টো সফরে ‘এ’ দল নিয়ে গিয়েছি, তাতে বিপক্ষ টিমগুলো বেশ ভাল ছিল। যাদের বিরুদ্ধে খেলেছি, তাদের অনেকেই এখন অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার সিনিয়র টিমে খেলছে। এই ‘এ’ দলের সফরগুলো থেকেই ক্রিকেটাররা নিজেদের যেমন বুঝে নিতে পারে, তেমনই নির্বাচকরাও বুঝতে পারে, কে ঠিক কোন জায়গায় রয়েছে। এই লেভেলটা আসলে আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের জাস্ট উপরের লেভেল।

প্র: ট্রিপল সেঞ্চুরির পরেই করুণ নায়ার আপনাকে ধন্যবাদ জানায়। ও তো আপনার সামনেই বেড়ে উঠেছে?

রাহুল: টেস্টটা অসাধারণ খেলল করুণ। হি ইজ অ্যান ইনক্রেডিবল স্কোরার। প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি পেরিয়ে ওর তিনশোয় পৌঁছে যাওয়াটাই বোঝায়, কত খিদে আর ইচ্ছে ওর মধ্যে আছে। কেএল রাহুল, জয়ন্ত যাদব, হার্দিক পাণ্ড্যও খুব প্রতিভাবান। ইন্ডিয়া ‘এ’ সেট আপ থেকে সিনিয়র টিমে গিয়ে এদের ভাল খেলতে দেখাটা আমার কাছে খুব তৃপ্তির। এটা বলতেই হবে যে সিনিয়র টিমের ড্রেসিংরুমে যে পরিবেশ তৈরি করেছে বিরাট কোহালি আর অনিল কুম্বলে, তাতে তরুণ ক্রিকেটাররা সদ্য এসেও এতটুকু অস্বস্তিতে পড়ে না। ফলে ওরা নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারে। তার ফল তো টিমই পাচ্ছে। সিনিয়র টিমের ক্যাপ্টেন, কোচকেও এ জন্য ধন্যবাদ দিন।

প্র: আপনার এই অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ছেলেরা তো বেশিরভাগই ১৮ বা তার কম বয়সের। এই দলকেই কি যুব বিশ্বকাপের জন্য তৈরি করছেন?

রাহুল: ঠিকই ধরেছেন। এদের ২০১৮-র জুনিয়র বিশ্বকাপের কথা ভেবেই তৈরি করা হচ্ছে। তবে এমন অনেক ছেলেও আছে, যারা এই টিমে নেই, কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে অনুর্ধ্ব-১৯ লেভেলে ভাল খেলছে। ওদেরও কেউ কেউ বিশ্বকাপে খেলতে পারে। সামনে আরও ক্রিকেট আছে। সেই ম্যাচগুলোতে আরও অনেককে পরখ করে দেখা হবে। সব মিলিয়ে ২০-২৫ জনকে বিশ্বকাপের আগে বাছা হবে। তাদের মধ্যে থেকেই বিশ্বকাপের দল বেছে নেওয়া হবে।

প্র: অনিল কুম্বলে আর আপনি দু’জনেই বলেছেন ‘এ’ টিম আর অনূর্ধ্ব-১৯-এর রেজাল্ট বড় কথা নয়। তা হলে ছেলেদের আপনি কী বলেন? কী বলে মোটিভেট করেন?

রাহুল: সত্যিই এই দুই দলের হারা-জেতাটা কোনও ব্যাপার নয়। এখানে সুযোগ পাওয়া, নিজেদের গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা অর্জন করাটাই আসল ব্যাপার। অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট হল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দুনিয়ায় গিয়ে পড়া। তারা কী করছে, আমরা কী করছি, তার ফারাকটা জানা। সিনিয়র টিমের সঙ্গে যোগাযোগটাও থাকে আমাদের। ওদের ভবিষ্যতে কী ধরনের ক্রিকেটার বেশি দরকার, সেটা জেনেও আমরা দল তৈরি করার চেষ্টা করি। যেমন, ওদের যদি অদূর ভবিষ্যতে কয়েকজন ভাল অলরাউন্ডার লাগে, আমরা তা হলে কয়েকজন অলরাউন্ডারকে এক্সপোজার দিয়ে তাদের তৈরি করার চেষ্টা করি। এ ভাবেই পুরো প্রক্রিয়াটা চলছে। আর এটা যে সফলও হচ্ছে, তা তো বুঝতেই পারছেন।

এদের সবাই হয়তো ভবিষ্যতে ভারতীয় দলে খেলবে না। কিন্তু অনেকে ভাল ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটার তো হয়ে উঠতে পারে। ক্রিকেটকেই নিজেদের জীবন করে তোলার রাস্তা দেখানোটাই প্রধান উদ্দেশ্য। তাতে দেশে সিরিয়াস ক্রিকেটারের সংখ্যা অনেক বাড়বে। আর ঘরোয়া ক্রিকেটের মানও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rahul Dravid Anil Kumble Virat Kohli
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE