Advertisement
E-Paper

কলকাতা আমাকে কাজেই লাগাতে পারল না

আজ, মঙ্গলবার থেকে তিনি আর কলকাতার নন, মুম্বইয়ের বাসিন্দা। তার আগে সোমবার দুপুরে শহরের এক রেস্তোরাঁয় আনন্দবাজারের সঙ্গে আড্ডায় নিজের সুখ, দুঃখ, ক্ষোভ, ভাল-লাগা উগরে দিলেন সবুজ-মেরুন সমর্থকদের ‘সবুজ তোতা’ হোসে রামিরেজ ব্যারেটো।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৫ ০৩:০৫
গুডবাই কলকাতা। সোমবার সপরিবার নিজের ফ্ল্যাটে ব্যারেটো। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

গুডবাই কলকাতা। সোমবার সপরিবার নিজের ফ্ল্যাটে ব্যারেটো। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

আজ, মঙ্গলবার থেকে তিনি আর কলকাতার নন, মুম্বইয়ের বাসিন্দা। তার আগে সোমবার দুপুরে শহরের এক রেস্তোরাঁয় আনন্দবাজারের সঙ্গে আড্ডায় নিজের সুখ, দুঃখ, ক্ষোভ, ভাল-লাগা উগরে দিলেন সবুজ-মেরুন সমর্থকদের ‘সবুজ তোতা’ হোসে রামিরেজ ব্যারেটো।
প্রশ্ন: রেস্তোরাঁয় ঢুকে দেখলাম আপনি মন দিয়ে ট্রাম দেখছেন।
ব্যারেটো: মঙ্গলবার থেকে তো ট্রাম আর দেখতে পাব না!
প্র: কলকাতা ফিরবেন কবে?
ব্যারেটো: মুম্বইয়ে তিন বছরের চুক্তি। তার পর কলকাতায় আর নাও ফিরতে পারি। তাই মনটা খুব খারাপ।
প্র: হোসে রামিরেজ ব্যারেটো এই শহর ছাড়ছেন কেন?
ব্যারেটো: ছাড়ছে কারণ, কলকাতা আমাকে কাজে লাগাতে পারল না!
প্র: মানে?

ব্যারেটো: যে লোকটা গ্রেমিও অ্যাকাডেমিতে ছ’বছর ছিল, লুই ফেলিপে স্কোলারির থেকে একটু-আধটু ফুটবল শিখেছে, জে লিগ এবং মালয়েশিয়ায় খেলেছে, ভারতে বারো বছর প্রথম সারির ফুটবলার ছিল, কলকাতায় তার কাজ নেই! আমি তো আর কলেজে গিয়ে পড়াতে পারব না, বা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে সিইও হতে পারব না।

প্র: গত বছর তো আইএসএলে আপনাকে সহকারী কোচ করেছিল আটলেটিকো দে কলকাতা।

ব্যারেটো: যদি ভাল থাকার রসদ পেতাম তা হলে নিশ্চয়ই কলকাতা ছাড়তাম না। দুঃখ এটাই যে সে সময় সাংবাদিক বন্ধুরাও এগিয়ে আসেননি।

প্র: যেমন?

ব্যারেটো: মিডিয়াই লিখেছিল, আমি নাকি কোচ হাবাস আর ফুটবলারদের মধ্যে অনুবাদক। কেউ লিখেছেন আমি ‘কিট বয়’। আমার ভারতীয় ফুটবলার বাছা নিয়ে কত সমালোচনা! আচ্ছা অর্ণব, শুভাশিস, লোবো, বলজিৎ, রফিক, বিশ্বজিৎ সাহা, লেস্টাররা কোন দেশের ফুটবলার ব্রাদার? চ্যাম্পিয়ন কারা?

প্র: অস্বীকার করতে পারেন, টিমে এই কাজগুলি আপনি করতেন না?

ব্যারেটো: হ্যাঁ করেছি। তবে তার সঙ্গে মাদ্রিদ থেকে উড়ে এসে যুবভারতীর ঘাসের রিপোর্ট থেকে প্রতিপক্ষের উপর গোয়েন্দাগিরি করে কোচকে টেকনিক্যাল রিপোর্ট পাঠানো— এগুলোও কিন্তু রয়েছে। এ বছর হাবাস এলে জেনে নেবেন লুই গার্সিয়া চোট পাওয়ার পর হোসেমিকে অধিনায়ক করার প্ল্যানটা ওঁকে কে দিয়েছিল। এদেল বেটে, বলজিৎ, লোবোদের কে ড্রেসিংরুমে মোটিভেট করত? হোসে মোরিনহোর সঙ্গে সাত জন সহকারী কোচ থাকেন। ওঁরা কিন্তু এই কাজগুলোই করেন।

প্র: আপনি এত হাবাস, হাবাস করছেন। শোনা যায়, এই হাবাসই আপনাকে চাইতেন না।

ব্যারেটো: ফ্রেন্ড, তা হলে আমি আটলেটিকোয় নেই শুনে তিনি লম্বা অ্যাপ্রিসিয়েশন মেলটা পাঠাতেন কি? চাইলে দেখাতে পারি।

প্র: তা হলে আটলেটিকোয় এ বার জায়গা হল না কেন?

ব্যারেটো: প্লিজ বিতর্ক তৈরি করবেন না। অন্য প্রশ্ন করুন।

প্র: আপনার ক্লাব মোহনবাগানও আপনাকে ব্যবহার করল না?

ব্যারেটো: তা নয়, ওরা কিছু পরিকল্পনা করছিল। তার মাঝেই আইএসএল অ্যাকাডেমির কাজটা পেলাম। চিফ কোচ পিট হাবার্সকে কিন্তু আমি চিনতাম না। অয়েলিংও করিনি। তাই আপনাদের ‘কিট বয়’ চ্যালেঞ্জটা নিয়ে নিল।

প্র: ভবিষ্যতে আই লিগের কোনও টিমে কোচিং করাতে ইচ্ছে হয় না?

ব্যারেটো: নিশ্চয়ই হয়।

প্র: তিন বছর পর এই মিডিয়াই যদি বলে আপনি স্রেফ অ্যাকাডেমির কোচ, তখন?

ব্যারেটো: অন্তত কোচ তো বলবে। আর একটা খবর দিই, ব্রাজিলে গিয়ে ফেডারেশনের কোচিং লাইসেন্সও কিন্তু করেছি আমি। যেটা ভারতে ‘বি’ লাইসেন্সের মতোই। পরের বার ফিরলে পুরোদস্তুর কোচ হয়েই ফিরব।

প্র: মোহনবাগান সমর্থকদের মিস করবেন না?

ব্যারেটো: ওরা তো আমার হৃদয়। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের কথাও ভুলব না। কত বার আমার গোলে ওরা মন খারাপ করে বাড়ি ফিরেছে। কিন্তু ওদের ক্লাবে দু’একবার গিয়ে যে শুভেচ্ছা-ভালবাসা পেয়েছি, সেটাও কম নয়।

প্র: যদি কোনও দিন ইস্টবেঙ্গল কোচিং করাতে ডাকে?

ব্যারেটো: তখন প্রফেশনালি ভেবে দেখব...।

debanjan bandyopadhyay jose ramirez baretto baretto sorrow baretto sentimental baretto injustice baretto the mohunbagan boy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy