Advertisement
E-Paper

জুভেন্তাসের হার, মাঠে বিদ্রুপের শিকার রোনাল্ডো

আতলেতিকোর জন্য খারাপ খবর, প্রতিযোগিতায় তিন বার হলুদ কার্ড দেখায় ফিরতি ম্যাচে খেলতে পারবেন না দিয়েগো কোস্তা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৪৭
আতলেতিকো মাদ্রিদের বিরুদ্ধে ম্যাচে গ্যালারির বিদ্রুপের জবাবে ইঙ্গিত রোনাল্ডোর। ছবি: এএফপি।

আতলেতিকো মাদ্রিদের বিরুদ্ধে ম্যাচে গ্যালারির বিদ্রুপের জবাবে ইঙ্গিত রোনাল্ডোর। ছবি: এএফপি।

আতলেতিকো দে মাদ্রিদ ২ • জুভেন্তাস ০

তাঁর পায়ে বল গেলেই ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোর গ্যালারি কান ঝালাপালা করে বাঁশি বাজিয়েছে। বিদ্রুপের বাঁশি। এ হেন ‘অভ্যর্থনা’ সহ্য না হওয়ারই কথা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর।
সময়ের সঙ্গে চিৎকার যত বিকট হয়েছে, ততবারই হাতের পাঁচ আঙুল খুলে পর্তুগিজ তারকা বুঝিয়েছেন, তাঁর ওয়াড্রবে পাঁচটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ আছে। যেন এ-ও বলতে চেয়েছেন, তোমাদের বিরুদ্ধে ২২ গোল করেছি।
ম্যাচের পরে টানেলে হাঁটার সময় গজগজ করতে করতে বলে গেলেন একই কথা, ‘‘পাঁচ বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছি। আতলেতিকো দে মাদ্রিদ একবারও নয়।’’ তখনই কেউ প্রশ্ন করেন, ‘আর কি কোয়ার্টার ফাইনালের আশা আছে?’ রোনাল্ডোর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া, ‘‘তুরিনে দ্বিতীয় লেগে ওদের দেখে নেব।’’
কিন্তু ‘দেখে নেওয়া’ কতটা সহজ?
বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে ০-২ হেরেছে জুভেন্তাস। তুরিনে চাকা ঘোরাতে ৩-০ জিততেই হবে রোনাল্ডোদের। আতলেতিকো আবার গোল করলে ইটালি ফুটবলে ‘ওল্ড লেডি’র আশা কার্যত শেষ হয়ে যাবে। অথচ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে আয়োজনে ত্রুটি রাখেননি জুভেন্তাস কর্তারা। ২৩ বছর পরে ইউরোপ সেরা হতে রিয়াল থেকে রোনাল্ডোকে কিনতেই ৯২১ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছিল। করবে না-ই বা কেন? পর্তুগিজ তারকার শুধু চ্যাম্পিয়ন্স লিগেই যে গোল ১২১!

গোলের পরে উচ্ছ্বাস গিমেনেসের। ছবি: রয়টার্স।

জুভেন্তাস যেন ধরেই নিয়েছিল, সি আর সেভেন খেলা মানেই গোল এবং জয় আসবে। কিন্তু তুরিনের ক্লাবের জার্সি পরার পরে সেটা হচ্ছে কই? চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলেছেন ছয় ম্যাচ। গোল মাত্র একটা। তবু আশায় বুক বেঁধেছিলেন মাসিমিলিয়ানো আলেগ্রি। অন্তত লা লিগায় যাদের বিরুদ্ধে তিনি শাসন করেছেন, সেই রোনাল্ডোই হারিয়ে দেবেন আতলেতিকোকে, এমনই ধরে নেওয়া হয়েছিল। ম্যাচে একবার বাদে ফল হল ঠিক উল্টো। সেই একবার বুক চিতিয়ে চেনা ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে নিঃশ্বাস ছেড়ে ফ্রি-কিক মেরেছিলেন রোনাল্ডো। খেলা শুরুর ৬ মিনিটে সেই শট আতলেতিকো গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় বারের উপর তুলে দেন।
নায়ক অবশ্য পোল্যান্ড জাতীয় দলের গোলরক্ষক ওবলাক নন। ফুটবলে গোলই যদি শেষ কথা হয়, তা হলে বেছে নিতে হবে রোনাল্ডোর দেশ থেকে আকাশপথে পাঁচ হাজার মাইল দূরের উরুগুয়েকে। আতলেতিকোর হয়ে দু’টি গোল করলেন হোসে মারিয়া হিমেনেস (৭৮ মিনিট) ও দিয়েগো অদিন (৮৩ মিনিট)। দু’জনই উরুগুয়ের ফুটবলার। তার উপর সেন্টার ব্যাক! এবং ২-০ হওয়ার পরে স্টেডিয়ামে যে পরিমাণ উৎসব শুরু হল তাতে মনে হয়েছে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালই যেন হচ্ছে। ঘটনাচক্রে এ বারের ফাইনাল হবে ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতেই।
কম গেলেন না, আতলেতিকোর ম্যানেজার দিয়েগো সিমিয়োনেও। অদিন গোল করার পরে বিশ্রী অঙ্গভঙ্গিতে উৎসব করতে গিয়ে বিপদেও পড়লেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর সমালোচনা হল বিস্তর। সিমিয়োনে অবশ্য ক্ষমাও চেয়ে নেন। ‘‘কাউকে আঘাত করতে চাইনি,’’ বলেন আতলেতিকোর ম্যানেজার।
দুই ডিফেন্ডার গোল করে গেলেও এমন নয় যে, আতলেতিকোর স্ট্রাইকাররা সাংঘাতিক ব্যর্থ। বরং উল্টোটাই সত্যি। একবার তো নিশ্চিত গোলের শট জুভেন্তাস ডিফেন্ডার হাত দিয়ে আটকালেন। পেনাল্টিই পাওয়ার কথা লা লিগায় দু’নম্বরে থাকা ক্লাবের। আর এক বার আলভারো মোরাতার হেডে করা গোল বাতিল হল। দু’বারই রেফারি ভিডিয়ো প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে সিদ্ধান্ত পাল্টান। ফল ৪-০ হয়ে গেলে কিন্তু তুরিনের ফিরতি ম্যাচটা কার্যত নিয়মরক্ষার হয়ে যেত।
এত কিছুর পরেও আতলেতিকোর জন্য খারাপ খবর, প্রতিযোগিতায় তিন বার হলুদ কার্ড দেখায় ফিরতি ম্যাচে খেলতে পারবেন না দিয়েগো কোস্তা। হয়তো সে জন্যই জুভেন্তাস ম্যানেজার আলেগ্রি বলতে পারলেন, ‘‘দ্বিতীয়ার্ধে যা খেলেছি তার চেয়ে খারাপ হয়তো আর কোনও দিন খেলব না। সব চেয়ে বড় ভুলটা হয়েছে ফাঁদে পা দিয়ে ওদের অহেতুক তাড়া করতে গিয়ে। ভুল থেকেই শিখতে হবে। এই ফল নিজেদের মাঠে উল্টে দেওয়া সম্ভব।’’

Cristiano Ronaldo Juventus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy