বীরেন রায় রোডের বাড়ির গেট দিয়ে তাঁর গাড়ি ঢোকার সময় ভক্তদের ভিড় যখন প্রায় ঘিরে ধরল তাঁকে, তখন সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে সাতটা। অনেকে গেট দিয়ে ঢুকে প্রিয় ‘দাদা’-কে উপহারে ভরিয়ে দিলেন। অনেককে গেটের বাইরে দাঁড়িয়েই থাকতে হল হাতে উপহার নিয়ে। ভিতরে যাওয়ার আবদার করতে থাকলেন তাঁরা। এর পরে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের প্রশ্নের উত্তর ও একাধিক কেক কাটার ছবির পোজ দেওয়া।
ইংল্যান্ড থেকে ফিরে জন্মদিনের সন্ধ্যায় বাড়িতে পা রেখে মা-কে প্রণাম করার আগে বা স্ত্রী ডোনা ও মেয়ে সানাকে জড়িয়ে ধরার আগে এতগুলো ‘হার্ডল’ পেরোতেই সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হওয়ার উপক্রম। তবু বিরক্তি নেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের চোখেমুখে। ৪৫-এ পা দেওয়ার দিন বিলেত থেকে শহরে ফেরার যাত্রার ধকল সত্ত্বেও দিব্যি হাসিমুখে সামলে নিলেন এ সব। আপ্লুত ‘বার্থ ডে বয়’ বাড়ি ফিরে বললেন, ‘‘কত লোক আমাকে ভালবাসেন, তা এই দিনেই টের পাই। আজ দিল্লি বিমানবন্দরেও অনেকে আমাকে অভিনন্দন জানান। সত্যিই খুব ভাল লাগে।’’
আরও পড়ুন: পুত্রের ইয়র্কার, বাবার বাউন্সার
এমন দিনেই তো মনে পড়ে পিছনে ফেলে আসা নানা জন্মদিনের কথা। বললেন, ‘‘২০০২-এ সেই ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির সময় আমার জন্মদিন ছিল। দলের সবাই সেলিব্রেট করেছিল। সেটা যেমন মনে আছে। তেমনই বাবা বেঁচে থাকতে যখন জন্মদিন পালন করতেন, তখনকার কথাও খুব মনে পড়ে।’’ লর্ডসের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে জামা ওড়ানোর সেই ন্যাটওয়েস্ট ফাইনাল স্বাভাবিক ভাবেই আলাদা জায়গা নিয়ে আছে সৌরভের স্মৃতিতে।
তবে জীবনের হাফ সেঞ্চুরি থেকে পাঁচ ধাপ দূরে থাকা প্রাক্তন অধিনায়কের এখন আর জন্মদিন পালন নিয়ে তেমন উৎসাহ নেই। বললেন, ‘‘কী আবার জন্মদিন? এই তো সন্ধেবেলা বাড়িতে ফিরে সকলের সঙ্গে সময় কাটাব, এ ভাবেই জন্মদিন পালন হবে।’’ আর ডিনারে বিশেষ মেনু? ‘‘কী আর হবে? আজ তো আবার পূর্ণিমা, বাড়িতে নিরামিশ’’, বলেই হেসে ফেললেন সৌরভ। তবে তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ সানার দেওয়া উপহারটা রাতে খুলে দেখবেন বলে জানালেন। সারা দিন ধরে অজস্র অভিনন্দন পেয়েছেন। যেমন শুভেচ্ছা পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তেমনই তাঁর প্রাক্তনদের বার্তাও পেয়েছেন। অনেককে জবাবও দিয়েছেন তাঁদের প্রিয় ‘দাদি’। সচিন তেন্ডুলকরকে যেমন লিখেছেন, ‘‘থ্যাঙ্ক ইউ চ্যাম্পিয়ন’’। যুবরাজ সিংহকে বলেছেন, ‘‘থ্যাঙ্ক ইউ রকস্টার।’’ সহবাগকে বলেছেন, ‘‘তোমার মতো যদি খেলতে পারতাম, বীরু।’’
এমসিসি-র বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছিলেন লন্ডনে। সেখান থেকে ডেনমার্ক। কিন্তু বোর্ডের বিশেষ কমিটির বৈঠকে এ দিন থাকা হয়নি সৌরভের। তবে সোমবার থাকবেন কোচ বাছাই কমিটির ইন্টারভিউ পর্বে। বললেন, ‘‘কেউ এগিয়ে-পিছিয়ে আছে কি না জানি না। তবে কোচেদের ইন্টারভিউ হবে সম্পুর্ণ স্বচ্ছ্ব ভাবে।’’
ওয়েস্ট ইন্ডিজে ঋষভ পন্থকে না খেলানোর সিদ্ধান্ত যে পছন্দ হয়নি, তা জানিয়ে দিলেন সৌরভ। ‘‘ওকে ওখানে খেলানো উচিত ছিল’’, বলে দিলেন তিনি। মন পড়ে ফুটবলেও। দেশে দুটো লিগ হবে শুনে বললেন, ‘‘দুই প্রধানের আইএসএলে খেলা উচিত। আশা করি ওরা অদূর ভবিষ্যতে আইএসএলে খেলবে। তবে ভারতীয় ফুটবলের যা ফরম্যাট, তাতে দু’টো লিগই এখন গুরুত্বপূর্ণ।’’