বাংলার সিনিয়র দল গড়বেন রাজু-সম্বরণরা। বাংলার দুই সফল প্রাক্তন ক্রিকেটারকে নির্বাচন কমিটিতে নিয়ে আসার সিদ্ধান্তে বুধবারই সিলমোহর লাগিয়ে দিল সিএবি।
কমিটির চেয়ারম্যান রাজু মুখোপাধ্যায়। বাংলার ক্রিকেটের স্বার্থে সম্বরণের তাঁর নেতৃত্বে কাজ করতে কোনও অসুবিধা নেই বলে জানিয়ে দিলেন রঞ্জি ট্রফি জয়ী বাংলার অধিনায়ক। চার বছর পর নির্বাচন কমিটিতে ফেরার খবরে সম্বরণের প্রতিক্রিয়া, “বাংলার ক্রিকেটের উন্নতির জন্য সব সময় আছি। সে জন্য আমাকে কী পদ দেওয়া হল, সেটা বড় কথা নয়। তা ছাড়া সৌরভের কথা তো আর ফেলতে পারি না।”
অন্য দিকে রাজু মুখোপাধ্যায় বললেন, “আমি সম্মানিত। সবচেয়ে বড় কথা সৌরভ যে সময় প্রশাসকের ভূমিকায় এল, সেই সময় আমি এই নতুন কাজ শুরু করছি। এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় ব্যাপার। এই কথা ভেবেই সৌরভের অনুরোধ না রেখে পারলাম না। আমার একটাই উদ্দেশ্য। বাংলার ক্রিকেটের উন্নতি করা। এ জন্য সবার সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে হবে আমাদের।”
মিলেমিশে কাজ করার কথা সম্বরণেরও মুখেও। বললেন, “রাজুদা আমার সিনিয়র হলেও আমরা একসঙ্গে খেলেছি। তাই ওঁর সঙ্গে কাজ করতে কোনও অসুবিধা হবে না।” সম্বরণের সতীর্থ ইন্দুভূষণ রায় ও রাজুর সতীর্থ অলোক ভট্টাচার্যকে বহাল রাখা হল এই কমিটিতে। আসন্ন মরসুমে তাঁরাই বাংলার দল গড়বেন।
বুধবার ওয়ার্কিং কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ার পর সৌরভ বলেন, “রাজুদা সম্প্রতি বোর্ডের ম্যাচ রেফারি হিসেবে ঘরোয়া ক্রিকেটে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রচুর ম্যাচ দেখেছেন। বহু উঠতি ক্রিকেটারকে উনি দেখেছেন। সে জন্যই ওঁকে নির্বাচকদের প্রধান করে আনা হল।” ক্রিকেট কমিটিতে সম্বরণের জায়গায় আনা হল আর এক প্রাক্তন গোপাল বসুকে।
এ দিকে ভিশন টোয়েন্টি টোয়েন্টি প্রকল্পের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব আর সামলাতে পারছেন না সৌরভ। তাই দুই প্রাক্তন ভারতীয় ব্যাটসম্যান ভিভিএস লক্ষ্মণ ও দিলীপ বেঙ্গসরকরকে এই প্রকল্পে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত দু’জনের মধ্যে কে এই দায়িত্ব পাবেন, তা অবশ্য এ দিন বলতে চাইলেন না সিএবির নয়া যুগ্মসচিব। শুধু বললেন, “আগে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিই, তার পর নাম জানাব।” সিএবি সূত্রের খবর, লক্ষ্মণের সময় নিয়ে সমস্যা রয়েছে। বেঙ্গসরকরের সঙ্গেও কথা বেশিদূর এগোয়নি। তাই খুব তাড়াতাড়ি কিছু হওয়ার নয়। তবে সৌরভের বক্তব্য, ১০ অক্টোবর হয়তো এই প্রকল্পের বোলিং ও ব্যাটিংয়ের দুই কোচই শহরে এসে পড়বেন।
এ দিন ওয়ার্কিং কমিটির সভা শান্তিপূর্ণ হলেও নাকি প্রশ্ন ওঠে ভিশন ২০২০ প্রকল্প ও এ এন ঘোষ ট্রফিতে এই প্রকল্পের দলের খেলা নিয়ে। ম্যাটিং উইকেটে বাংলার ক্রিকেটকে ফেরানোর ভাবনা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। তবে সৌরভের উত্তরে সদস্যরা সন্তুষ্ট। এই নিয়ে কোনও বিতর্ক তৈরি হয়নি বলে জানান সভায় থাকা এক সদস্য। ভিশন ২০২০ থেকে আদৌ কিছু পাওয়া যাবে কি না, এই প্রশ্নে সৌরভ জানান, ফল পাওয়ার জন্য এই প্রকল্পকে সময় দিতে হবে। এএন ঘোষে ভিশনের দল খেলা নিয়ে সৌরভের ব্যাখ্যা, জুনিয়র ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতা বাড়াতেই এই পরিকল্পনা। ম্যাটিং উইকেটের জন্য পিচের ক্ষতি হতে পারে, এই প্রশ্ন ওঠায় সৌরভ জানান, কিউরেটরদের সঙ্গে কথা বলেই এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ক্ষতি যাতে না হয়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিকে এ দিন বোর্ড জানিয়েছে, সিএবি-র সুপারিশ করা পাঁচ ম্যাচ রেফারির নামই গ্রহণ করা হয়েছে। এ বছর বোর্ডের বিভিন্ন ম্যাচে দত্তাত্রেয় মুখোপাধ্যায়, প্রণব রায়, রাজীব শেঠ, অরিন্দম সরকার, অজয় বর্মারা দায়িত্ব পালন করবেন। বোর্ডের রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্যই বাংলাকে এই ‘উপহার’ কি না, সিএবি-র একাংশে এই প্রশ্নও উঠেছে।