Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

সেঞ্চুরিয়নের সেই ম্যাচ নিয়ে ওয়াকারকে তোপ শোয়েবের

শোয়েবের সেই ম্যাচের স্মৃতি অবশ্যই সুখের নয়, খুবই দুঃখের। ইউটিউবে একটি ভিডিয়ো তুলে দিয়ে রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস জানিয়েছেন, তিনি সেই ম্যাচে পুরোপুরি ফিট ছিলেন না।

স্মৃতি: সেঞ্চুরিয়নে শোয়েবকে তুলোধনা করেই ম্যাচ জিতিয়েছিলেন সচিন।

স্মৃতি: সেঞ্চুরিয়নে শোয়েবকে তুলোধনা করেই ম্যাচ জিতিয়েছিলেন সচিন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৫৯
Share: Save:

দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়নে ২০০৩ বিশ্বকাপের সেই স্মরণীয় ম্যাচ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সচিন তেন্ডুলকরের মহাকাব্যিক ৯৮ দুর্দান্ত জয় উপহার দিয়েছিল ভারতীয় সমর্থকদের। সেই ম্যাচে সচিন যাঁকে পিটিয়েছিলেন, সেই শোয়েব আখতার এত দিন পরে মুখ খুলেছেন সেঞ্চুরিয়নের মহারণ নিয়ে।

শোয়েবের সেই ম্যাচের স্মৃতি অবশ্যই সুখের নয়, খুবই দুঃখের। ইউটিউবে একটি ভিডিয়ো তুলে দিয়ে রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস জানিয়েছেন, তিনি সেই ম্যাচে পুরোপুরি ফিট ছিলেন না। আগের রাতেই নাকি তাঁকে হাঁটুতে চার-পাঁচটি ইঞ্জেকশন নিতে হয়েছিল। সেই কারণে হাঁটু অসাড় হয়ে গিয়েছিল। শোয়েবের কথায়, ‘‘ইঞ্জেকশন নেওয়ার কারণে আমার বাঁ হাঁটুতে জল জমে গিয়েছিল। হাঁটু অসাড় হয়ে পড়েছিল। তবে মনে আছে, আমাদের ইনিংস শেষে সতীর্থদের বলেছিলাম, ২৭৩ রানটা যথেষ্ট হয়নি। আমার মনে হচ্ছে, ৩০-৪০ রান কম করেছি আমরা।’’ শোয়েবের বয়ান অনুযায়ী, সতীর্থরা তাঁর কথা মানতে চাননি। ‘‘সতীর্থরা আমাকে বলল, এই স্কোরের মধ্যেই ভারতকে শেষ করে দিতে পারব। আমার উপর চিৎকার করে বলল, ২৭৩ রানও যদি যথেষ্ট না হয়, তা হলে কোনটা যথেষ্ট? আর কত রান দরকার হবে তোর?’’ ফাঁস করেছেন শোয়েব। একই সঙ্গে যোগ করছেন, ‘‘কিন্তু আমি জানতাম, সে দিন সেঞ্চুরিয়নে খুব ভাল ব্যাটিং পিচ ছিল। আমি জানতাম, দ্বিতীয়ার্ধেও ভাল ব্যাট করা যাবে ওই পিচে।’’

তখনকার পাক অধিনায়ক ওয়াকার ইউনিসকেও এক হাত নিয়েছেন শোয়েব। তাঁকে আক্রমণ করে বলেছেন, ওয়াকারের খারাপ অধিনায়কত্বও তাঁদের হারের কারণ। ‘‘আমরা যখন বোলিং শুরু করলাম, প্রথমেই খেয়াল করি, বাঁ হাঁটু অচল হয়ে গিয়েছে। সেই কারণে ভাল করে দৌড়তেও পারছিলাম না,’’ বলে চলেন শোয়েব, ‘‘ভারতের দুই ওপেনার সচিন তেন্ডুলকর এবং বীরেন্দ্র সহবাগ শুরু থেকেই ঝড় তুলেছিল। সচিন আমাকে দারুণ খেলছিল এবং পয়েন্টের উপর দিয়ে দুর্ধর্ষ একটা ছয়ও মারে।’’ এর পরেই অধিনায়ক ওয়াকারকে নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কী ভাবে উইকেট আসবে, কিছু বুঝেই উঠতে পারছিলাম না। এর মধ্যেই অধিনায়ক ওয়াকার ইউনিস আমাকে আক্রমণ থেকে তুলে নিল। পরের দিকে আমাকে আবার বোলিং দিল এবং তখন আমিই সচিনের উইকেট তুলি। অধিনায়ককে আমি বলেছিলাম, আমাকে বোলিং করিয়ে যাওয়া উচিত ছিল তোমার।’’

সেই ম্যাচে শোয়েবকে তুলোধনা করেই ম্যাচ জিতিয়েছিলেন সচিন। ৭২ রান দিয়েছিলেন শোয়েব। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে এসে খাটো লেংথের বলে সচিনকে ফেরালেও তত ক্ষণে মাস্টার ব্লাস্টার তাঁর ঝোড়ো ইনিংসে অনেকটাই নিশ্চিত করে দিয়েছেন ভারতের জয়। শোয়েব এখনও হারের ধাক্কায় কাতর। বলছেন, ‘‘১৯৯৯ আর ২০০৩, দু’বারই বিশ্বকাপে আমরা ভারতকে হারাতে পারতাম। কিন্তু আমরা পারিনি। তবে ভারতের কৃতিত্ব কম করে দেখার কোনও চেষ্টাই আমি করছি না। ওরা বিশ্বকাপে বরাবরই আমাদের সঙ্গে দারুণ খেলেছে।’’ কিন্তু সেঞ্চুরিয়নের সেই হার যে এখনও তাঁকে খোঁচা দেয়, তা গোপন করছেন না পাকিস্তানের দ্রুততম বোলার। বলেছেন, ‘‘এখনও আমি মনে করি, সে দিন যদি আর কিছু রান বেশি করতাম এবং আর একটু ভাল বোলিং করতে পারতাম, তা হলে খেলার ফল অন্য রকম হতে পারত।’’ ওয়াকারকে ফের খোঁচা দিয়ে মন্তব্য, ‘‘খারাপ অধিনায়কত্বও আমাদের হারিয়ে দিল।’’ এত দিন পরে সচিনের হাতে সেঞ্চুরিয়নে ধোলাই খাওয়া শোয়েবের ‘হাঁটু-ব্যথা কাহিনি’ ভারতীয় ক্রিকেট জনতার কাছে খুব গ্রহণযোগ্য হবে বলে মনে হয় না। ক্রিকেট দুনিয়াও ম্যাচটিকে মনে রেখেছে সচিনের দুরন্ত ইনিংসের জন্য। যেটাকে ওয়ান ডে ক্রিকেটের সর্বকালের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ইনিংসও বলা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shoaib Akhtar Cricket Cricketer Waqar Younis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE