Advertisement
E-Paper

কনুইয়ের গুঁতোতেও অদম্য র‌্যান্টি

হেক্সা লিগ জেতার পরে স্যামি ওমোলো একটা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন— র‌্যান্টি মার্টিন্সই ইস্টবেঙ্গলকে আই লিগ দিতে পারে। বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের সহকারীর দুরদর্শিতা নিয়ে সে সময় যাঁরা যাঁরা গভীর সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন, তাঁরা বোধহয় রবিবারের পরে কিছুটা নিশ্চিন্ত হতে পারেন! গোয়ার মাঠে লাল-হলুদের উদ্বোধনী আই লিগের ম্যাচে র‌্যান্টি যে জোড়া গোল করলেন, একটা গোল করালেন এবং ম্যাচের সেরা হলেন— সেটা তো টিভির পর্দাতেই ভেসে উঠল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:৩১
জোড়া গোল করে নায়ক ফের র‌্যান্টি।

জোড়া গোল করে নায়ক ফের র‌্যান্টি।

স্পোর্টিং ক্লুব- ১(ওডাফা) : ইস্টবেঙ্গল- ৩(র‌্যান্টি-২, বিকাশ)

হেক্সা লিগ জেতার পরে স্যামি ওমোলো একটা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন— র‌্যান্টি মার্টিন্সই ইস্টবেঙ্গলকে আই লিগ দিতে পারে। বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের সহকারীর দুরদর্শিতা নিয়ে সে সময় যাঁরা যাঁরা গভীর সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন, তাঁরা বোধহয় রবিবারের পরে কিছুটা নিশ্চিন্ত হতে পারেন!
গোয়ার মাঠে লাল-হলুদের উদ্বোধনী আই লিগের ম্যাচে র‌্যান্টি যে জোড়া গোল করলেন, একটা গোল করালেন এবং ম্যাচের সেরা হলেন— সেটা তো টিভির পর্দাতেই ভেসে উঠল। পর্দার আড়ালে যেটা ঢাকা পড়ে গেল, সেটা র‌্যান্টির দায়বদ্ধতা। বিরতির পরে গলায় চোট নিয়ে জোড়া গোলের দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন নাইজিরিয়ান গোলমেশিন।
বিরতির পর স্পোর্টিং ডিফেন্ডারের কনুইয়ের গুঁতোয় গলায় চোট লাগে র‌্যান্টির। এমনকী চোটটা এত জোরে লাগে যে, কথা বলতেও বেশ সমস্যা হচ্ছিল। বিশ্বজিৎ তখনই র‌্যান্টিকে তুলে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু র‌্যান্টি ওঠেননি। বরং প্রবল যন্ত্রণা সহ্য করে পিছিয়ে থাকা লাল-হলুদের (তখন ০-১) জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। ম্যাচ শেষে গোয়া থেকে ফোনে বিশ্বজিৎ বলছিলেন, ‘‘র‌্যান্টিকে আদর্শ করে বাকি ফুটবলারদের এগোনো উচিত। টিমের বিপদে কী ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়, সেটা ও দেখিয়ে দিল।’’ রাতের দিকে র‌্যান্টিকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর।
গোয়ায় দুরন্ত জয়ের জন্য অবশ্য নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকারের সঙ্গে কোচ বিশ্বজিতের প্রশংসাও করতে হবে। বিরতির পরে তাঁর দু’টো পরিবর্তন গোটা ম্যাচের রং বদলে দেয়।

এক) হরমনজ্যোৎ খাবরাকে বসিয়ে সাবিথকে স্ট্রাইকার করে ডু ডংকে উইংয়ে সরিয়ে দেওয়া।

দুই) তুলুঙ্গার বদলে রফিককে উইথড্রল ফরোয়ার্ড করে দেওয়া।

লাল-হলুদ কোচের দু’টো মোক্ষম চালে একেবারে ধাঁধায় পড়ে যান ওডাফারা। রফিকের ধ্বংসাত্মক ফুটবলে স্পোর্টিং মাঝমাঠের দুই প্লে মেকার আমনা-প্রতেশকে ম্যাচের শেষ আধ ঘণ্টা আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। নিটফল, ওডাফার জন্য বল বাড়ানোর লোক নেই। উল্টো দিকে ‘ডাউন দ্য মিডল’ যে ডং বিপক্ষের জালে বারবার আটকে পড়ছিলেন, সেই ডং উইংয়ে আসতেই বিস্ফোরণ ঘটল। একের পর এক নিখুঁত ক্রস আর থ্রু আছড়ে পড়ল স্পোর্টিংয়ের ছোট বক্সে। মাত্র তেরো মিনিটেই র‌্যান্টি-বিকাশরা তিনটে গোল করে তিন পয়েন্ট পকেটে ঢুকিয়ে ফেললেন। বিশ্বজিৎ বলছিলেন, ‘‘ডং ফাইটার নয়। কিন্তু লুজ বলে ভয়ঙ্কর। তাই বিরতির সময় টিম মিটিংয়ে আমরা ঠিক করি ওকে উইংয়ে খেলাব। প্রচুর জায়গা পাবে। আর সেটাই হল।’’

এ দিনের ম্যাচে বড় প্রাপ্তি, র‌্যান্টি-ডংদের মতো বিদেশিদের পাশে লাল-হলুদে উজ্জ্বল নতুনরাও। বিকাশ জাইরু একটা গোল করলেন। আর সামাদের প্রসংশায় পঞ্চমুখ বিশ্বজিৎ তো বলেই ফেললেন, ‘‘আজকে আমার ম্যান অফ দ্য ম্যাচ সামাদ।’’ তবে যেখানে প্রাপ্তি সেখানে দুশ্চিন্তাও আছে। প্রথম দেখায় মনে হল, বিশ্বজিতের ডিফেন্স সংগঠনই বেশি দুর্বল। বেলো রজ্জাককে খুঁজেই পাওয়া গেল না। আইএসএল খেলে আসা অর্ণব মণ্ডলকে ক্লান্ত দেখাল। এবং যার ধাক্কায় একটা সময় মাঝমাঠের সঙ্গে রক্ষণের যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায়। আর সেই সুযোগে ওডাফা শুরুতেই গোল করে এগিয়ে দেয় স্পোর্টিং ক্লুবকে। ইস্টবেঙ্গলের অবশ্য সৌভাগ্য ম্যাচ শেষে তার খেসারত দিতে হয়নি।

সৌজেন্য র‌্যান্টি মার্টিন্স। এখন শুধু দেখার, স্যামির ঘোড়া লাল-হলুদ জনতার বারো বছরের প্রতীক্ষায় দাঁড়ি টানতে পারেন কি না!

ইস্টবেঙ্গল: রেহনেশ, বেলো, অর্ণব, সামাদ, রবার্ট, শেহনাজ (দীপক), খাবরা (রফিক), বিকাশ, তুলুঙ্গা (সাবিথ), র‌্যান্টি, ডং।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy