Advertisement
E-Paper

জামাতের সঙ্গেই জোট ঘোষণা এনসিপির! হাসিনা-বিরোধিতা থেকে তৈরি দলের সমঝোতা মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তির সঙ্গে

জামাতের সঙ্গে জোট বাঁধা নিয়ে আগে থেকেই আলাপ আলোচনা চলছিল এনসিপি-র অন্দরে। তা নিয়ে দলের অন্দরে দ্বিমতও প্রকাশ্যে আসছিল। বেআব্রু হচ্ছিল এনসিপি-র একাংশের ক্ষোভ।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:০০
বাংলাদেশে শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলন থেকে তৈরি হওয়া দল এনসিপি-র নেতা নাহিদ ইসলাম।

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলন থেকে তৈরি হওয়া দল এনসিপি-র নেতা নাহিদ ইসলাম। — ফাইল চিত্র।

ক্ষোভ-অসন্তোষ ছিল দলের অন্দরেই। তবে সে সবের তোয়াক্কাই করল না বাংলাদেশের ছাত্র-যুবদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। জোট বাঁধল মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি জামায়াতে ইসলামি (জামাত নামেই যা পরিচিত)-র সঙ্গে। রবিবার বিকেলে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই নির্বাচনী সমঝোতার কথা ঘোষণা করেন জামাত প্রধান শফিকুর রহমান। সমঝোতার ঘোষণা করেছেন এনসিপি-র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামও।

গত বছর বাংলাদেশে হাসিনা-বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন সে দেশের ছাত্র-যুবরা। ওই ছাত্র-যুব নেতাদের একাংশই পরবর্তী সময়ে নতুন রাজনীতিক দল গঠন করেন। বাংলাদেশে সম্প্রতি বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদ নির্বাচনে একক ভাবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল এনসিপি। তবে তাদের প্রার্থীরা উল্লেখযোগ্য ছাপ ফেলতে পারেননি। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতেই বাংলাদেশে নির্বাচন রয়েছে। তার আগে এ বার জামাত শিবিরের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা সেরে ফেলল হাসিনা-বিরোধিতা থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে উঠে আসা ছাত্র-যুবদের দল।

জামাতের সঙ্গে জোট বাঁধা নিয়ে আগে থেকেই আলাপ আলোচনা চলছিল এনসিপি-র অন্দরে। তা নিয়ে দলের অন্দরে দ্বিমতও প্রকাশ্যে আসছিল। বেআব্রু হচ্ছিল এনসিপি-র একাংশের ক্ষোভ। সমঝোতা প্রায় চূড়ান্ত হয়ে আসার পর শনিবারই দলত্যাগ করেছেন এনসিপি-র দুই শীর্ষ নেত্রী তাসনিম জারা এবং তাসনূভা জাবীন। তাসনিম এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ছাড়াও দলের রাজনৈতিক পর্ষদের সদস্য ছিলেন। তাসনূভা ছিলেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক। ঢাকা-১৭ আসনে তাঁকে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল এনসিপি। তবে দুই নেত্রীই জামাতের সঙ্গে জোটে আপত্তি জানিয়ে সরে দাঁড়ান দল থেকে।

জামাতের সঙ্গে জোট নিয়ে আপত্তি রয়েছে এনসিপি-র আরও অনেকেরই। জামাতের সঙ্গে সমঝোতায় নীতিগত আপত্তি জানিয়ে শনিবারই নাহিদকে স্মারকলিপি জমা দেন এনসিপি-র ৩০ জন নেতা। তাঁর বক্তব্য, দল জামাতের সঙ্গে কোনও ধরনের জোট বা সমঝোতায় গেলে এনসিপির নৈতিক অবস্থান দুর্বল হবে এবং রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতার উপর এটির দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। স্মারকলিপিতেও এ কথা উল্লেখ করেছেন ওই বিক্ষুব্ধ নেতারা।

তবে এই আপত্তির মাঝেই রবিবার জামাতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্বাচনী সমঝোতা ঘোষণা করল এনসিপি। জামাত প্রধান শফিকুর রহমান রবিবার ঢাকা থেকে ঘোষণা করেন, তাঁদের সঙ্গে আগে থেকেই আটটি দল ছিল। এ বার আরও দু’টি দল যুক্ত হল। তার মধ্যে একটি এনসিপি। পৃথক একটি সাংবাদিক বৈঠকে একই ঘোষণা করেন এনসিপি নেতা নাহিদও। সন্ধ্যায় ঢাকার বাংলামোটর এলাকায় দলের অস্থায়ী কার্যালয় থেকে এই নির্বাচনী সমঝোতার ঘোষণা করেন তিনি।

এনসিপি-জামাত জোট ঘোষণা হওয়ার পরই ছাত্র-যুবদের দলের থেকে দূরত্ব তৈরি করেছেন বাংলাদেশের অপর এক যুব নেতা মাহফুজ আলম। তিনি ইউনূস সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা। উপদেষ্টা পদ ছাড়ার পরে তিনি কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেননি। তবে এনসিপি-র সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল বরাবরই। রবিবার রাতে সমাজমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, এই এনসিপি-র সঙ্গে তিনি যুক্ত থাকতে পারছেন না। একটি পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘ঢাকার কোনও একটা আসনে জামায়াত-এনসিপি জোটের প্রার্থী হওয়ার চাইতে আমার ‘লং স্ট্যান্ডিং পজ়িশন (দীর্ঘ দিনের অবস্থান) ধরে রাখা অধিক গুরুত্বপূর্ণ।’’

Bangladesh dhaka NCP Nahid Islam jamaat e islami
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy