এটাই হয়তো বাকি ছিল!
ইউরো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে সব মহল থেকেই প্রশংসা শুনেছেন। কিন্তু খোদ ঈশ্বরের সঙ্গে তাঁর তুলনা টানা হবে, সেটা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবেননি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।
মঙ্গলবার সিআর সেভেনের বোন কাতিয়া আভেইরো ভাইয়ের চোটের সঙ্গে যিশুর ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাকে এক করে দিলেন। কাতিয়া বলেছেন, ‘‘ফাইনালে দাদার চোখে জল দেখে আমিও কেঁদে ফেলেছিলাম। তখন মনে হচ্ছিল, কেউ বুকে ছুরি মারছে।’’ এখানেই থামেননি তিনি। বরং আরও একটু এগিয়ে কাতিয়া যোগ করেছেন, ‘‘কিন্তু ঈশ্বর মহান। যে রকম ভাবে যিশু আমাদের রক্ষা করার জন্য ক্রুশবিদ্ধের যন্ত্রণা সহ্য করেছিলেন, ঠিক তেমনই সে দিন সতীর্থ এবং প্রিয়জনদের কথা ভেবে যন্ত্রণা সহ্য করে যাচ্ছিল রোনাল্ডো। কাঁদছিল যে, ও চাইলেও কাউকে মাঠে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারছে না বলে!’’
বোনের কথার প্রসঙ্গে ইউরোজয়ী পর্তুগাল অধিনায়কের কোনও পাল্টা প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এ দিন এক পর্তুগিজ সংবাদপত্রে রোনাল্ডো বলেছেন, ‘‘আমি ঈশ্বরকে আর একটা সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছিলাম। এই ট্রফিটা পর্তুগালের প্রাপ্য। টিমের প্রাপ্য। আমি সব সময় বলে এসেছি, দেশের হয়ে ট্রফি জিততে চাই। আর আমি সেটা করে দেখিয়েছি।’’
তবে বোন একা নন। রোনাল্ডোর মা ডোলোরেস আভেইরো-ও এ বার ছেলের জন্য আসরে নেমে পড়লেন। মেয়ের মতো তিনি অবশ্য যিশুর সঙ্গে তুলনা টানেননি রোনাল্ডোর। তবে যাঁর জন্য তাঁর ছেলের এই দুর্দশা সেই পায়েতকে এক হাত নিয়েছেন তিনি। তাঁর কথা, ‘‘আমি এ ভাবে আমার ছেলেকে দেখতে চাইনি। ফুটবল হল বল-এ লাথি মারার খেলা। বিপক্ষকে অযথা লাথি মেরে আঘাত করা নয়।’’
সিআর সেভেন না থাকলেও, টিম পর্তুগাল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শেষমেশ। তাঁর ছেলের জন্য গোটা স্টেডিয়ামকে দাঁড়িয়ে জয়জয়কার করতে দেখেছেন মা। তাই পায়েতকে দুষলেও, ইউরো জয়ের আনন্দ নিশ্চয়ই শান্তি দেবে ডোলোরেসকে!
আর তাতেও যদি রাগ না কমে, তা হলে পর্তুগালের ফুলব্যাক সেড্রিক সোয়ারেসের কথা শুনলে অবশ্যই খুশি হবেন রোনাল্ডোর মা। সোয়ারেস বলেছেন, ‘‘রোনাল্ডো পুরো ম্যাচ খেলতে না পারলেও, সে দিন প্রত্যেক মুহূর্তে আমাদের পাশে থেকে ও উদ্বুদ্ধ করে গিয়েছে। এক কথায় রোনাল্ডো অসাধারণ। অবিশ্বাস্য। ওর কথাগুলো শুনেই যেন গোটা ড্রেসিংরুম আরও তেতে উঠেছিল এক্সট্রা টাইমে।’’
ফুটবলবিশ্ব এখন রোনাল্ডোময়। কান পাতলেই শুধু ইউরো চ্যাম্পিয়ন অধিনায়কের জয়ধ্বনি। কিন্তু এ সবের মধ্যে যেন কাঁটা সেই চোট! এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে সামনের চার-পাঁচ মাস মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে রোনাল্ডোকে। প্রথম মেডিক্যাল রিপোর্ট মেনে চললে তাঁর হাঁটুর চোট গুরুতর। নিটফল, রিয়ালের হয়ে সুপারকাপে তো বটেই লা লিগার প্রথম দিকের কিছু ম্যাচেও থাকতে পারছেন না রোনাল্ডো। ফাইনালে চোটের পর এখনও পর্যন্ত হাসপাতালে যাননি তিনি। তাই এটা বলাই বাহুল্য যে, এ বার রোনাল্ডোকে কিছু মেডিক্যাল টেস্ট দিতে হবে। যাতে আরও নিশ্চিত হওয়া যায় যে, বাঁ হাঁটুর চোট কতটা গুরুতর।
ইউরোর ট্রফি আনন্দ দিলেও, তাঁর চোট রেখে গেল ধোঁয়াশা। যা নিয়ে এখন অনেক দিন ভুগতে হতে পারে রিয়ালকে। সিআর সেভেনকেও!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy