Advertisement
E-Paper

কলঙ্কের মুকুট পরেও ফিফার তাজ ব্লাটারেরই

সেপ ব্লাটারকে কলঙ্কিত করা গেল। কিন্তু ধ্বংস করা গেল না! ফিফার শীর্ষকর্তারা গ্রেফতার। উয়েফা প্রেসিডেন্ট মিশেল প্লাতিনির তীব্র তর্জন-গর্জন। বিশ্বের বিভিন্ন ফুটবল সংস্থার ফিফা প্রেসিডেন্টকে নিয়ে পরের পর বিষোদগার। কিন্তু পৃথিবীর ফুটবল-প্রশাসনের বৃহত্তম বিতর্কের পরেও ব্লাটারকে হারানো আর গেল কোথায়? তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জর্ডনের প্রিন্স আলি বিন আল হুসেন তো স্রেফ খড়কুটোর মতো উড়ে গেলেন। টানা পাঁচ বার প্রেসিডেন্ট হয়ে থেকে গেলেন ফিফা মসনদে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৫ ০৩:১৯
শেষমেশ অভিনন্দনের হাত। নির্বাচন শেষে ব্লাটার-প্লাতিনি।

শেষমেশ অভিনন্দনের হাত। নির্বাচন শেষে ব্লাটার-প্লাতিনি।

সেপ ব্লাটারকে কলঙ্কিত করা গেল। কিন্তু ধ্বংস করা গেল না!

ফিফার শীর্ষকর্তারা গ্রেফতার। উয়েফা প্রেসিডেন্ট মিশেল প্লাতিনির তীব্র তর্জন-গর্জন। বিশ্বের বিভিন্ন ফুটবল সংস্থার ফিফা প্রেসিডেন্টকে নিয়ে পরের পর বিষোদগার। কিন্তু পৃথিবীর ফুটবল-প্রশাসনের বৃহত্তম বিতর্কের পরেও ব্লাটারকে হারানো আর গেল কোথায়? তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জর্ডনের প্রিন্স আলি বিন আল হুসেন তো স্রেফ খড়কুটোর মতো উড়ে গেলেন। টানা পাঁচ বার প্রেসিডেন্ট হয়ে থেকে গেলেন ফিফা মসনদে।

আর প্রিন্স আলি উড়ে গেলেন না। প্রথম রাউন্ডের রেজাল্ট দেখার পর স্রেফ পালিয়ে গেলেন! প্রথম রাউন্ডে় ভোটব্যাঙ্ক ব্লাটারের দিকে ১৩৩-৭৩ চলে যেতে দেখে প্রিন্স আলি বুঝতে পেরে যান দ্বিতীয় রাউন্ডের ফলাফলও তাঁর দিকে যাবে না। তাই আগেই পরাজয় স্বীকার করে বেরিয়ে যান।

নির্বাচন জয়ের পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রবল উচ্ছ্বসিত দেখিয়েছে ব্লাটারকে। কখনও ‘‘গো ফিফা গো’’ বলে আওয়াজ তুলেছেন। কখনও বলে ফেলেছেন, ‘‘আমার উপর ভরসা রাখার জন্য ধন্যবাদ। ফিফাকে পরিষ্কার করব। আর এটাই আমার শেষ চারটে বছর। তার পর আমি নিজেই সরে যাচ্ছি।’’

মুশকিল হল, ব্লাটার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা জিতলেন ঠিকই, কিন্তু আসল শত্রুকে হারাতে পারলেন কি না, তার উত্তর ভোটব্যাঙ্ক দিতে পারল না। সেই প্রবল প্রতিদ্বন্দীর নাম মোটেও প্রিন্স আলি নন, মিশেল প্লাতিনি। উয়েফা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফিফা প্রেসিডেন্টের যুদ্ধের ফল এখনও কিন্তু অমীমাংসিত।

প্লাতিনি তো বলেছিলেন ব্লাটার ফিরে এলে রাশিয়া বিশ্বকাপে ইউরোপকে অংশগ্রহণ করতে না-ও দেখা যেতে পারে!

যে আগুনে ঘৃতাহুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এফএ চেয়ারম্যান গ্রেগ ডাইক বলে দিয়েছেন, ‘‘প্লাতিনির পাশে আমার আছি। শুধু দু’টো দেশ নাম তুললে হবে না। সবাইকেই এই আন্দোলনের পিছনে থাকতে হবে।’’ প্রিন্স আলি হেরে গেলেও ব্লাটার-বিদ্বেষ নিয়ে ইউরোপ যে প্রবল এককাট্টা, সেটার ইঙ্গিত কিন্তু দিয়ে গেল ফিফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। শোনা যাচ্ছে, ইউরোপ থেকে মাত্র দু’টো ভোট গিয়েছে ব্লাটারের দিকে। রাশিয়া আর স্পেন। বাকিদের? বলা বাহুল্য।

ভোটের আগে আবার বোমাতঙ্কে কেঁপে গেল ফিফা। জুরিখে শুক্রবার ফিফা কংগ্রেসে তখন লাঞ্চ-ব্রেক চলছিল। বিরতিতে হঠাত্ করেই হুমকি আসে, কংগ্রেসের হলে নাকি বোমা রাখা আছে। প্রথমে গুজব বলে উড়িয়ে দেয় ফিফা। কিন্তু পরে সুইস পুলিশ তদন্তে নামে। উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রায় ৭৫ মিনিট কংগ্রেস হলের বাইরে দাঁড় করানো হয়। পুলিশের লোকেরা তল্লাশি চালায়। জুরিখ পুলিশ সরকারি ভাবে বিবৃতিতেও বলে, ‘‘ফিফা কংগ্রেসের ঘরটায় তল্লাশি চালানো হয়। যারা এই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ তাদের আনা হয়েছে। যদিও কাউকেই বিল্ডিং ছেড়ে বেরোতে হয়নি।’’

ভোটের বাজারে ব্লাটার অন্য একটা বোমা ছাড়লেন। ইংল্যান্ড আর যুক্তরাষ্ট্রকে যৌথ আক্রমণ করতে দেখে ফিফা প্রেসিডেন্ট শুরু করেছেন যে, এটা পুরোটাই করা হচ্ছে নির্দিষ্ট একটা অভিসন্ধি রেখে। যেহেতু ইংল্যান্ডকে ২০১৮ বিশ্বকাপ পায়নি, আর যুক্তরাষ্ট্রকে ২০২২ দেওয়া হয়নি, তারই বহিঃপ্রকাশ এটা। ‘‘সবার সামনেই জুরিখে বসে পরের দুই বিশ্বকাপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তা হলে কেন প্রশ্ন তুলছে ২০১৮ আর ২০২২ বিশ্বকাপ নিয়ে।’’ এখানেই থামেননি ব্লাটার। সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘যদি খামের থেকে ইংল্যান্ড আর যুক্তরাষ্ট্রর নাম উঠত তা হলে এত আঙুল উঠত না। বিপ্লব করে কী হবে? ফিফাকে বদলানো দরকার।’’ বোঝা গেল। কিন্তু তার চেয়েও বোধহয় বেশি দরকার কাপ-ঐশ্বর্যকে বাঁচানো।

প্লাতিনি রাগ ধরে রাখলে কী হবে কে জানে।

ছবি: এএফপি।

Sepp Blatter Ali Bin al-Hussein FIFA votes football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy