প্রস্ততি: কলম্বোয় ওয়ার্ম-আপ ম্যাচে কোহালি। ছবি: এএফপি।
শ্রীলঙ্কার মাটিতে ভেল্কি দেখানো শুরু করে দিলেন ভারতীয় স্পিনাররা। আরও পরিষ্কার করে বললে, কুলদীপ যাদবের রহস্যের জাল ছড়ানো শুরু হয়ে গেল। কলম্বোয় প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিনে বোর্ড প্রেসিডেন্ট্স একাদশের বিরুদ্ধে প্রধান ঘাতক হয়ে থাকলেন চায়নাম্যান বোলার কুলদীপই।
অবিশ্বাস্য ভাবে ১৩৯-১ স্কোর থেকে ১৮৭ রানে অলআউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা বোর্ড প্রেসিডেন্ট্স একাদশ। দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বেঁধে দলকে দারুণ ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন দনুষ্ক গুণতিলকে (৭৪) এবং লাহিরু থিরুমানে (৫৯)। তার পরেই ধস নামান ভারতীয় স্পিনাররা। শেষ ৯টি উইকেট ভারতীয় বোলাররা তুলে নেন মাত্র ৪৮ রানে। ভারতের এই সাফল্যের মধ্যে শ্রীলঙ্কা শিবিরে দুঃসংবাদ, নিউমোনিয়া হওয়ায় প্রথম টেস্টে খেলতে পারবেন না অধিনায়ক দীনেশ চান্ডিমল। দ্বিতীয় টেস্টেও অনিশ্চিত তিনি। তাঁর জায়গায় দলকে নেতৃত্ব দেবেন রঙ্গনা হেরাথ।
কুলদীপ যাদব ম্যাজিক বোলিং গড় নিয়ে শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের জন্য আতঙ্কের বার্তা দিয়ে রাখলেন। ৬.৫ ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে চার উইকেট নেন কুলদীপ। তাঁর চায়নাম্যান বোলিং বুঝতে যে শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের সমস্যা হচ্ছে, সেটা প্রথম দিনেই পরিষ্কার। এবং, সব কিছু ঠিকঠাক চললে, গলের প্রথম টেস্টে কুলদীপের খেলার সম্ভাবনাও জোরাল হয়ে থাকল। অশ্বিন এবং রবীন্দ্র জাডেজা দুই সিনিয়র স্পিনার থাকলেও কুলদীপ জোরাল দাবি পেশ করে রাখলেন।
আরও পড়ুন:
মেয়ের গর্বে দারুণ বার্তা পাঠালেন হরমনপ্রীতের মা
অশ্বিন এ দিন কোনও উইকেট পাননি। জাডেজা ৯ ওভার বল করে ৩১ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন। অশ্বিন ১০ ওভার বল করলেও কোনও উইকেট পাননি। যদিও তাঁর প্রতি একত সহজে আস্থা হারানোর প্রশ্ন নেই টিম ম্যানেজমেন্ট। প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়ার জন্য স্পিনারদের লড়াই যেমন জমে উঠেছে, তেমনই ওপেনারদের মধ্যেও জমজমাট প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে।
চোট সারিয়ে ফেরা কে এল রাহুলের দুরন্ত ফর্ম আশ্বস্ত করবে ভারতকে। মাত্র ৫৮ বলে ঝোড়ো ৫৪ রান করেন রাহুল। তাঁর ইনিংসে ছিল সাতটি বাউন্ডারি। চেতেশ্বর পূজারাও রান পেলেন না। পূজারা এবং অভিনব মুকুন্দ, দু’জনেই আউট হন বাঁ হাতি পেসার বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে। দেশের মাটিতে স্টিভ স্মিথের অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি সিরিজে সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন পূজারা এবং রাহুল। তার পর চোট পেয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ছিটকে যান রাহুল। এখানে ফিরেই দেখালেন, যেখানে শেষ করেছিল সেখান থেকেই শুরু করতে চান। অধিনায়ক বিরাট কোহালিও প্রয়োজনীয় ব্যাটিং প্র্যাকটিস সেরে নিচ্ছেন। তিনি ৪৬ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত। অজিঙ্ক রাহানে ৩০ বলে ৩০ অপরাজিত। দু’জনের অবিচ্ছেদ্য পার্টনারশিপে যোগ হয়েছে ৪৩ রান। শনিবারই ম্যাচের শেষ দিন।
এই সিরিজ থেকেই ফের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন রবি শাস্ত্রী ও তাঁর সঙ্গী বোলিং কোচ ভরত অরুণ। প্রথম দিনে অফিসে ফিরে শাস্ত্রী-অরুণ জুটি খুশিই হবেন বোলিং নিয়ে। তাঁদের আশ্বস্ত করবে মহম্মদ শামির ফর্মও। চোট-আঘাতে গত দু’বছরে জর্জরিত শামি তেমন নিয়মিত ভাবে খেলতেই পারছেন না। এ দিন পাঁচ ওভার আগুনে গতিতে বল করে গেলেন শামি। দু’টো উইকেট তুলে বোঝালেন, তিনি প্রথম টেস্টে খেলার জন্য তৈরি। তবে সেরা চমক সেই কুলদীপ। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ধর্মশালায় স্বপ্নের টেস্ট অভিষেকের পর তাঁকে নিয়মিত দলে নেওয়ার দাবি জোরাল হচ্ছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা বোর্ড প্রেসিডেন্ট্স ইলেভেন ১৮৭ (গুণতিলকে ৭৪, থিরুমানে ৫৯, কুলদীপ ৪-১৪)।
ভারত ১৩৫-৩ (রাহুল ৫৪, কোহালি ৩৪ ব্যাটিং, ফার্নান্দো ২-২১)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy