গোয়ার আরও একটা উইকেট তুলে ডিন্ডা। নিজস্ব চিত্র
ইডেনের দুই সকালে যেমন দু’বার ধাক্কা খেল বাংলা, সোমবার তৃতীয় সকালে তারা তেমনই পাল্টা ধাক্কা দিতে পারবে গোয়াকে?
রবিবার বিকেলে বাড়ি ফেরার সময় ইডেনে এই প্রশ্নটাই রেখে গেলেন মনোজ তিওয়ারিরা।
প্রথম দিন সকালে কুড়ি রানে প্রথম তিন উইকেট পড়ে বাংলার। রবিবার দ্বিতীয় দিন সকালে ৫২ রানে শেষ পাঁচ উইকেট পড়ে যায় তাদের। দুই সকালের জোড়া ধসে বাংলা আটকে গেল চারশোর নিচে, ৩৭৯-তে। রঞ্জি ট্রফির সর্বশেষ গ্রুপের সবচেয়ে দুর্বল দলের বিরুদ্ধে বঙ্গ ব্যাটিং চারশোও তুলতে পারল না। তবু বাংলা শিবিরে একটাই স্বান্ত্বনা, তিন পয়েন্ট নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার আশা এখনও বহাল তবিয়তে বেঁচে রয়েছে। আর এই ম্যাচে তিন পয়েন্ট পেলে যে শেষ আটে যাওয়ার রাস্তা পরিস্কার হয়ে যাবে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে তা বোধহয় সোমবার সকালেই নিশ্চিত হয়ে যাবে।
গোয়া রবিবার দ্বিতীয় দিনের শেষে ১৯১-৫। ১৮৮ রানে পিছিয়ে তারা। ফলো অন বাঁচাতে সাগররাজ্যের এখনও ৩৮ রান দরকার ঠিকই। তবে ফলো অনের চেয়ে বাংলার এখন বেশি প্রয়োজন প্রথম ইনিংসে লিড। যা মনোজ তিওয়ারিদের ফের রঞ্জি নক আউটে তুলতে পারে ২০১৫-১৬-র পর।
বাংলার দুই সেঞ্চুরির নায়কের একজন অনুষ্টুপ মজুমদার (১১৯) দিনের শেষে বলছিলেন, ‘‘সোমবার সকালটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সকালেই দুটো উইকেট ফেলে দিতে পারলে ওরা চাপে পড়ে যাবে। আমরাও প্রথম ইনিংসে লিডের দিকে অনেকটা এগিয়ে যেতে পারব।’’
গ্রুপ ‘ডি’ থেকে শেষ আটে ওঠার দৌড়ে বিদর্ভ ইতিমধ্যে উঠে বসেই আছে। ফাঁকা আর একটা জায়গা। যার জন্য লড়াই বাংলা ও পঞ্জাবের মধ্যে। তাও আবার পঞ্জাবের সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ, চলতি ম্যাচে তাদের সাত পয়েন্ট পাওয়া ও বাংলার হার বা প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে থাকা— এগুলো একসঙ্গে হতে হবে। সার্ভিসেসের বিরুদ্ধে ৬৪৫ তুলে পাল্টা তিন উইকেট ফেলে দিয়ে পঞ্জাব সাত পয়েন্টের দিকে এগিয়ে গেলেও বাংলার ইনিংস লিড আটকানো গোয়ার পক্ষে বেশ কঠিন হবে। এ বার রঞ্জি ট্রফিতে এখন পর্যন্ত জয়হীন গোয়ার অবশ্য চেষ্টা আছে। এ দিন সকালে বি অমিত ও অশোক ডিন্ডাকে যে রকম কঠিন ক্যাচ নিয়ে ফেরালেন অমোঘ দেশাই, অমূল্য পান্ডরেকররা, তাতে এমনই ইঙ্গিত। ২৫ বছর বয়সি অমোঘ দেশাই-ই এখন বাংলার সামনে বড় বাধা। ৫৩ রান তুলে ক্রিজে টিকে আছেন তিনি। এর মধ্যে অবশ্য দু’বার জীবন পান। একবার ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে অভিষেক রামন তাঁর ক্যাচ ফস্কান। এর পরেই আকাশে তোলা তাঁর ক্যাচ নেওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি অশোক ডিন্ডা।
অবশ্য এই অশোক ডিন্ডারই বলই কিছুটা বিষাক্ত। স্বপ্নিল আসনোদকর-সহ তিন উইকেট তিনি নিলেন তিনিই ৪১ রান দিয়ে। কণিষ্ক শেঠ, বি অমিত, সায়ন ঘোষদের বলে সেই কামড় নেই, যা ব্যাটসম্যানদের বিপদে ফেলতে পারে। তার ওপর আবার ইডেনের পাটা হয়ে ওঠা উইকেটের সাহায্যও তেমন পাননি তাঁরা। টেস্ট খেলতে যাওয়া মহম্মদ শামি ও অনূর্ধ্ব ১৯ খেলতে যাওয়া ঈশান পোড়েলের অভাব টের পাওয়া যাচ্ছে। স্পিনের জন্যও পিচে কিছু নেই বলে জানালেন এক ওভার করা অনুষ্টুপ। চার-চারজন পেসার নিয়ে খেলার লাভ এখন পর্যন্ত তাই বোঝা যায়নি।
বাংলার সবকিছুই সেই ডিন্ডা-নির্ভর। সোমবারের ঠাণ্ডা সকালে তিনি যদি বল হাতে আগুন ঝরাতে পারেন, তা হলে বাংলার হাতে নক আউটের টিকিট আসবে। না হলে আরও লড়াই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy