Advertisement
E-Paper

নাটকীয় চড়াই-উতরাইয়ের কোর্টে সানিয়ার ‘মর্দানি’

ফেডেরার বনাম ‘বেবি ফেড’ হল না! রজার শেষ ১১ বছরে তাঁর দশম যুক্তরাষ্ট্র ওপেন কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেও দিমিত্রভের বদলে তাঁকেই হারিয়ে ফ্লাশিং মেডোয় পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নের মুখোমুখি হচ্ছেন কৃষ্ণাঙ্গ ফরাসি মঁফিস। ‘নতুন মার্টিনা হিঙ্গিস’-এর রূপকথার দৌড়ও থেমে গেল!

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৫১
যুক্তরাষ্ট্র ওপেন মাতাচ্ছেন সানিয়া।

যুক্তরাষ্ট্র ওপেন মাতাচ্ছেন সানিয়া।

ফেডেরার বনাম ‘বেবি ফেড’ হল না!

রজার শেষ ১১ বছরে তাঁর দশম যুক্তরাষ্ট্র ওপেন কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেও দিমিত্রভের বদলে তাঁকেই হারিয়ে ফ্লাশিং মেডোয় পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নের মুখোমুখি হচ্ছেন কৃষ্ণাঙ্গ ফরাসি মঁফিস।

‘নতুন মার্টিনা হিঙ্গিস’-এর রূপকথার দৌড়ও থেমে গেল!

সপ্তদশী সুইস বেলিন্ডা বেনচিচকে অপ্রত্যাশিত উড়িয়ে দিয়ে চিনা মেয়ে পেং শুয়াই তাঁর ৩৭তম চেষ্টায় জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম সেমিফাইনালের মুখ দেখলেন। “অবশেষে সাঁইত্রিশ বারে! পথটা বেশ দীর্ঘই। কিন্তু আমার কোচ আর বাবা-মা বরাবর বলে এসেছেন, লেগে থাকো। এবং সেই লেগে থাকার রেজাল্টই এই দিনটা,” বলেছেন পেং।

এবং সেখানে পেং যাঁর সামনে, সেই ক্যারোলিন ওজনিয়াকি আবার তিন বছর পর গ্র্যান্ড স্ল্যাম সেমিফাইনালে উঠেছেন সারা ইরানিকে একই ভাবে গুঁড়িয়ে দিয়ে। ৬-০, ৬-১। বিখ্যাত গল্ফার রোরি ম্যাকিলরয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর নিজের পেশায় তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকের মতোই দুর্দান্ত ফর্মে ফেরা ওজনিয়াকির সামনে টেনিসজীবনের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে ওঠার হাতছানি। বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর ওজনিয়াকির শুধু গ্র্যান্ড স্ল্যাম অধরাই নয়, মাত্র এক বারই গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে উঠেছিলেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেটা ফ্লাশিং মেডোতেই পাঁচ বছর আগে। “নিউইয়র্কের গড়বড়ে আবহাওয়ার মতোই ম্যাচটাও আমার পক্ষে গোলমেলে ছিল। জিতলে তিন বছর পর গ্র্যান্ড স্ল্যাম সেমিফাইনালে উঠব। জীবনের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালের দোরগোড়ায় চলে যাব, ভেবেটেবে একটু নার্ভাসই ছিলাম। কিন্তু ম্যাচে ঝোড়ো হাওয়ার মতোই নিজের নার্ভকেও সামলেছি ভালই,” বলেছেন ওজনিয়াকি।

যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে ওজনিয়াকি।

মরসুমের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামে এহেন কৌতূহলোদ্দীপক রেজাল্টের পাশাপাশি এক ভারতীয়েরও ‘মর্দানি’ রয়েছে! তিনি সানিয়া মির্জা এ যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে লিয়েন্ডার-বোপান্নাদের ব্যর্থতার মধ্যেও গ্যালারিতে তেরঙা উড়িয়ে রেখেছেন মেয়েদের ডাবলসের পাশাপাশি মিক্সড ডাবলসেও সেমিফাইনালে উঠে। মিক্সডে শীর্ষ বাছাই ইন্দো-ব্রাজিলীয় জুটি সানিয়া-সোয়ারেজ শেষ চারে ওঠার পর গত রাতে ডাবলসে তৃতীয় বাছাই সানিয়া-কারা ব্ল্যাকের ইন্দো-জিম্বাবোয়ান জুটি কোয়ার্টার ফাইনালে জারিনা দিয়াস-ফান জু-র বিরুদ্ধে ৬-১, ১-০ এগিয়ে থাকার সময় প্রতিপক্ষ ওয়াকওভার দিয়ে কোর্ট ছাড়েন। সেমিফাইনালে সানিয়ারা খেলবেন বর্ষীয়ান সেলিব্রিটি জুটি ফ্লাভিয়া পেনেত্তা-মার্টিনা হিঙ্গিসের বিরুদ্ধে।

‘নতুন হিঙ্গিস’ যাঁকে এ বার ফ্লাশিং মেডোয় বলা হচ্ছিল, সেই টিনএজার বেলিন্ডা আগের দু’টো ম্যাচে বিশ্বের প্রথম দশে থাকা দুই মেগা প্রতিপক্ষ অ্যাঞ্জেলিক কের্বার আর জেলেনা ইয়াঙ্কোভিচকে হারিয়ে যতটা আলোড়ন ফেলেছিলেন, গত রাতে ততটাই অপ্রত্যাশিত ভাবে শেষ আটে হেরে গেলেন অবাছাই পেংয়ের কাছে ২-৬, ১-৬। তা হলেও জয়ী পেং নন, বিজিত বেলিন্ডা-ই বেশি আলোচনার বিষয়।

আশি লাখেরও কম জনসংখ্যার পাহাড়ি দেশ, যার শৃঙ্গগুলি বছরের বেশির ভাগ সময়ই বরফে ঢাকা থাকে, সেই সুইৎজারল্যান্ডের অন্য তাৎপর্য টেনিসে সুপার চ্যাম্পিয়ন বার করা। যার শুরু ২০ বছর আগে হিঙ্গিসকে দিয়ে হলেও তিনি আদতে স্লোভাকজাত। তার পর তো রজার ফেডেরার নামে একটা লোক বা হালে ওয়ারিঙ্কা আছেনই। সুইৎজারল্যান্ডেই জন্মানো আর বেড়ে ওঠা বেলিন্ডাকে তাতে নবতম সংযোজন ভাবছে টেনিসমহল। যার স্বপ্নের দৌড় শেষ আটে শেষ হয়ে গেলেও ততক্ষণেই ইতিহাস তৈরি হয়ে গিয়েছে! গত বছরও যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে জুনিয়র বিভাগে খেলা বেলিন্ডা গ্র্যান্ড স্ল্যামের ইতিহাসে দ্বিতীয় সপ্তদশী হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনাল খেললেন।

প্রথম জন? তিনি— লিয়েন্ডার পেজের ডাবলস পার্টনার রাদের স্টেপানেকের অল্প কয়েক দিনের স্ত্রী (বিয়ের পরপরই ডিভোর্স হয়ে যায়।) নিকোলে ভাইদিসোভা। যিনি একুশেই টেনিস থেকে অবসর নিয়ে ফেলেন ‘ব্যক্তিগত কারণে’। সেই ভাইদিসোভা সপ্তদশী হিসেবে ২০০৬ ফরাসি ওপেন শেষ আটে খেলেছিলেন।

মার্টিনা হিঙ্গিস আর ‘নতুন হিঙ্গিস’-এর দেশের প্রবাদপ্রতিম টেনিস তারকা ফেডেরার আবার তেত্রিশেও স্বচ্ছন্দে গ্র্যান্ড স্ল্যাম কোয়ার্টার ফাইনালে উঠছেন স্ট্রেট সেটে স্প্যানিশ তরুণ বাউতিস্কাকে হারিয়ে। ৬-৪, ৬-৩, ৬-২। কোয়ার্টার ফাইনাল নিয়ে ফেডেরারের ভবিষ্যদ্বাণী, “গত মাসে সিনসিনাটিতে মঁফিস তিনটে সেটেই কড়া লড়াই দিয়েছিল আমাকে। এখানেও মনে হচ্ছে আমি ওকে প্রচুর আক্রমণ করব আর ও সেগুলো সামলাবে, কিন্তু শেষমেশ কোথাও গিয়ে পারবে না!”

এবং ফ্লাশিং মেডোর তাৎপর্যপূর্ণ দিনের বোধহয় শেষ সংযোজন এক এশীয়। এশিয়ার এক নম্বর পুরুষ টেনিস তারকা নিশিকোরি। ৯২ বছর পর যিনি প্রথম জাপানি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে কোয়ার্টার ফাইনালে!

ছবি: এএফপি

us open sania tennis sania mirza sports news online sports news tennis court win mardani
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy