মুছে গেল যে দুই লোগো।
আবারও বড় ধাক্কা ভারতীয় ফুটবলে!
আই লিগকে আরও জৌলুসহীন করে দেশের সর্বোচ্চ টুর্নামেন্ট থেকে এ বার নাম তুলে নিল গোয়ার দুই নামী ক্লাব সালগাওকর এবং স্পোর্টিং ক্লুব। ফুটবলের রাজ্য বলে পরিচিত গোয়ার দুই ক্লাব শুক্রবার একসঙ্গে জানিয়ে দিল, প্রফুল্ল পটেল অ্যান্ড কোম্পানি যে ভাবে ক্লাবগুলোকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে তার প্রতিবাদে দল তুলে নিচ্ছে তারা।
গত বছরই ফেডারেশনের কাজে বিরক্ত হয়ে নাম তুলে নিয়েছিল পুণে এফসি এবং ভারত এফসি। আই লিগের তুলনায় আইএসএলকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার জন্য। এ বারও একই অভিযোগ গোয়ার দুই হাইপ্রোফাইল ক্লাবের। পরিস্থিতি যা তাতে গোয়া থেকে এ বছর আই লিগ খেলবে শুধু ডেম্পো। তাও এ বারই তারা দ্বিতীয় ডিভিশনে খেলে আই লিগ-ওয়ানে উঠেছে। এ দিনের পরে এগারো দলের আই লিগ হয়ে দাঁড়াল নয় দলের।
শুধু পুণে বা গোয়ার বড় ক্লাবই নয়, সেই জেসিটি থেকে শুরু করে মহীন্দ্রা, চার্চিল ব্রাদার্স, ইউনাইটেড স্পোর্টস, রাংদাজিদ,একের পর এক সফল পুরনো ও উঠতি ক্লাবকে অন্ধকারে পাঠিয়েছে ফেডারেশেনের নানা নিয়মকানুন। যে নিয়মগুলোর সঙ্গে বাস্তবের সম্পর্ক কম। এতে অবশ্য কোনও হেলদোল নেই দিল্লির ফুটবল হাউসের কর্তাদের। তাঁরা যে কোনও ভাবে হোক আইএসএল-কে দেশের প্রধান টুনার্মেন্ট করতে মরিয়া। প্রফুল্ল-কুশলদের অপদার্থতা আর উন্নাসিকতা দেখে উত্তেজিত স্পোর্টিং ক্লুব চেয়ারম্যান পিটার ভাজ এ দিন ফোনে বলে দিলেন, ‘‘ফেডারেশন বোবা-কালা-অন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিলে তিলে এ দেশের ফুটবলের সর্বনাশ হচ্ছে, অথচ কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। কোনও কথাও শুনতে পাচ্ছে না। বলা তো দূরের কথা।’’
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্লাবের আইএসএলকে ভারতের এক নম্বর টুর্নামেন্ট করে, আই লিগকে গুরুত্বে দ্বিতীয় স্থানে নামিয়ে আনার প্রস্তাব ছিল ফেডারেশনের। ২০১৭ থেকেই তা শুরু হওয়ার কথা। যার প্রতিবাদে শুরু থেকে সবচেয়ে সরব ছিল গোয়ার টিমগুলো। এমনকী রাজ্য ফুটবল সংস্থা জিএফএ-র সঙ্গে মিটিং করে ফেডারেশনকে চিঠি দিয়ে পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, প্রয়োজনে আই লিগই খেলবে না তারা। পিটার ভাজ বললেন, ‘‘ফেডারেশন আমাদের সেই চিঠির কোনও উত্তর দেয়নি। ওরা কী মনে করেছে, আমাদের কোনও সম্মান নেই? আর সামনের বার থেকে যখন আই লিগ কার্যত সে ভাবে থাকছেই না, তখন এ বছরই বা আর খেলব কেন?’’ সালগাওকর সচিব ক্রুজ-ও বললেন, ‘‘আমরা আগেই যা বলার বলেছি। নতুন করে কিছু বলার নেই। ফেডারেশন ছেলেখেলা করবে, আর সব মুখ বুজে মেনে নেব নাকি!’’
গোয়ার দুই ক্লাব দল তুলে নেওয়ায় কলকাতার দুই প্রধানে দু’রকম প্রতিক্রিয়া। ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদার তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন ফেডারেশনকে। বলেছেন, ‘‘এটা ফুটবল কফিনে আরও একটা পেরেক মারল। এর পর আই লিগ খেলার মানে কী? এখন ফেডারেশন আর তার দলবল আই লিগ খেলুক।’’ মোহনবাগান অবশ্য উল্টো পথে হেঁটেছে। ক্লাবের অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, ‘‘এই ক্লাবগুলো আমাদের মতো সমর্থকের ক্লাব নয়। ব্যক্তি মালিকানায় চলে। এর কোনও প্রভাব তাই পড়বে না।’’
এত বড় ধাক্কায় ফেডারেশন কর্তারা এতটাই হতবাক যে লজ্জায় তাঁরা মুখ লুকোচ্ছেন। এবং দৃষ্টি অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন। রাতে ফেডারেশন সচিব কুশল দাশ বলে দেন, ‘‘আমরা যেটা বলেছি সেটা তো প্রস্তাব মাত্র। অনেকে অনেক মত দিচ্ছে। ভারতীয় ফুটবলের রোড ম্যাপ ঠিক করতে চাইছি আমরা। গোয়ার ক্লাবের সিদ্ধান্তে আমার বিস্মিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy