Advertisement
E-Paper

পেপের কৌশল, কেভিন-জাদুতে পরাভূত রিয়াল

রিয়াল ম্যানেজার এমন কথা বলেছিলেন সান্তিয়াগো বের্নাবাউয়ে ম্যান সিটির বিরুদ্ধে নামার ২৪ ঘণ্টা আগে। আর ম্যাচের ঠিক আগে সবার চোখ কপালে উঠল গুয়ার্দিওলার প্রথম এগারো দেখে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৫৪
নায়ক: ম্যান সিটির দ্বিতীয় গোলের পরে কেভিন দ্য ব্রুইনকে (ডান দিকে) নিয়ে বেঞ্জামিন মেন্দি ও রিয়াদ মাহরেজ়ের (বাঁ দিকে) উল্লাস। গেটি ইমেজেস

নায়ক: ম্যান সিটির দ্বিতীয় গোলের পরে কেভিন দ্য ব্রুইনকে (ডান দিকে) নিয়ে বেঞ্জামিন মেন্দি ও রিয়াদ মাহরেজ়ের (বাঁ দিকে) উল্লাস। গেটি ইমেজেস

কেন রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে ফেভারিট ম্যাঞ্চেস্টার সিটি?

উত্তরটা দিয়েছিলেন জ়িনেদিন জ়িদান, ‘‘সবাই শুধু বলে সিটির পাস খেলে বল নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা। কিন্তু সেটা তো অনেক ক্লাবই করছে। ওদের আসল শক্তি কোচ। সেটা বার্সেলোনা, বায়ার্নে (মিউনিখ) বুঝিয়েছে। ইংল্যান্ডেও। ওর কোচিংয়ে থাকা ক্লাবের বারবার ট্রফি জেতার কারণ তারকারা নয়। গুয়ার্দিওলার মস্তিষ্ক।’’

রিয়াল ম্যানেজার এমন কথা বলেছিলেন সান্তিয়াগো বের্নাবাউয়ে ম্যান সিটির বিরুদ্ধে নামার ২৪ ঘণ্টা আগে। আর ম্যাচের ঠিক আগে সবার চোখ কপালে উঠল গুয়ার্দিওলার প্রথম এগারো দেখে। কেউ বিশ্বাসই করছিলেন না, সের্খিয়ো আগুয়েরো-রাহিম স্টার্লিং-ফার্নান্দিনহোকে রিজার্ভ বেঞ্চে বসিয়ে দল নামিয়ে দেবেন। আক্রমণের মাথায় কে? কেভিন দ্য ব্রুইন। যেখানে বেলজিয়াম-তারকা সব চেয়ে স্বচ্ছন্দ, সেই মাঝমাঠে নয়। অক্লান্ত ভাবে দ্য ব্রুইন গোলের বল জুগিয়ে যান। অথচ পেপ তাঁকে এমন জায়গায় নামালেন যেখানে চতুর শিকারির মতো গোলের বলের জন্য শুধু অপেক্ষায় থাকতে হয়।

ব্যাপারটা কী বোঝা গেল প্রথম মিনিট থেকে। এবং খেলা শেষের পরিসংখ্যান বলছে, বিপক্ষের অর্ধে ৬১ বার বল ধরেছেন দ্য ব্রুইন যাতে রিয়াল রক্ষণে কার্ভাহাল, ভারান, র‌্যামোস, মেন্দিদের নাভিশ্বাস উঠেছে। বোঝা গেল, গ্যাব্রিয়েল জেসুস আর বের্নার্দো সিলভাকে গুরু পেপের নির্দেশ ছিল ঘন ঘন জায়গা বদল করার। সঙ্গে রিয়াদ মাহরেজ় অপ্রত্যাশিত ভাবে ডান দিকে অনেকটা উঠে যাচ্ছিলেন। ফুটবল বিশ্লেষকদের মনে পড়ল, কৌশলের মহড়া পেপ সেরেছিলেন জানুয়ারিতে কারাবাও কাপ সেমিফাইনালে। কিন্তু রিয়ালের মতো দলের বিরুদ্ধে অভিনব পরীক্ষার এ হেন ঝুঁকি পেপ নেবেন ভাবতেই পারেননি পণ্ডিতেরা।

ম্যান সিটি গোল পাবেই ধরে নিয়েছিল সবাই। সমর্থকেরাও। পরের দু’বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে নির্বাসিত হয়েছে ইপিএলের অন্যতম সেরা এবং জনপ্রিয় ক্লাব। সিটির ভক্তেরা সারাক্ষণ উয়েফার মুণ্ডপাত করে স্লোগান দিয়ে গেলেন। প্রথম গোলের জন্য সিটিকে ৭৮ মিনিট অপেক্ষা করতে হলেও কেউই আগুয়েরোকে নামানোর দাবি তোলেননি। ৬০ মিনিটে নিকোলাস ওটামেন্ডির ভুলে ইস্কো রিয়ালকে এগিয়ে দিলেও নয়।

অপেক্ষা শেষ হয় ৭৮ মিনিটে। ১-১ করেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। গল‌্ফে গর্তে বল সাজিয়ে দেওয়ার মতো আসল কাজ করে দেন দ্য ব্রুইন। পাঁচ মিনিটে পরে থিবো কুর্তোয়াকে উল্টো দিকে ফেলে পেনাল্টিতে ২-১ করে যান তিনিই। ম্যান সিটি ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ নিলেও গোলের সুযোগ রিয়ালও পেয়েছে। লাল কার্ড দেখেছেন র‌্যামোস। গুয়ার্দিওলার যা নিয়ে মনে হয়েছে, লঘু পাপে গুরু দণ্ড। ম্যাচ পরিচালনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রিয়ালের ভিনিশিয়াস জুনিয়রও। তাঁর দাবি, জেসুস গোল করার আগে ফাউল করেন। ম্যাচে নাটকের মশলা উপচে পড়েছে। কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে চর্চা একটাই। লিয়োনেল মেসির প্রাক্তন গুরুর তাক লাগিয়ে দেওয়া রণনীতি!

নিজেদের মাঠে দু’গোল হজম করায় রিয়ালের কোয়ার্টার ফাইনালের আশা দেখছে না অনেকে। গুয়ার্দিওলা মানছেন না। ‘‘ক্লাবটার নাম রিয়াল। ওরা পারে না এমন কিছু হয় না। আত্মতুষ্টির জায়গা নেই,’’ বলে দিচ্ছেন তিনি। হতাশ জ়িদান বলছেন, ‘‘খারাপ সময় যাচ্ছে। রবিবারই এল ক্লাসিকো। দেখি, ওই ম্যাচটা থেকে ছেলেরা ঘুরে দাঁড়াতে পারে কি না।’’ কিন্তু ম্যান সিটির বিরুদ্ধে ফিরতি ম্যাচে কী হবে? রিয়াল ম্যানেজার ম্লান জবাব, ‘‘চেষ্টা করব।’’

এ দিকে ফুটবল মহলে প্রশ্ন, এতিহাদেও কি রিয়ালের জন্য নতুন ছক তৈরি রাখবেন পেপ? তেমন আভাস দেননি ম্যান সিটি ম্যানেজার। শুধু আগুয়েরোদের রিজার্ভ বেঞ্চে বসিয়েও বুধবারের ম্যাচ বার করা নিয়ে বলে যান, ‘‘জানতাম ওরা কী ভাবে রক্ষণ সামলায়। তাই স্ট্রাইকার ছাড়াই খেললাম। ভাল লাগছে, পরীক্ষা কাজে আসায়। তবে কৃতিত্ব ফুটবলারদের।’’

Real Madrid Man City
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy