Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
পরিচিতি: অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপে ভারতের প্রধান স্ট্রাইকার

কাগজের বল দিয়ে খেলে জাতীয় দলে নায়ক কোমল

নামচি স্পোর্টস হস্টেল থেকেই উঠে এসেছেন সঞ্জু প্রধান, নির্মল ছেত্রীর মতো ভারতীয় ফুটবলের তারকা। তাঁদের পথ অনুসরণ করছে কোমল। নামচি স্পোর্টস হস্টেলের ট্রায়ালে নেমেই নির্বাচকদের চমকে দিয়েছিল কোমল।

বিশ্বকাপের আকর্ষণ কোমল থাটাল। ফাইল চিত্র

বিশ্বকাপের আকর্ষণ কোমল থাটাল। ফাইল চিত্র

শুভজিৎ মজুমদার
শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:২২
Share: Save:

পশ্চিম সিকিমের প্রত্যন্ত গ্রামে দর্জির কাজ করে সংসার চালান অরুণ ও সুমিত্রা থাটাল। ছেলে কোমলকে ফুটবল কিনে দেওয়ার সামর্থও ছিল না তাঁদের। পুরনো কাগজ দিয়েই বল বানিয়ে দিতেন। সেই কোমল-ই এখন অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় দলের প্রধান স্ট্রাইকার। এক মাত্র ভারতীয় যার ব্রাজিলের বিরুদ্ধে গোল রয়েছে।

অধিনায়ক কিয়াম অমরজিৎ সিংহ-এর মতো কোমলেরও ফুটবলার হয়ে ওঠার নেপথ্যে গ্রামের এক দাদা। অমরজিৎ মণিপুর ছেড়ে চলে গিয়েছিল চণ্ডীগড় অ্যাকাডেমিতে। কোমলকেও গ্রামের সেই দাদা মাত্র আট বছর বয়সে ভর্তি করে দেন নামচি স্পোর্টস হোস্টেলে।

অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের প্রধান স্ট্রাইকারের কথায়, ‘‘খুব ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতাম ফুটবলার হওয়ার। আমাদের বাড়ির আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভাল ছিল না। সংসার চালানোর জন্য সারা দিন পরিশ্রম করতেন বাবা, মা। খেলার জন্য ফুটবল কিনে দিতে না পারলেও সব সময়ই উৎসাহ দিতেন। তাই যখন গ্রামের দাদা আমাকে নামচি স্পোর্টস হস্টেলের ট্রায়ালে নামানোর উদ্যোগ নিলেন, কেউ আপত্তি করেননি!’’

নামচি স্পোর্টস হস্টেল থেকেই উঠে এসেছেন সঞ্জু প্রধান, নির্মল ছেত্রীর মতো ভারতীয় ফুটবলের তারকা। তাঁদের পথ অনুসরণ করছে কোমল। নামচি স্পোর্টস হস্টেলের ট্রায়ালে নেমেই নির্বাচকদের চমকে দিয়েছিল কোমল। বছর দু’য়েকের মধ্যেই সিকিম জুনিয়র দলের প্রধান স্ট্রাইকার হয়ে ওঠে কোমল। বছর দু’য়েক আগে কল্যাণীতে অনূর্ধ্ব-১৭ ভারতীয় দলের ট্রায়ালেও নজর কাড়ে কোমল। তাকে ছাড়া তো এখন প্রথম দল নামানোর কথা ভাবতেই পারেন না ভারতীয় দলের কোচ
লুইস নর্টন দে মাতোস।

পশ্চিম সিকিমের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে নাটকীয় উত্থান। গত দু’বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খেলার অভিজ্ঞতা। ইতিমধ্যেই ভারতীয় ফুটবলে তারকা হয়ে ওঠা। কতটা বদলে গিয়েছে জীবন? কোমলের কথায়, ‘‘ভারতীয় দলে নির্বাচিত হওয়ার খবরটা শুনেই বাবাকে ফোন করেছিলাম। প্রচণ্ড উত্তেজিত ছিলাম। বাবা বললেন, তুমি ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ায় আমি গর্বিত। কিন্তু তোমার মধ্যে যেন কোনও অহংবোধ না আসে। অন্যকে শ্রদ্ধা করবে। সব সময় শেখার চেষ্টা করবে। না হলে কিন্তু হারিয়ে যাবে।’’ ফিলিপে কুটিনহো ও ইউজেনসন লিংডো-র ভক্ত কোমলের মতে বাবার পরামর্শই তার জীবন বদলে দিয়েছে। বলল, ‘‘বাবার মতো মাতোস স্যারও একই কথা বলেন।’’

জাতীয় কোচের পরামর্শেই আলাদা ভাবে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে কোমল। কী ভাবে? ভারতীয় দলের স্ট্রাইকারের কথায়, ‘‘আমাদের গ্রুপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট, ঘানা ও কলম্বিয়া আছে। ওদের খেলার রেকর্ডিং জোগার করেছি। ওদের ডিফেন্ডারদের খেলার ধরন, কী কী ভুল ওরা করেছে আগের ম্যাচগুলোয়, সব ডায়েরিতে নোট করে রাখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE