Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

গোলকিপাররা চিন্তা বাড়ালেও, স্বস্তি দিচ্ছে র‌্যান্টি-ডুডু জুটি

ইস্টবেঙ্গলের জয়ে মোহনবাগানেও উৎসব! অবাক হওয়ার কিছু নেই। ‘ঘটি-বাঙাল’ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চিড় ধরেনি। চিড় ধরতে শুরু করেছে সেই তত্ত্বে, যেখানে আই লিগের বাকি ক্লাবগুলো আড়ালে বলাবলি করে-- বাংলায় আর আই লিগ ঢুকবে না! শনিবার বালেওয়ারি স্টেডিয়ামে পুণে এফসি-কে হারিয়ে ইস্টবেঙ্গল শুধু আই লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে ঢুকে পড়ল না। বাগানকেও দেশের সবচেয়ে বড় ট্রফি জয়ের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৪
Share: Save:

ইস্টবেঙ্গল-৩ (র‌্যান্টি, হরমনজ্যোৎ, ডুডু)

পুণে এফসি-২ (ম্যাথু, ডার্কো)

ইস্টবেঙ্গলের জয়ে মোহনবাগানেও উৎসব!

অবাক হওয়ার কিছু নেই। ‘ঘটি-বাঙাল’ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চিড় ধরেনি। চিড় ধরতে শুরু করেছে সেই তত্ত্বে, যেখানে আই লিগের বাকি ক্লাবগুলো আড়ালে বলাবলি করে-- বাংলায় আর আই লিগ ঢুকবে না!

শনিবার বালেওয়ারি স্টেডিয়ামে পুণে এফসি-কে হারিয়ে ইস্টবেঙ্গল শুধু আই লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে ঢুকে পড়ল না। বাগানকেও দেশের সবচেয়ে বড় ট্রফি জয়ের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিল। লিগ টেবলে সঞ্জয় সেনের দল (২৮) শীর্ষে তো ছিল-ই। এ বার পুণের হারে পয়েন্টের পার্থক্য বেড়ে দাঁড়াল ছয়। তাও আবার দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেঙ্গালুরু এফসি-র (২২) চেয়ে একটা ম্যাচ কম খেলে।

তবে মোহনবাগানকে সুবিধা করে দিলেও, প্রবল গতিতে ছুটতে শুরু করে দিয়েছে এলকোর টিম। আই লিগের শুরুটা হতাশা আর অন্ধকারে ভরা হলে কী হবে? পুণেতে যে ভাবে পর পর দু’টো ম্যাচে বিপক্ষকে কার্যত উড়িয়ে দিল ইস্টবেঙ্গল(১৯ পয়েন্ট) , তাতে র‌্যান্টি-ডুডুদের নিয়ে লিগে নতুন করে স্বপ্ন দেখা যেতেই পারে! এখনও পর্যন্ত লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার চেয়ারটা র‌্যান্টি (১৪) নিজের দখলে তো রেখেছেনই। যে ডুডুর গোল না পাওয়া নিয়ে প্রবল আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল খোদ লাল-হলুদ জনতার মধ্যে, সেই ডুডুর পা-ও জাদু দেখাচ্ছে। আগের ভারত এফসি ম্যাচে জোড়া গোল উপহার দেওয়ার পরে আজ, শনিবার পুণে এফসি ম্যাচেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ গোলে ৩-১ করে ইস্টবেঙ্গল। না হলে অভিজিৎ মণ্ডল এ দিন গোলপোস্টের নীচে যে ফুটবল খেললেন, তাতে তিন পয়েন্ট নিয়ে এলকোর শহরে ফেরা বেশ কঠিন হয়ে যেত।

স্কোরবোর্ড যাই দেখাক না কেন, পুণের দু’টো গোলের পাশে অনায়াসে অভিজিতের নাম লিখে দেওয়া যেতে পারে! ৩-০ জেতা ম্যাচ শুধু গোলকিপারের একার ভুলেই ৩-২ জিতল ইস্টবেঙ্গল। এ দিন শুরুতেই বার্তোসের ক্রস থেকে দুরন্ত গোলে লাল-হলুদকে এগিয়ে দেন র‌্যান্টি। কিন্তু বিরতির ঠিক আগে সহজ ফ্লাইট মিস করে পুণের হয়ে আড়ালে ‘বারো নম্বর’ ফুটবলারের কাজ করলেন অভিজিৎ। ম্যাথুর একটা উঁচু বল ফিস্ট করে পোস্টের উপর দিয়ে বার করতে গিয়ে হাতের ফাঁক দিয়ে গলিয়ে জালেই ঢুকিয়ে দিলেন তিনি।

অভিজিৎ অবশ্য এখানে থেমে থাকেননি। ১-১ থেকে হরমনজ্যোৎ এবং ডুডুর গোলে ইস্টবেঙ্গল ৩-১ এগিয়ে যাওয়ার পরে ফের ধাক্কা দিলেন। প্রথম ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া তো দূরের কথা, উল্টে তাঁর গা ছাড়া ভাব এবং ঢিলেমির খেসারত দিতে হল দলকে। একটা গোল কিক মারতে গিয়ে বল সাজিয়ে দিলেন ডার্কোর পায়ে। নিটফল, ৩-২। ডুডু যদি শেষ গোলটা না করতেন, তা হলে ঘরের মাঠে করিমের অপরাজিত থাকার রেকর্ড ভাঙত না। পুণের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলের টানা আট ম্যাচ জেতার রেকর্ডও হত না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আই লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ত এলকো-বাহিনী। পুণে থেকে খাবরা ফোনে বলছিলেন, ‘‘কোচ থেকে শুরু করে দলের সব ফুটবলারই অভিজিতের পাশে আছে। এই ম্যাচের পজিটিভগুলো নিয়ে এগোতে চাই।’’

লাল-হলুদ অধিনায়কের কথায় টিম স্পিরিটের খোঁজ পাওয়া গেলেও কোনও সন্দেহ নেই, এই মুহূর্তে এলকোর প্রধান চিন্তা গোলকিপার। শুভাশিস রায় চৌধুরি নেই। অভিজিৎ ভুগছেন আত্মবিশ্বাসের অভাবে। থাকছেন অভ্র মণ্ডল ও লুই ব্যারেটো। যাঁরা আবার বহু দিন ম্যাচ খেলেননি। ইস্টবেঙ্গল টিম সূত্রের খবর, শেষের দু’জনকে সামনের এএফসি কাপের ম্যাচে দেখে নিতে পারেন এলকো। যদিও টিম ম্যানেজার অ্যালভিটোর দাবি, ‘‘এ রকম ঘটনা যে কোনও গোলকিপারের ক্ষেত্রে হতে পারে। শুভাশিসের পরে অভিজিৎ-ই আমাদের এক নম্বর গোলকিপার।’’

এলকোকে স্বস্তি দিচ্ছেন তাঁর স্ট্রাইকাররা। সময় যত এগোচ্ছে, ততই যেন ধারালো হয়ে উঠছে র‌্যা-ডু জুটি।

ইস্টবেঙ্গল: অভিজিৎ, অর্ণব, সুসাক, রবার্ট, অভিষেক (দীপক), মেহতাব, বার্তোস (রফিক), হরমনজ্যোৎ, লোবো, ডুডু, র‌্যান্টি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE