ভারত এ বার নিশ্চয়ই স্বস্তি পাবে। চেতেশ্বর পূজারা-অজিঙ্ক রাহানে ম্যাচটা ধরার আগে মনে হচ্ছিল, পুণেরই চিত্রনাট্য দেখছি আমরা। কিন্তু ওরা দু’জন দাঁড়িয়ে যাওয়ার পর থেকে স্টিভ স্মিথের মুখটা কালো হতে শুরু করল। অস্ট্রেলীয় অধিনায়কের মুড আর ভাল হয়নি। চতুর্থ দিন সকালে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস তাড়াতাড়ি গুটিয়ে গেলেও ততক্ষণে অস্ট্রেলিয়া শিবির অশনি সঙ্কেতটা দেখতে পেয়ে গিয়েছিল। এই ধরনের পিচে দু’শোর কাছাকাছি রান তাড়া করা কিন্তু মোটেও সহজ কাজ নয়। আমার কাছে বিরাট কোহালিদের এই জয়টা ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা জয় হিসেবে থেকে যাবে।
কম রানের ম্যাচ কিন্তু সব সময় বেশ উত্তেজক হয়। অনেকটা দড়ির ওপর দিয়ে হাঁটার মতো। তবে ম্যাচ যতই উত্তেজক হোক না কেন, দু’টো টিমেরই কিন্তু আরও ভাল পিচ প্রাপ্য ছিল। আপনি যদি কোহালি আর স্মিথকে ওদের দ্বিতীয় ইনিংসের আউট নিয়ে প্রশ্ন করেন, তা হলে একই রকম উত্তর পাবেন। চিন্নাস্বামীর এই নতুন পিচ ব্যাটসম্যানদের সামনে সত্যিই খুব শক্ত চ্যালেঞ্জ হয়ে গিয়েছিল।
এই ম্যাচটায় অনেক ট্যাকটিক্যাল ব্যাপার দেখা গেল। প্রথম ইনিংসে নাথন লায়নের লাইন এবং বাউন্সের জবাব ছিল না ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সামনে। দ্বিতীয় ইনিংসে কিন্তু ভারতীয়রা প্রস্তুত হয়েই নেমেছিল। পূজারা অনেক সোজা হয়ে স্টান্স নিয়েছিল। তা ছাড়া দেখলাম পূজারা অফ স্টাম্পে গার্ড নিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে লায়নকে অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে বল ফেলতে হল। যার জবাবে পুজারা ব্যাটটা ওপেন করে অফ সাইডের ফাঁক ফোঁকরে বল পাঠিয়ে সমানে রান তুলে নিল। রাহানে সুইপ করতে ভয় পায়নি এবং ওর ইনিংসে সুইপটা একটা বড় অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
আবার ভারতীয়দের বোলিংয়ের সময় অশ্বিনকে দেখলাম লুপটা খুব ভাল কাজে লাগাচ্ছে। বল উঁচু থেকে ফেলে বাউন্সটা আদায় করে নিচ্ছিল। জাডেজা হয়তো বেশি ওভার পায়নি, কিন্তু তাতেই যা করার করে দিল। আমাদের দুই পেসারও নিজেদের কাজটা করে গেল।
কে এল রাহুলকেও কোনও ভাবে ভুলে গেলে চলবে না। এই টেস্টে সবচেয়ে স্বচ্ছন্দ দেখিয়েছে ওকে। শুধু সবার চেয়ে বেশি রান করেছে বলেই নয়, ওর ব্যাটিংটাও খুব সাবলীল ছিল। বেঙ্গালুরু টেস্টের প্রথম দিন রাহুল যে ভাবে অস্ট্রেলীয় স্পিনারদের সামলাল, তা থেকে শেখার আছে। রাহুলের শেখার পর্ব চলছে এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে খেলে ওর ব্যাটিংয়ের ধারটা আরও বাড়বে। রাহুলের ব্যাটিং ভারতীয় জাহাজকে ঠিক দিকে নিয়ে গেল। আর পূজারা-অশ্বিন সেই জাহাজকে উল্টে যেতে দেয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy