Advertisement
E-Paper

শাস্ত্রীর সহকারী নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন বাড়ছে

শাস্ত্রীকে নিয়ে ঐক্যমত্য হতে পারেনি অ্যাডভাইসরি কমিটিও। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, সৌরভের ভোট পাননি শাস্ত্রী। তাঁকে কিছুটা হলেও সমর্থন করছিলেন লক্ষ্মণ। কিন্তু কোহালির পছন্দ শাস্ত্রীকে জোরাল ভাবে সমর্থন করতে থাকেন সচিন তেন্ডুলকর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৭ ০৪:৫৭

বিরাট কোহালিদের কোচ নির্বাচন নিয়ে নাটক শেষ হয়েও যেন শেষ হচ্ছে না। হেড কোচ হিসেবে রবি শাস্ত্রী প্রত্যাবর্তন ঘটালেও গত কালই জলঘোলা শুরু হয়েছিল তাঁর সহকারিদের নিয়োগ নিয়ে। ক্রমশ তা বেড়ে চলেছে।

সাধারণত, হেড কোচ নিয়োগ করা হলে তিনিই সহকারিদের বেছে নেন। ভারতীয় ক্রিকেটে বরাবর সেটাই হয়েছে। গ্রেগ চ্যাপেল থেকে শুরু করে গ্যারি কার্স্টেন বা ডানকান ফ্লেচার— সকলে সেই স্বাধীনতা পেয়েছেন। গত বছর অনিল কুম্বলেকে হেড কোচ বেছে নিয়েছিল এই একই অ্যাডভাইসরি কমিটি। কিন্তু তাঁরা শুধুই কোচই বেছেছিলেন। সহকারিদের নাম চূড়ান্ত করার দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া হয় কুম্বলের উপরেই। এ বারে বিস্ময়কর ভাবে সৌরভদের কমিটি সহকারিও বেছে দেয়।

এই আচমকা নিয়োগ পদ্ধতি নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, সহকারি বেছে নেওয়ার দায়িত্বও কি ছিল সৌরভ, সচিন, লক্ষ্মণদের উপর? দুপুরের দিকেই চাউর হয়ে গিয়েছিল যে, শাস্ত্রীই কোচ হচ্ছেন। তার পরেও দীর্ঘ বিলম্বের পরে রাতে গিয়ে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়। কেন এই বিলম্ব? বোর্ড সূত্রের খবর, সহকারি বাছা নিয়ে তীব্র মতান্তর হয়। প্রায় অচলাবস্থা তৈরি হয়ে গিয়েছিল এ নিয়ে।

জানা গিয়েছে, শাস্ত্রী তাঁর আবেদনপত্র এবং প্রেজেন্টেশনের সময়েই পরিষ্কার বলে দিয়েছিলেন, তিনি নিজের পছন্দের সহকারিদের নিয়ে কাজ করতে চান। আগের বারও শাস্ত্রী ডিরেক্টর হিসেবে এসেই বিদেশি সহকারিদের সরিয়ে দেশি কোচদের নিয়ে আসেন। সেই দলে ছিলেন বোলিং কোচ ভরত অরুণ, ব্যাটিং কোচ সঞ্জয় বাঙ্গার এবং ফিল্ডিং কোচ শ্রীধর। এ বারে বাঙ্গার এবং শ্রীধর দলের সঙ্গে আছেন। কুম্বলে আসার পরে সরিয়ে দেওয়া হয় অরুণকে। ধরেই রাখা হয়েছিল শাস্ত্রী ফিরলে অরুণও ফিরবেন।

আরও পড়ুন: আঘাত তো লাগেই ওভাবে সরতে হলে

বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, শাস্ত্রীর পছন্দের সহকারি দিতে চায়নি অ্যাডভাইসরি কমিটির একাংশ। যে হেতু সৌরভের সঙ্গে শাস্ত্রীর তিক্ততার একটা ইতিহাস আছে, এই ধারণা ক্রমশ জোরাল হচ্ছে যে, তিনিই জাহির খান এবং রাহুল দ্রাবিড়-কে নিয়োগ করার নেপথ্যে বড় ভূমিকা নিয়েছেন। যদিও একা সৌরভ এর পিছনে ছিলেন, বলাটা অন্যায় হবে। তেমনই এ নিয়ে তর্কাতর্কি বা বিভাজন হয়নি, সেটাও যদি কেউ দাবি করেন বিশ্বাস করা যাচ্ছে না।

অনড় তিন

শাস্ত্রীকে নিয়ে ঐক্যমত্য হতে পারেনি অ্যাডভাইসরি কমিটিও। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, সৌরভের ভোট পাননি শাস্ত্রী। তাঁকে কিছুটা হলেও সমর্থন করছিলেন লক্ষ্মণ। কিন্তু কোহালির পছন্দ শাস্ত্রীকে জোরাল ভাবে সমর্থন করতে থাকেন সচিন তেন্ডুলকর। কমিটির অন্যরা শাস্ত্রীকে নিয়ে প্রশ্ন তুললেও সচিন আগাগোড়া বলে গিয়েছেন, ক্যাপ্টেন যদি রবিকে চায় তা হলে তা-ই হোক। এ-ও শোনা যাচ্ছে যে, অনমনীয় ভঙ্গিতে সচিন বলে দেন, কোহালির কথা শোনা না হলে তিনি এই নির্বাচনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকতে চান না।

আরও এক জন সচিনের মতোই কট্টর অবস্থান নেন। তিনি হচ্ছেন, সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্‌স (সিওএ)-এর প্রধান বিনোদ রাই। কোচ নির্বাচন নিয়ে তাড়াহুড়ো নেই, আগের দিন বলেছিলেন সৌরভ। কিন্তু বিনোদ রাই মঙ্গলবার সকালেই জানিয়ে দেন, দেরি করা যাবে না। মঙ্গলবারের মধ্যেই কোচের নাম ঘোষণা করতে হবে। সূত্রের খবর, সিওএ প্রধান নিজে সচিনদের কমিটির সঙ্গে কথা বলে সাফ জানিয়ে দেন, কোহালির সঙ্গে কথা বলার থাকলে ফোন বা ভিডিও কলে সেরে নেওয়া হোক। সচিনও খুবই সক্রিয় ভূমিকা নেন মঙ্গলবারের মধ্যেই কোচ নিয়োগের কাজ মিটিয়ে ফেলার ব্যাপারে।

এটাও পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে, কোচ বিতর্ক নিয়ে গাগোড়া কোহালির পাশেই দাঁড়িয়েছে সিওএ। এ দিন সিওএ যে বিবৃতি দিয়েছে তাতে কোচকে বর্ণনা করা হয়েছে বন্ধুসুলভ অভিভাবক হিসেবে। শাস্ত্রীর নির্বাচনের প্রশংসা করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ড্রেসিংরুমে সংহতি রক্ষা করাই কোচের প্রধান কাজ। এর থেকেই পরিষ্কার যে, কোহালির সংঘবদ্ধ ড্রেসিংরুম নীতির সঙ্গে একমত দেশের সর্বোচ্চ আদালত নিযুক্ত প্রশাসকের দলও।

তাৎপর্যপূর্ণ হচ্ছে, দ্রাবিড় এবং জাহিরের নিয়োগ নিয়ে সিওএ চুপচাপ। দুই প্রাক্তন তারকার যোগ্যতা নিয়ে কোনও সন্দেহ না থাকলেও অন্য প্রশ্ন রয়েছে। জাহির আইপিএল খেলে চলেছেন। এখনও অবসর নেননি। তা হলে তিনি কী করে জাতীয় দলের পরামর্শদাতা হবেন? আবার দ্রাবিড় ইতিমধ্যেই অনূর্ধ্ব উনিশ এবং ভারতীয় ‘এ’ দলের প্রধান কোচ। তার সঙ্গে সিনিয়র টিমের ব্যাটিং পরামর্শদাতা হিসেবে সময় দেবেন কী ভাবে? বলা হচ্ছে, দ্রাবিড় বিদেশে খেলা থাকলে ব্যাটিং পরামর্শদাতা। এমন পদও কখনও কেউ শোনেনি।

তার চেয়েও বড় প্রশ্ন, কী হবে যদি অধিনায়ক কোহালির এই সব নিয়োগে সায় না থাকে? অতীতে সৌরভ থেকে শুরু করে ধোনি— সবাই অধিনায়ক থাকাকালীন তাঁদের ইচ্ছা-অনিচ্ছাই গুরুত্ব পেয়েছে। এ ব্যাপারে অ্যাডভাইসরি কমিটি তাদের এক্তিয়ার লঙ্ঘন করল কি না, সেই গুরুতর প্রশ্নও উঠে পড়েছে।

কোচ নিয়োগ পর্ব শেষ হলেও আগুন নিভল নাকি আরও দাউ দাউ জ্বলবে? এটাই এখন দেখার।

Ravi Shastri Head Coach Coaching Staffs CoA BCCI Cricket Advisory Committee রবি শাস্ত্রী বিরাট কোহালি Virat Kohli Cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy