Advertisement
E-Paper

পেপ বনাম ক্লপের লড়াইয়ে চোটে নেই আগুয়েরো

লিয়োনেল মেসিদের প্রাক্তন গুরু পেপ গুয়ার্দিওলার বিরুদ্ধে দারুণ রেকর্ড ক্লপের। ১২ ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে ম্যানেজার হিসেবে ছ’টি লড়াই গুয়ার্দিওলার বিরুদ্ধে জিতেছেন তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৩৮
লড়াই: চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মুখোমুখি দুই সেরা ম্যানেজার। ফাইল চিত্র

লড়াই: চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মুখোমুখি দুই সেরা ম্যানেজার। ফাইল চিত্র

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি লিভারপুল এবং ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। যা শুধুই আর একটি ম্যাচ নয়। ইউরোপের সেরা দুই দলের মুখোমুখি সাক্ষাতে উঠে আসবে অনেক ইতিহাস, নানা নাটকীয় মুহূর্ত। দু’দলের ফুটবলারদের মধ্যে লড়াই ছাড়াও অ্যানফিল্ডে বুধবার রাতে ঠোকাঠুকি হবে ফুটবলের অন্যতম দুই সেরা ম্যানেজারের। লিভারপুলের য়ুর্গেন ক্লপ এবং ম্যাঞ্চেস্টার সিটির পেপ গুয়ার্দিওলার মধ্যে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দুই মহাশক্তির মহারণ ঘিরে মুখ্য আকর্ষণ কী কী, খুঁজে দেখল আনন্দবাজার।

• ক্লপ বনাম গুয়ার্দিওলা

লিয়োনেল মেসিদের প্রাক্তন গুরু পেপ গুয়ার্দিওলার বিরুদ্ধে দারুণ রেকর্ড ক্লপের। ১২ ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে ম্যানেজার হিসেবে ছ’টি লড়াই গুয়ার্দিওলার বিরুদ্ধে জিতেছেন তিনি। বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে ক্লপের সঙ্গে টক্কর হতো বায়ার্ন মিউনিখের গুয়ার্দিওলার। আবার এখন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে দ্বৈরথ হচ্ছে। ক্লপ লিভালপুলের ম্যানেজার। গুয়ার্দিওলা পাল্টে দিয়েছেন ম্যান সিটির চেহারা। এ বছরে দু’জনেই সাফল্য পেয়েছেন। ঘরের মাঠে গুয়ার্দিওলার সিটি ৫-০ হারিয়েছে লিভারপুলকে। আবার লিভারপুল তাদের ঘরের মাঠে ৪-৩ হারিয়েছে ম্যান সিটি-কে। দুই ম্যানেজারই আক্রমণ করতে ভালবাসেন বলে তাঁদের দুই ক্লাবের দ্বৈরথে দর্শনীয় ফুটবল দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। ইংল্যান্ডের দুই সেরা ক্লাবের দ্বৈরথ হলেও দুই সেরা ম্যানেজারের মুখোমুখি সাক্ষাতে সুন্দর ফুটবলের অপেক্ষায় বিশ্ব। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, সেমিফাইনালে যাওয়ার চিন্তা মাথায় থাকলেও ক্লব বা গুয়ার্দিওলা কেউ তাঁদের আক্রমণাত্মক ফুটবলের দর্শন থেকে পিছিয়ে আসবেন না। দু’জনেই যে এগিয়ে যাওয়ায় বিশ্বাস করেন। গতির ফুটবলে বিশ্বাস করেন। গুয়ার্দিওলা সেই স্প্যানিশ ফুটবলের দিন থেকে পজেশনের উপর বেশি জোর দিয়ে আসছেন। বার্সেলোনায় মেসিদের কোচ থাকাকালীন পায়ে বল রেখে খেলার যে নীতি শিখিয়েছিলেন, সেটাই এখন করার চেষ্টা করছেন সিটি-তে। তাঁর মন্ত্রে দুরন্ত ফুটবল উপহার দিয়েছেন রাহিম স্টার্লিং, কেভিন দ্য ব্রুইন-রা। বুধবারেও তার তারতম্য হবে বলে মনে হয় না।

• আক্রমণ বনাম আক্রমণ

ক্লপ এবং গুয়ার্দিওলার রণনীতি আবর্তিত হবে তাঁদের দুর্ধর্ষ আক্রমণ ভাগকে কেন্দ্র করে। দু’টো দলেরই এমন আক্রমণ ভাগ রয়েছে, যারা বিশ্বের যে কোনও দলকে হারিয়ে দিতে পারে। গোল করায় দারুণ দক্ষ দুই দলের আক্রমণ ভাগ। প্রিমিয়ার লিগে এই দু’টি দলই গোল করায় সব চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। ম্যাঞ্চেস্টার সিটি করেছে সব চেয়ে বেশি গোল, ৮৮টি। লিভারপুল তার পরেই, তারা করেছে ৭৫টি গোল। ক্লপের রয়েছে ত্রিমুখী আক্রমণ— রবের্তো ফিরমিনো, সাদিও মানে এবং মহম্মদ সালাহ্। সমস্ত প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১১৯ ম্যাচে এই ত্রয়ী করেছেন ৭৫ গোল। এর মধ্যে মিশরের সালাহ্ ৪২ ম্যাচে করেছেন ৩৭ গোল।

ম্যাঞ্চেস্টার সিটি অবশ্য ম্যাচের আগেই ধাক্কা খেল। এই ম্যাচেও হাঁটুর চোটে নামতে পারবেন না সের্জিও আগুয়েরো। এ ছাড়া তাদের আক্রমণ ভাগে আছেন রাহিম স্টার্লিং, লেরয় সানে এবং গ্যাব্রিয়েল জেসুস। ১৪৯ ম্যাচে ম্যান সিটির আক্রমণ বিভাগ করেছে ৭৬ গোল। গুয়ার্দিওলার পজেশন ফুটবলকে উত্তর দেওয়ার জন্য ক্লপ ‘প্রেসিং ফুটবল’-এর আশ্রয় নিয়েছিলেন ইপিএলে। তাতে ফলও পেয়েছিলেন। অ্যানফিল্ডে নয় মিনিটের মধ্যে মানে, ফিরমিনো এবং সালাহ্ তিনটি গোল করে তছনছ করে দিয়েছিল ম্যান সিটি-কে। পরে অবশ্য গুয়ার্দিওলার দল দারুণ ভাবে ম্যাচে ফিরে এসেছিল। অনেকের মনে হচ্ছে, সিটি-র রক্ষণকে ভাঙার জন্য ক্লব বুধবার রাতেও ফের ঝোড়ো আক্রমণ তুলতে চাইবেন প্রথম থেকে। বিশেষ করে মহম্মদ সালাহ্ এবং রবের্তো ফিরমিনো-কে শান্ত রাখার কৌশল বের করতেই হবে গুয়ার্দিওলা-কে।

যদিও অনেকের মত হচ্ছে, সিটি যে রকম আক্রমণাত্মক এবং দর্শনীয় ফুটবল খেলছে এই মরসুমে, তাতে গুয়ার্দিওলার চেয়ে ক্লপের কাজ অনেক বেশি কঠিন হবে। তাঁকে শান্ত রাখতে হবে সিটি-র আক্রমণ ভাগের সঙ্গে মাঝমাঠকেও। কেভিল দ্য ব্রুইন-কে এমন সুন্দর ভাবে তৈরি করে দিয়েছেন গুয়ার্দিওলা যে, তাঁকে থামাতেই পারছে না কেউ। দুর্দান্ত সব পাস খেলে প্রতিপক্ষকে তছনছ করে দিচ্ছেন দ্য ব্রুইন। তাঁর সঙ্গে মাঝমাঠে রয়েছেন দাভিদ সিলভা। উপরে যে কোনও দলকে আতঙ্কিত করার মতো চার জন— আগুয়েরো, সানে, স্টার্লিং এবং জেসুস। এই মুহূর্তে এত ভাল ভারসাম্য ইপিএলের কোনও দলের নেই। লিভারপুল নিশ্চয়ই অ্যানফিল্ডের সেই ম্যাচ থেকে প্রেরণা নিতে চাইবে। নিশ্চয়ই সেই ম্যাচের কথা টেনে ক্লপ বোঝাতে চাইবেন যে, ম্যান সিটি-কে থামানো সম্ভব। কিন্তু সত্যিই কি সম্ভব? বুধবার রাতে অ্যানফিল্ডই বলে দেবে।

Pep Guardiola Jürgen Klopp Football Sergio Agüero Liverpool vs Manchester City UEFA Champions League
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy