তেতাল্লিশ দিনে বিশ্বের এক নম্বরে সানিয়া।
সানিয়া মির্জা-মার্টিনা হিঙ্গিস। দু’হাজার পনেরোর ১১ মার্চ থেকে ১২ এপ্রিল। তেতাল্লিশ দিন। জয়-হার ১৪-০। তিনটে টুর্নামেন্ট খেলে তিনটেই চ্যাম্পিয়ন। জুটির মোট ডাবলস র্যাঙ্কিং পয়েন্ট ২৪৭০। সানিয়ার ব্যাক্তিগত ডাবলস র্যাঙ্কিং পয়েন্ট ১২৩৫।
নিটফল: সানিয়া মির্জা ডাবলসে বিশ্বের এক নম্বর প্লেয়ার। সানিয়াদের জুটিও বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে।
সিঙ্গলস-ডাবলস-মিক্সড ডাবলস মিলিয়ে এক ডজনের বেশি গ্র্যান্ড স্লামজয়ী তিরিশোর্ধ্ব সুইস টেনিস সুন্দরীকে গত মাসে নতুন পার্টনার করা প্রসঙ্গে সানিয়া জানিয়েছিলেন, আমার ফোরহ্যান্ড বিশ্বমানের হলে হিঙ্গিসের ব্যাকহ্যান্ড মেয়েদের টেনিসে সর্বকালের সেরা। কোর্টে আমরা একে অন্যের ভাল পরিপূরক হতে পারলে তার চেয়ে ভাল বোধহয় ডব্লিউটিএ ডাবলস সার্কিটে আর কিছু হয় না।
মাত্র দেড় মাসের মধ্যে তাঁর কথা অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণিত। ভারতীয় টেনিস ইতিহাসে প্রথম মেয়ে হিসেবে বিশ্বের এক নম্বর আসনে বসলেন হায়দরাবাদের আঠাশ বছরের সানিয়া মির্জা। ডাবলসে মহেশ ভূপতি, লিয়েন্ডার পেজের মতোই ব্যক্তিগত বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে পৌঁছলেন ভারতীয় টেনিসের গ্ল্যামার গার্ল। হিঙ্গিসকে পাওয়ায় দেড় মাসের মধ্যেই পাঁচ থেকে এক নম্বরে চমকপ্রদ উত্থান সানিয়ার। ইন্ডিয়ান ওয়েলস আর মায়ামিতে হার্ডকোর্টে ট্রফি তোলার পরে রবিবার আমেরিকার মাটিতে সানিয়ারা তিনে তিন করলেন চার্লসটনের ক্লে কোর্টে ফ্যামিলি সার্কল কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে। ওই সারফেসে তাঁদের জুটির বিন্দুমাত্র প্রস্তুতি ছাড়াই। নামার আগে যে জন্য সানিয়া টুইট করেছিলেন, ‘ক্লে কোর্টে আমরা কোনও প্র্যাকটিস না করেই এক নম্বর হতে নামছি।’তা সত্ত্বেও আগের তিনটে রাউন্ডেই একটা করে সেট হারার পরে প্রতিটা ম্যাচ সুপার টাইব্রেকে জেতার পর এ দিন ফাইনালে সানিয়ারা উড়িয়ে দেন অস্ট্রেলীয়-রোমানিয়ান জুটি ডেলাকুয়া-জুরাককে। ৬-০, ৬-৪। তার আগে ইন্ডিয়ান ওয়েলস আর মায়ামি মিলিয়ে তো দশটা ম্যাচে একটাও সেট হারাননি সানিয়ারা। পেশাদার টেনিস সার্কিটে এহেন একচ্ছত্র প্রাধান্য ইদানীং প্রায় বিরল। সোমবারই ডব্লিউটিএর নতুন র্যাঙ্কিং তালিকায় দুই ইতালীয় সারা ইরানি এবং রবার্তা ভিঞ্চিকে (৭৬৪০) টপকে সানিয়া ৭৭৩০ পয়েন্টে পৌঁছে এক নম্বর হবেন। ডাবলস টিম র্যাঙ্কিংয়েও সানিয়া-হিঙ্গিস জুটি ২৪৭০ পয়েন্ট নিয়ে এক নম্বর হবেন। রুশ জুটি ভেসনিনা-মাকারোভাকে (২১০৫) টপকে। বিশ্বের এক নম্বর ডাবলস প্লেয়ার হওয়ার উচ্ছ্বাসে কোর্টেই ট্রফি হাতে সানিয়া এ দিন বলে দেন, ‘‘টেনিসে হাতেখড়ি হওয়ার দিন থেকে প্রতিটা বাচ্চার স্বপ্ন থাকে সে এক দিন এক নম্বর হবে। আর ডাবলসে আমার সেটা হওয়ার মুহূর্তে এর চেয়ে ভাল সঙ্গী বোধহয় আর কেউ হতে পারত না। এখানে আসর সময় আমার আর মার্টিনার মাথায় একটা জিনিসই ছিল। এক নম্বর হতে হবে। আর ও সত্যিই সেই ব্যাপারে আমাকে সাহায্য করেছে। বেশ কয়েকটা কঠিন সময় উতরোতে আমাকে সাহায্য করেছে। এ রকম এক জন গ্রেট মানুষ, গ্রেট প্লেয়ারের সঙ্গে খেলে এ বছর আরও অনেক টুর্নামেন্ট জিতব। বড় বড় টুর্নামেন্ট জিতব। বছরটা শেষ করবও শীর্ষে থেকে। তবে চার্লসটন আমার কাছে সব সময় স্পেশ্যাল থাকবে। ফ্যামিলি সার্কল কাপকে কখনও ভুলব না। এখানেই যে আমি এক নম্বর হলাম!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy