Advertisement
E-Paper

‘পরিবেশের সঙ্গে মানাতে না-পারায় কোহালিদের এই বিপর্যয়’

প্রথম দিনের টানা বৃষ্টির ফলে ম্যাচটা চার দিনের দাঁড়ায়। কিন্তু সেই পুরো চার দিনও গড়াল না। একদিন আগেই শেষ হয়ে গেল ভারতের অদ্ভূত ব্যাটিং আত্মসমর্পণে। আসলে প্রথম ইনিংসে কোনও দল ১০৭ রানে অল আউট হয়ে গেলে তো তাদের আত্মবিশ্বাস বেঁচে থাকে না। এখানেও তাই হল।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৮ ০৪:২৩
বিধ্বস্ত: এই ভাবে আত্মসমর্পণ যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না বিরাটের। ছবি: রয়টার্স।

বিধ্বস্ত: এই ভাবে আত্মসমর্পণ যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না বিরাটের। ছবি: রয়টার্স।

রবিবার লর্ডস টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা দেখতে দেখতে ভাবছিলাম, একে কী বলা যাবে? ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা? নাকি ইংল্যান্ডের দুর্দান্ত বোলিংয়ের কাছে আত্মসমর্পণ?

সম্ভবত দু’টোই। লর্ডস বরাবর ইংল্যান্ডের কাছে বড় ‘গাঁট’। এখানে শেষ দশটি টেস্টের মধ্যে মাত্র চারটিতে জিতেছে হোম টিম। এই মাঠে গত দু’বছরে দু’বার পাকিস্তান হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে। সেই লর্ডসেই কিনা ভারত এ ভাবে আত্মসমর্পণ করল! ইনিংস ও ১৫৯ রানে হার হল বিরাট কোহালিদের।

প্রথম দিনের টানা বৃষ্টির ফলে ম্যাচটা চার দিনের দাঁড়ায়। কিন্তু সেই পুরো চার দিনও গড়াল না। একদিন আগেই শেষ হয়ে গেল ভারতের অদ্ভূত ব্যাটিং আত্মসমর্পণে। আসলে প্রথম ইনিংসে কোনও দল ১০৭ রানে অল আউট হয়ে গেলে তো তাদের আত্মবিশ্বাস বেঁচে থাকে না। এখানেও তাই হল।

এ রকম পরিবেশে টস হারা মানেই অনেকটা পিছিয়ে থেকে মাঠে নামা। ভাল ব্যাটিং করে সেই ঘাটতিটা পুষিয়ে নিতে হয়। তা করতে পারলেন না আমাদের ব্যাটসম্যানরা। যাদের আমরা টেস্ট বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে জানি, তাঁরাই ডোবালেন। লন্ডনের এই পরিবেশের সঙ্গে একেবারেই মানিয়ে নিতে পারলেন না ব্যাটসম্যানরা!

দ্বিতীয় ইনিংসে কিন্তু পরিবেশ অতটা খারাপ ছিল না। তবু জিমি অ্যান্ডারসনদের সুইংয়ের কাছে হাঁটু গেড়ে বসে পড়লেন মুরলীরা। প্রথম দিন অ্যান্ডারসনের আউটসুইং অনেকটা লেগব্রেকের মতো যাচ্ছিল। তাঁর এই বোলিং সামলাতে পারেননি কেউ। পূজারার প্রথম ইনিংসের রান আউটে ওঁর কোনও দোষ ছিল না। দ্বিতীয় ইনিংসে স্টুয়ার্ট ব্রডের অসাধারণ ইনসুইংয়ে আউট হওয়াতেও পূজারার তেমন কোনও দোষ দেখছি না।

কিন্তু অজিঙ্ক রাহানে শেষ চার বারের মধ্যে তিন বার রাহানেসুলভ আউট হননি। বিরাটের পুরনো চোট ওঁকে ভোগাচ্ছে। যেটা ভারতের পক্ষে বড় দুঃসংবাদ হয়ে উঠতে পারে।

আসলে ইংল্যান্ডের অসাধারণ বোলিংয়ের সামনে মাথা নত করতে হয় রাহানেদের। অ্যান্ডারসন তো শুধু লর্ডসেই একশো উইকেট নিয়ে ফেললেন। ইংল্যান্ড যেখানে চার সিমারে নেমেছে, সেখানে আমাদের দলে তিন পেসার। তাও মহম্মদ শামি ছাড়া কেউই তেমন ভাল বোলিং করতে পারেননি। শামির সিম পজিশন ভালই ছিল। ছোট ছোট ইনসুইং, আউটসুইং করাচ্ছিলেন তিনি। স্টুয়ার্ট ব্রড, অ্যান্ডারসনদের যেমন সমানে সাহায্য করে গিয়েছেন ক্রিস ওক‌্স, স্যাম কারেনরা, সেখানে শামিকে সাপোর্ট দেওয়ার কেউই ছিলেন না। কুলদীপ যাদবকে তো কাজেই লাগানো গেল না এখানে। এই পরিবেশে ওঁকে প্রথম এগারোয় রাখার মানেই হয় না। প্রথম দল বাছার সময় বোধহয় পরিবেশ ও উইকেট ঠিকমতো বুঝে উঠতে পারেনি ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট।

আরও পড়ুন: হার প্রাপ্যই ছিল, বলছেন কোহালি

এই অবস্থা থেকে সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানো বেশ কঠিন। তবু পরের টেস্টে দীনেশ কার্তিককে বসিয়ে ঋষভ পন্থকে খেলানো ছাড়া উপায় নেই। নামানো উচিত করুণ নায়ারকেও। এখন তো আর কিছু হারানোর নেই।

পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য ভারতের যে পরিমাণ প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার দরকার ছিল, তাও মনে হয় ওরা পায়নি। আমাদের বোর্ডের ডামাডোল অবস্থা হোক বা সূচির চাপে হোক, আরও কয়েকটা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে টেস্টে নামলে ভাল করতেন বিরাটরা। ১৯৯৬ সালে যখন আমি যখন জাতীয় নির্বাচক ছিলাম, তখন ভারত ইংল্যান্ডে দশটারও বেশি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিল। তাও সিরিজ জিততে পারেনি। এ বার তো তার কাছাকাছি সংখ্যক প্রস্তুতি ম্যাচও খেলতে পারেনি আমাদের দল। শেষে একটা কথা অবশ্যই বলব। অসাধারণ আম্পায়ারিং দেখলাম এই টেস্টে। বিশেষ করে আলিম দার। অবশ্যই এটা এই টেস্টের একটা উজ্জ্বল দিক।

Cricket Test India England সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy