সফরে: অনুষ্কার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার পথে কোহালি। ছবি: পিটিআই।
একটা দল দুর্বল শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে খেলতে আসছে। অন্যটা খেলল জিম্বাবোয়েকে। ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা— দু’দেশের মহারণের প্রস্তুতি নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এবি ডিভিলিয়ার্স অবশ্য স্বীকার করছেন না, তাঁরা সঠিক প্রস্তুতি না নিয়েই ভারতের বিরুদ্ধে খেলতে নামছেন। জিম্বাবোয়েকে হারানোর পরে এবি বলছেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য ছিল, ছেলেরা যাতে ভাল ফর্ম দেখাতে পারে। ব্যাটসম্যানেরা প্রত্যেকে বাইশ গজে সময় কাটিয়েছে। বোলাররা সুযোগ কাজে লাগিয়েছে।’’
বিরাট কোহালির ভারতের বিরুদ্ধে মহারণের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা প্রাপ্তি ডিভিলিয়ার্স-ই। ২৩ মাস টেস্ট দলের বাইরে থাকার পরে তিনি ফিরলেন। এবং নাটকীয় প্রত্যাবর্তন বললেও কম বলা হয়। নিয়মিত অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি অসুস্থ থাকায় তিনি দলকে নেতৃত্ব দিলেন। চার দিনের টেস্ট জিতলেন দু’দিনে। চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ৬৫ করলেন ৫৩। তার পর কুইন্টন ডি’ককের চোট লাগায় উইকেটকিপিং করতেও দাঁড়াতে হল। এবি যদিও আগের মতো বহু দায়িত্বে সামলে খুশি। ‘‘আমি দলের হয়ে দায়িত্ব নিতে ভালবাসি। তাই বেশ উপভোগই করেছি তিনটে কাজ,’’ বললেন তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকা সমস্যায় পড়তে পারে প্রথম একাদশ বাছা নিয়ে। এবি ফিরে এসেছেন বলে তাঁকে দলে নিতে হবে, কিন্তু তিনি কার জায়গায় আসবেন সেটাই প্রশ্ন। এবি নিজেও বিভ্রান্ত এ নিয়ে। বলছেন, ‘‘ফ্যাফ নেতৃত্বের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেবে। প্রথম একাদশ বাছা নিয়ে কিছু মাথা ব্যথা রয়েছে। প্রত্যেকেই তো ভাল ফর্মে রয়েছে।’’
দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেটার হতে পারেন ডিভিলিয়ার্স। তাঁর দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা নিয়েও সংশয় নেই। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, তিনি যদি উইকেটকিপিং না করেন, ফর্মে থাকা মিডল-অর্ডার কোনও ব্যাটসম্যানকে বসিয়ে তাঁর জন্য জায়গা করতে হবে। ডি’কক ফিট না হলে এবি-কে বলা হতে পারে কিপিং করার জন্য। তিনি রাজি না হলে ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে নতুন কাউকে বেছে নিতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকা টিম ম্যানেজমেন্টকে। এই মুহূর্তে যদিও তারা আশাবাদী, ডি’কক ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু প্রথম টেস্টের আগেই সেরে উঠবেন। যদি টিম ম্যানেজমেন্ট তাঁকে অনুরোধ করে, কিপিং কি করবেন? এই প্রশ্নের জবাবে এবি বলেছেন, ‘‘আমার উপর ছাড়া হলে বলব, কিপিং করতে চাই না। কিন্তু সবই আলোচনা সাপেক্ষ।’’
শুধু এবি-কে নিয়েই নয়, দক্ষিণ আফ্রিকার চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছেন মর্নি মর্কেল-ও। জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়ে তিনি ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট দলে ঢোকার দাবি জোরাল করে তুলেছেন। ডেল স্টেন চোট সারিয়ে ফিরছেন বলে মর্কেল-কে খেলানো হবে কী করে, তা ঠিক করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। ধরে রাখা যায়, তাদের তিন পেসার হবে স্টেন, কাগিসো রাবাডা এবং ভার্নন ফিল্যান্ডার। যদি মর্কেল-কে খেলাতে হয় এঁদের একজনকে বসাতে হবে নয়তো চার পেসারে খেলতে হবে।
মর্কেল নিজে মজা করে বলে ফেলেছেন, ‘‘উইকেট নিয়ে বেশ ভাল লাগছে। টিম করতে বসলে এ বার নিশ্চয়ই ওরা আমার কথাও ভাববে।’’ এর পর যেটা বলছেন, তা আবার ভারতীয় শিবিরের জন্য সতর্কবার্তা হতে পারে। ‘‘ডেল স্টেন খুব ভাল বল করছে নেটে। ওকে আবার আগের মতো শক্তিশালী দেখাচ্ছে। খুব ফিট দেখাচ্ছে। আরও এক সপ্তাহে ও একদম তরতাজা হয়ে যাবে।’’
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ খেলতে বৃহস্পতিবার কাকভোরে দেশ ছাড়লেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। হোটেল থেকে বেরিয়ে একসঙ্গে টিম বাসে ওঠেন বিরাট কোহালি-অনুষ্কা শর্মা। বিমানবন্দর থেকে ছবি টুইট করেন ভারতীয় পেসাররাও। এমনকী বিমানে ওঠার পরে দেখা যায় ছবি টুইট করেছেন রোহিত শর্মা, মুরলী বিজয়। এ বারের এই ভারতীয় দলকে নিয়ে আশাবাদী অনেকেই। মনে করা হচ্ছে, ভারতীয় পেসাররা চাপে ফেলতে পারবেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে। আশিস নেহরা বলেছেন, যশপ্রীত বুমরা-র ইয়র্কার কাজে দেবে টেস্টেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy