Advertisement
E-Paper

বোর্ডকে চব্বিশ ঘণ্টা সময়, লোঢা-সুপারিশ মামলার রায় আজ

মহাষষ্ঠীর বিকেল পর্যন্ত হয়তো অপেক্ষা করার প্রয়োজন পড়বে না। সব কিছু ঠিকঠাক চললে বোধনের দিন সকালেই ভারতীয় বোর্ড বনাম লোঢা যুদ্ধের ফয়সলা হয়ে যাচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৫৯

মহাষষ্ঠীর বিকেল পর্যন্ত হয়তো অপেক্ষা করার প্রয়োজন পড়বে না। সব কিছু ঠিকঠাক চললে বোধনের দিন সকালেই ভারতীয় বোর্ড বনাম লোঢা যুদ্ধের ফয়সলা হয়ে যাচ্ছে। আজ, শুক্রবার আদালতের প্রথম ঘণ্টাতেই সম্ভবত বোর্ড বনাম লোঢা মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত যা খবর, তাতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সামনে বোর্ডের বশ্যতা স্বীকারের সম্ভাবনা প্রায় নেই। যে কারণে হয়তো অন্তর্বর্তিকালীন কমিটি গঠন করা ছাড়া আর উপায় থাকবে না সুপ্রিম কোর্টের।

বৃহস্পতিবার আদালতে দিনভর তীব্র সওয়াল-জবাবের পর বোর্ডের আবেদন পত্রপাঠ খারিজ করে দেয় দেশের প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুরের বেঞ্চ। বোর্ড আইনজীবীকে বলে দেওয়া হয়, লোঢা কমিশনের যাবতীয় সুপারিশ মানার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। অর্থাৎ শুক্রবারের মধ্যে। তা না হলে রায় ঘোষণা করে দেবে আদালত। যে রায়ে বোর্ড প্রেসিডেন্ট অনুরাগ ঠাকুর সহ শীর্ষকর্তাদের সরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হতে পারে। বোর্ড প্রশাসন দেখবে অন্তর্বর্তিকালীন কমিটি।

বোর্ড আইনজীবী কপিল সিব্বল এ দিন আদালতেই বলে দেন যে, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া সম্ভব হবে না। এবং শেষ পর্যন্ত যদি অন্তর্বর্তিকালীন কমিটি আসে, তাদের সংস্কার আমদানির রাস্তা নিষ্কণ্টক হবে কি? কেউ কেউ বলছেন, না। বরং বর্তমান প্রশাসক গোষ্ঠী থেকে চরম অসহযোগিতার মুখে পড়তে পারে কমিটি। কমিটিতে কারা থাকতে পারেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছেই। কেউ বলছেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মুকুল মুদগল। কেউ ভাসিয়ে দিচ্ছেন সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। ঘটনা হল, যাঁকেই আনা হোক, তীব্র অসহযোগিতার মধ্যে পড়তে হবে। নয়াদিল্লিতে ইতিমধ্যে কানাঘুষো শুরু হয়ে গিয়েছে যে, শুক্রবার বোর্ড শীর্ষকর্তাদের হঠিয়ে দিলে শনিবার থেকে না রঞ্জি ট্রফির ম্যাচও বন্ধ হয়ে যায়! অর্থাৎ, ম্যাচের তৃতীয় দিন!

আসলে বোর্ড বশ্যতা স্বীকারে না গিয়ে নিজেদের যুদ্ধ চালু রাখতে চাইছে। বোর্ডমহলের কেউ কেউ বলছেন, লোঢা আইনে অনুরাগের টিমকে এমনিই ‘কুলিং অফ পিরিয়ডে’ চলে যেতে হবে। বশ্যতা স্বীকারে তাঁর লাভ কী? এ দিন আদালতেও বোর্ড প্রেসিডেন্টকে নিয়ে একদফা হয়েছে। অনুরাগ ঠাকুর যে এক সময় জাতীয় স্তরের ক্রিকেটে খেলেছেন, তা শুনে বিচারপতি ঠাকুর মজা করে বলেন, ‘‘সে তো সবাই এখানে ক্রিকেটার, মিস্টার সিব্বল। আমিও সুপ্রিম কোর্ট জাজদের দলের ক্যাপ্টেন ছিলাম। আপনি ক্রিকেটার কি না বলুন? তা হলে বার অ্যাসোসিয়েশন টিমে আপনাকে নিতে বলতে পারি।’’ যা শুনে বোর্ডের এক অনুরাগ-ঘনিষ্ঠ কর্তা সংবাদসংস্থাকে বলেন, ‘‘অনুরাগ রাজনৈতিক নেতা। নেতাদের কত কটূ কথাই না শুনতে হয়। তাই অনুরাগও বিচারপতির এই মন্তব্য গায়ে মাখেননি।’’ অনুরাগ গায়ে না মাখলেও বোর্ডের আইনি পরামর্শদাতা বিচারপতি মার্কন্ডেয় কাটজু এর পাল্টা দিয়ে টুইট করেন যে, সুপ্রিম কোর্ট জাজদের সঙ্গে বার অ্যাসোসিয়েশনের ক্রিকেট ম্যাচটা বরাবরই জাজেরা জেতেন। নইলে বিপক্ষে খেলা আইনজীবীদের কেস যদি খারিজ হয়ে যায়!

বোর্ড এ দিন আদালতে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময় চেয়েছিল। বলা হয়েছিল যে, লোঢা আইন লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হলে বাকি সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা দরকার। কিন্তু পত্রপাঠ তা উড়িয়ে দেওয়া হয়। বিচারপতিরা বলে দেন, ‘‘অনেক হয়েছে। আর কোর্টের সময় নষ্ট করবেন না।’’ সোজাসুজি বলা হয়, সময় মাত্র চব্বিশ ঘণ্টা। বোর্ড আইনজীবী কপিল সিব্বল এটাও বলতে যান যে, বোর্ড যেহেতু তামিলনাড়ু সোসাইটি অ্যাক্টে নথিবদ্ধ আর তার নিয়ম অনুযায়ী সদস্যদের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ রাজি না থাকলে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। লোঢা-সুপারিশ কার্যকর করার প্রশ্নেও বোর্ড সদস্যদের এই অংশের সম্মতি পাওয়া যায়নি বলে আদালতে জানান সিব্বল। সেই যুক্তি উড়িয়ে দিয়ে বিচারপতি ঠাকুর বলে দেন, ‘‘যে সব রাজ্যসংস্থা সংস্কারের পক্ষে নেই, আপনারা তাদের কোটি কোটি টাকা দিচ্ছেন কেন? বোর্ড তো এই সংস্থাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে। লোঢা প্যানেলের কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে।’’

শুধু তাই নয়, এ দিনের শুনানিতে বোর্ডের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিয়ে বিধিনিষেধের প্রসঙ্গ ওঠে। সিব্বল জানান, এই নিষেধাজ্ঞা তোলা না হলে সদ্য শুরু হওয়া দেশের সবচেয়ে বড় ঘরোয়া টুর্নামেন্ট রঞ্জি ট্রফিও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কারণ, ১৮টা রাজ্য সংস্থা নাকি ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, বোর্ডের দেওয়া ‘ফান্ড’ ছাড়া তারা রঞ্জি ম্যাচ আয়োজন করতে পারবে না। আর শুক্রবার যদি বোর্ডই বন্ধ করে দেওয়ার রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট, তা হলে আর রঞ্জি ট্রফি হবেই বা কী ভাবে? কিন্তু কোনও কিছুতেই চিঁড়ে ভেজেনি।

ফের বোর্ডের চিঠি

আইপিএল-কে আদালত অতিরিক্ত জাঁকজমকপূর্ণ টুর্নামেন্ট বলার পরিপ্রেক্ষিতে বোর্ড প্রেসিডেন্ট অনুরাগ ঠাকুর বৃহস্পতিবার ফের রাজ্য সংস্থাগুলোকে চিঠি পাঠালেন। যেখানে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বোর্ড সদস্যদের এ বার সবাই মিলে ঠিক করতে হবে আইপিএল বন্ধ করা উচিত কি না।’’ অনুরাগ লিখেছেন, ‘‘আইপিএল গত ন’বছরে রাজ্য সংস্থাগুলো ২,৪০৬ কোটি টাকা দিয়েছে টুর্নামেন্টের লভ্যাংশ থেকে। এর পরও বলবেন, এটা বন্ধ হওয়া দরকার!’’

Anurag Thakur BCCI
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy