Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Sutirtha Mukherjee

Sutirtha Mukherjee: সেরা ম্যাচের ভিডিয়ো দেখে প্রস্তুতি সুতীর্থার

সুতীর্থার শক্তি তাঁর ব্যাকহান্ড স্ট্রোক। সঙ্গে রক্ষণ করতে করতে হঠাৎ আক্রমণাত্মক হয়ে বিপক্ষকে চেপে ধরা।

যাত্রা: কলকাতা ছাড়ার আগে বিমানবন্দরে সুতীর্থা। নিজস্ব চিত্র

যাত্রা: কলকাতা ছাড়ার আগে বিমানবন্দরে সুতীর্থা। নিজস্ব চিত্র

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২১ ০৫:২৯
Share: Save:

গত চার মাস ধরে যাদবপুর ও নিউটাউনে ঘাম ঝরানো প্রস্তুতি শেষ। বৃহস্পতিবার সকালেই কলকাতা ছেড়ে জাতীয় কোচ সৌম্যদীপ রায়কে নিয়ে দিল্লি উড়ে গিয়েছেন তিনি। শনিবার রাত এগারোটার উড়ানে টোকিয়ো রওনা দেবেন অলিম্পিক্সগামী দলের বঙ্গকন্যা টেবল টেনিস খেলোয়াড় সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়।

তার আগে নৈহাটির মেয়ের যেন ঘোর কাটছে না! শুক্রবার বিকেলে দিল্লি থেকে ফোনে সুতীর্থা বলছিলেন, ‍‘‍‘বৃহস্পতিবার রাতেই অলিম্পিক্সের জার্সি, কিটস পেয়ে গিয়েছি। জার্সিটা হাতে ধরার পরে মনে হচ্ছিল, স্বপ্ন দেখছি না তো‍! এই জার্সিটার জন্যই তো ছোট থেকে স্বপ্ন দেখতাম। এ বার এই জার্সির মান রাখার দায়িত্ব আমার কাঁধে।’’

যা শুনে পাশে থাকা কোচ সৌম্যদীপ বলে দিলেন, ‍‘‍‘গত কয়েক মাসে প্রচুর পরিশ্রম করেছে সুতীর্থা। প্রথম বার অলিম্পিক্সে যাচ্ছে। তাই এই আবেগ স্বাভাবিক। তবে ওকে আমি এবং আমার অলিম্পিয়ান স্ত্রী পৌলমী (ঘটক) এই আবেগ সংযত করতে পরামর্শ দিয়েছি।’’

মিষ্টির ভক্ত সুতীর্থা। কিন্তু অলিম্পিক্সের জন্য গত তিন মাসে তা ছুঁয়েও দেখেননি। সঙ্গে নিজেকে ডুবিয়ে রেখেছিলেন কঠোর পরিশ্রমে। যা উল্লেখ করে তিনি বললেন, ‍‘‍‘এর উপকারও পেয়েছি। প্রস্তুতি পর্বে গত চার মাসে আমরা জোর দিয়েছিলাম দেহের ওজন কমানো, শক্তি বাড়ানোর উপরে। সব নিয়ম ও খাদ্যাভ্যাস মেনে ঠিক মতো অনুশীলন করায় আমার ওজন ১০ কিলো কমেছে। ফিটনেসটাও ভাল হয়ে গিয়েছে আগের থেকে। এর সুফল খেলায় পাবই।’’

ফিটনেস বাড়াতে সুতীর্থা অনুশীলন করেছেন প্রাক্তন জাতীয় অ্যাথলিট অর্ঘ্য মজুমদার ও আসিয়ান কাপজয়ী ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার সুভাষ চক্রবর্তীর কাছে। অনুশীলনের জন্যই নৈহাটির বাড়ি ছেড়ে দক্ষিণ কলকাতায় ভাড়া বাড়িতে মাকে নিয়ে থাকেন। সুতীর্থার কথায়, ‍‘‍‘সপ্তাহে তিন দিন নিউটাউনে গিয়েছি ফিটনেস ট্রেনিংয়ের জন্য। আমার দুই ফিটনেস কোচ সেখানে ঘণ্টা দু’য়েক দৌড়-সহ নানা ফিজিক্যাল ট্রেনিং করিয়েছেন। তার পরে যাদবপুরে ফিরে খেলার অনুশীলন শুরু হত। বিকেলে চারটে থেকে আটটা পর্যন্ত ফের টেবল টেনিস বোর্ডেই হয়েছে প্রস্তুতি। তবে শেষ ১০ দিনে এই দিনলিপিতে একটু বদল করেছিলেন কোচ।’’

কী বদল হয়েছে অনুশীলনে? সৌম্যদীপ এ বার বলেন, ‍‘‍‘চাপ কমানোর জন্য গত ১০-১২ দিন ওকে হালকা মেজাজে থাকতে দিয়েছি। বুঝিয়েছি, কম ভাবনাচিন্তা করতে। মানসিক ভাবে ফুরফুরে রাখতে পৌলমী এই সময়ে ওকে আলাদা করে সময় দিয়েছে। ওর সেরা ম্যাচগুলোর ভিডিয়ো দেখানো হয়েছে। সেখানে ভুলের বদলে ওর দক্ষতা নিয়েই আমরা সুতীর্থার সঙ্গে আলোচনা করেছি বেশি। কারণ, টেবল টেনিসে খেলার সঙ্গে মনের যোগও রয়েছে।’’

সুতীর্থার শক্তি তাঁর ব্যাকহান্ড স্ট্রোক। সঙ্গে রক্ষণ করতে করতে হঠাৎ আক্রমণাত্মক হয়ে বিপক্ষকে চেপে ধরা। অলিম্পিক্সেও কি এই অস্ত্রেই বাজিমাত করা যাবে?

বঙ্গকন্যা অলিম্পিয়ান এ বার বলে ওঠেন, ‍‘‍‘এই মুহূর্তে আমার বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং ৯৫। ইউটিটি (আল্টিমেট টেবল টেনিস)প্রতিযোগিতায় বিশ্বের আট নম্বর, কুড়ি নম্বর, ১৬ নম্বর খেলোয়াড়কে হারিয়েছি। এ বার তার চেয়েও ফিটনেস অনেক ভাল অবস্থায়। ভাল করব এই আশা নিয়েই টোকিয়ো যাচ্ছি।’’ যোগ করেন, ‍‘‍‘অলিম্পিক্সে আমার প্রথম লক্ষ্য কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়া। কাজটা কঠিন হলেও ঠিক মতো খেলতে পারলে তা অসম্ভব নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE