Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ধনঞ্জয়ের দাপটেও আত্মবিশ্বাস ধাক্কা খাবে না বিরাটদের

সে দিন পাল্লেকেলেতে যা হল, তা দেখে মনে হয়েছিল ভারতের মুখে হয়তো সিরিজের সেরা নক-আউট পাঞ্চটা মেরেই দেবে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু যে ভাবে লড়াইয়ে ফেরাল মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ও ভুবনেশ্বর কুমার, তার যত প্রশংসাই করি না কেন, কম হবে।

অস্ত্র: বিস্ময় স্পিনারই বড় ভরসা শ্রীলঙ্কার। —ফাইল চিত্র।

অস্ত্র: বিস্ময় স্পিনারই বড় ভরসা শ্রীলঙ্কার। —ফাইল চিত্র।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১৫
Share: Save:

বৃহস্পতিবার পাল্লেকেলেতে বেশ কষ্ট করেই দ্বিতীয় ওয়ান ডে-টা জিততে হল ভারতকে। ঘরের মাঠে এই ভাবে হারটা যে কোনও দলের কাছেই হতাশাজনক। ভারতের সঙ্গে তাদের মানের তফাতটা এতটাই যে, শ্রীলঙ্কার কাছে সিরিজটা বেশ কঠিন হয়ে উঠেছে। দ্বিতীয় ম্যাচে লড়াই হলেও সেই ছবিটা স্পষ্ট।

অবশ্য সে দিন পাল্লেকেলেতে যা হল, তা দেখে মনে হয়েছিল ভারতের মুখে হয়তো সিরিজের সেরা নক-আউট পাঞ্চটা মেরেই দেবে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু যে ভাবে লড়াইয়ে ফেরাল মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ও ভুবনেশ্বর কুমার, তার যত প্রশংসাই করি না কেন, কম হবে। ১৩০-৭ হয়ে যাওয়ার পর যখন ভারতের আশা শেষ, তখন ওরা ক্রমশ জয়ের দিকে নিয়ে গেল দলকে। এটাই বোধহয় ভুবির কেরিয়ারের সেরা পারফরম্যান্স। ও যে কতটা পরিণত হয়ে উঠেছে আর ঠিক সময়ে যে নিজের পারফরম্যান্সে উন্নতি করতে পারে, তারই প্রমাণ দিল। ভুবির ন’নম্বরে ব্যাট করতে আসাটা ভারতের পক্ষে একটা বড় সুবিধা। ওর বোলিংটাও তো দিন দিন আরও ধারালো হয়ে উঠছে।

আর ধোনির ব্যাটিংয়েরও প্রশংসা না করলেই নয়। বিশাল বিশাল সব স্ট্রোক হয়তো ছিল না ওর ইনিংসে। তা সত্ত্বেও ওর ইনিংসটা কিন্তু অসাধারণ। একদম অন্য রকমের একটা ইনিংস। এক দিকে যেমন ও ভুবিকে চাপে পড়তে দিল না, অন্য দিকে তেমনই ক্রিজের একটা দিক সারাক্ষণ আঁকড়ে ধরে ছিল। ম্যাচকে শেষ বল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ধোনি ওস্তাদ। মাঝে মাঝে হয়তো ওর চেষ্টা বিফলে যায়। কিন্তু এ বার আর ওর কোনও ভুলচুক হয়নি।

ওই সময় শ্রীলঙ্কার ক্যাপ্টেন উপুল থরঙ্গার কৌশলের অভাব দেখেও অবাক হলাম। পরপর সাতটা উইকেট ফেলে দেওয়ার পরেও ধোনিদের এত খুচরো রান করতে দিল কেন! ওই সময় ব্যাটসম্যানদের বড় শট খেলতে বাধ্য করা উচিত একজন ক্যাপ্টেনের। থরঙ্গাকে তো এখন দুটো ম্যাচে বসে থাকতে হবে। কিন্তু ওর জায়গায় যে দায়িত্ব নেবে, এটা তাকে বুঝতে হবে।

এই হারের পরে সিরিজটা শ্রীলঙ্কার কাছে আরও কঠিন হয়ে গেল। ওদের যা বোলিং শক্তি, তাতে ওরা আর ফিরে আসতে পারবে বলে মনে হয় না। বরং এই জয়ের পরে ভারতের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা আরও আত্মবিশ্বাস পেয়ে গেল। এখন ওরা জানে, ওরা কোনও ভাবে ব্যর্থ হলে লোয়ার অর্ডার অর্ডার অবস্থা সামলে জেতাতে পারবে।

আকিলা ধনঞ্জয় বাদে শ্রীলঙ্কার বোলিংয়ের দুরবস্থা আরও একবার ধরা পড়ে গেল সে দিনের ম্যাচে। না আছে কোনও কামড়, না আছে বিপক্ষকে চাপে ফেলার ক্ষমতা। নির্বিষ বলতে যা বোঝায়, একেবারে তাই। গোটা ম্যাচে তিনটে এমন মুহূর্ত এসেছে, যেগুলো ম্যাচের গতিপথ বদলে দেয়। এক, যখন ফাস্ট বোলাররা নতুন বল নিয়ে বল করতে এসেছে। দুই, যখন ধনঞ্জয়ের হাতে বল আসে আর তিন, যখন ওর ওভারের কোটা শেষ হয়ে যায়। জানি না শ্রীলঙ্কার বোলাররা আর কবে উইকেট নেওয়া শিখবে। তবে পরের ম্যাচগুলোতে যে ধনঞ্জয়ের ওপর যথেষ্ট চাপ থাকবে, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ থাকবে। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ফোকাসও ওর উপরেই থাকবে। আশা করি বাকি তিনটে ম্যাচে ধনঞ্জয়কে ওরা অন্য ভাবে সামলাবে। তবে শ্রীলঙ্কার ওকে টেস্ট ম্যাচে নামানো উচিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE