ফাইল চিত্র।
মেলবোর্নে অভিষেক টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন শুভমন গিল। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই তাঁর আত্মবিশ্বাস দেখে চমকে যান ভারতীয় অফস্পিনার আর অশ্বিন। তারকা অফস্পিনারের মনে হয়েছিল, শুভমনের মধ্যে কি অতিমানবিক ক্ষমতা রয়েছে?
শুভমনের দুরন্ত ৯১ রানের সৌজন্যেই ব্রিসবেনে রান তাড়া করে জেতার বিশ্বাস তৈরি হয় ভারতীয় শিবিরে। ভারতীয় কোচ রবি শাস্ত্রী জানিয়ে দেন, ভবিষ্যতের সম্পদ পঞ্জাবের তরুণ। তিন ম্যাচে ২৫৯ রান করে দেশে ফেরেন শুভমন। তাঁর গড় ছিল ৫১.৮০। কিন্তু কী এমন ঘটেছিল মেলবোর্নে, যা বিস্মিত করে অশ্বিনকে?
ভারতীয় ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠৌরের সঙ্গে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ঘটনাটি তুলে ধরেন অশ্বিন। জানিয়ে দেন, দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ব্যাট করার সময় শুভমন তাঁকে এসে বলেন, দ্রুত উইকেটগুলো ফেলে দাও। তার পরে আমি পাঁচ ওভারে এই রান তুলে দেব।
অশ্বিন কখনওই ভাবেননি, অভিষেক টেস্টে এ ধরনের আত্মবিশ্বাস নিয়ে কেউ কথা বলতে পারে। তিনি বলেছেন, ‘‘শুভমন গিলের ব্যাটিংয়ের আমি বড় ভক্ত। মেলবোর্নে অভিষেক টেস্টেও দারুণ শুরু করেছিল।’’ তার পরেই অশ্বিন বলতে শুরু করেন, ‘‘একটি ঘটনা প্রত্যেকের কাছে তুলে ধরতে চাই। দ্বিতীয় ইনিংসে ক্যামেরন গ্রিন আউট হয়ে যাওয়ার পরে প্যাট কামিন্স ও মিচেল স্টার্ক ব্যাট করছিল। দু'জনেই ক্রিজ কামড়ে পড়ে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ স্কোয়ার লেগ অঞ্চল থেকে দৌড়ে আমার কাছে এসে শুভমন বলে, অশ্বিন ভাই! দ্রুত আউট করে দাও ওদের। ৪০-৫০ রান হলে পাঁচ ওভারে আমি তুলে দেব।’’
শুভমনের এই অদ্ভুত ইচ্ছের কথা শুনে বিস্মিত হন অশ্বিন। বলেন, ‘‘সেই মুহূর্তে আমি ভাবতে পারিনি এ রকম কিছু ওর মুখ থেকে শুনব। মনে হচ্ছিল, আমি কি ঠিক শুনলাম? কারণ, একটি ছেলে অভিষেক টেস্ট খেলছে। সে এসে আমাকে বলছে, দ্রুত অলআউট করে দাও, পাঁচ ওভারে রান তুলে দেব! সেটাও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট ম্যাচে।’’
শুভমনের প্রশংসা করেছেন ভারতীয় দলের ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠৌরও। তিনি মনে করেন, বিশেষ প্রতিভা নিয়ে জন্মেছেন শুভমন। লকডাউনের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়া সফরের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন এই তরুণ ব্যাটসম্যান। যখন তাঁর খেলার ব্যাপারে কোনও নিশ্চয়তাই ছিল না। রাঠৌরের কথায়, ‘‘লকডাউনের মাঝে প্রত্যেক ব্যাটসম্যানকে আলাদা ভাবে ফোন করে তাদের সমস্যার কথা জানতে চাই। প্রত্যেককে নির্দিষ্ট পরিকল্পনার কথা বলি। কোন জায়গায় বল করলে সমস্যায় পড়তে পারে, সে সব বুঝিয়ে দিই। শুভমনকে ফোন করে দেখি, ও আগে থেকেই অস্ট্রেলীয় সফর নিয়ে কাজ করতে শুরু করে দিয়েছে।’’ যোগ করেন, ‘‘শুভমন শুরুতেই আমাকে বলে দেয়, খাটো লেংথের বল সামলানোর প্রস্তুতি ও শুরু করে দিয়েছে। অস্ট্রেলীয় সফর নিয়ে অনেক ধরনের ভাবনা চিন্তাও করে ফেলেছে লকডাউনের মধ্যেই।’’
অফস্পিনার নেথান লায়নকে কী ভাবে সামলানো যায়, সেটাও ভেবে নিয়েছিলেন শুভমন। রাঠৌরের কথায়, ‘‘অস্ট্রেলীয় সফরে ও ম্যাচ পাবে কি না, তা-ই ঠিক ছিল না। অথচ লায়নকে কী ভাবে সামলাবে, সে সব ফোনেই বোঝাতে শুরু করে আমাকে। তখনই বুঝতে পারি, ও বিশেষ প্রতিভা। অনেক বড় ব্যাটসম্যান হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy