Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

রবি কিন-কে তাড়াতাড়ি দলে চান শেরিংহ্যাম

এমনিতে কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে দলের খেলা ‘প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে’, শুক্রবার ড্রেসিংরুমে ফিরেই জানিয়ে দিয়েছিলেন টেডি। পিঠ চাপড়ে দেন তিন ভারতীয় ফুটবলারের, হিতেশ শর্মা, দেবজিৎ মজুমদার এবং প্রবীর দাশের।

নজরে: শেরিংহ্যামের চোখ এখন পরের ম্যাচে। ফাইল চিত্র

নজরে: শেরিংহ্যামের চোখ এখন পরের ম্যাচে। ফাইল চিত্র

রতন চক্রবর্তী
কোচি শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৬
Share: Save:

তাঁর টিমের এক নম্বর স্ট্রাইকার রবি কিনকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য ফোন করলেন টেডি শেরিংহ্যাম। এটিকে কোচের আশা, যুবভারতীতে পরের ম্যাচে না পাওয়া গেলেও পয়লা ডিসেম্বর টিমের এক নম্বর স্ট্রাইকারকে হয়তো মাঠে নামিয়ে দিতে পারবেন।

এমনিতে কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে দলের খেলা ‘প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে’, শুক্রবার ড্রেসিংরুমে ফিরেই জানিয়ে দিয়েছিলেন টেডি। পিঠ চাপড়ে দেন তিন ভারতীয় ফুটবলারের, হিতেশ শর্মা, দেবজিৎ মজুমদার এবং প্রবীর দাশের। কিন্তু শনিবার সকালে টিম হোটেলে দাঁড়িয়ে একেবারে বাস্তবের জমিতে তিনি। আনন্দবাজারকে একান্তে বলে দিলেন, ‘‘রবি থাকলে ম্যাচটা আমরা জিততামই। ওদের আরও চাপে ফেলে দিত আমার টিম। আমি গতকাল রাতে ম্যাচের পরে ফোন করেছিলাম। কথা হয়েছে। মনে হচ্ছে নভেম্বরের শেষেই কলকাতায় চলে আসবে। ইঞ্জেকশন আর ট্রিটমেন্ট চলছে। ফিট থাকলে নামিয়ে দেব।’’ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকারের এর পরের মম্তব্যটা মনে হল আরও বাস্তবোচিত। ‘‘কেরলের থেকে আমরা অনেকটা এগিয়ে ছিলাম। ওদের দুই স্ট্রাইকারকে আমরা নড়তে দিইনি। গোলের সুযোগও আমরা বেশি তৈরি করেছি। বক্সিং রিং হলে জিততে পারতাম। কিন্তু এটা তো ফুটবল। যতই ভাল খেলো, গোল করতে হবে। আর গোলের জন্য রবিকে দরকার।’’

প্রিমিয়ার লিগে ১৪৭টা গোল আছে টেডি-র। ইংল্যান্ডের হয়ে দু’টো বিশ্বকাপ খেলেছেন। গোল করে জিতিয়েছেন বহু ম্যাচ। জোসে ডস ব্র্যাঙ্কো বা ইয়র্ডি মন্টেলের গোল নষ্টের সময় রিজার্ভ বেঞ্চে দাঁড়িয়ে রীতিমতো হাত-পা ছোঁড়াছুড়ি করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। বলেও ফেললেন, ‘‘আমরা কেরলকে দেখিনি। কিন্তু যাদের চিনি, তাদের কয়েক জন ফুটবলারের জন্য হোমওয়ার্ক করেছিলাম। তবে যেটা ভাল লেগেছে তা হল, আমি যে ভাবে ছেলেদের খেলতে বলেছিলাম, সে রকম খেলেছে। গোলের জন্য পরে রবিন সিংহকে নামালাম। প্রথম ম্যাচ জিতে থাকলে টিমের মনোবল বেড়ে যায়। দুর্ভাগ্য, এক পয়েন্ট নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।’’

দুবাইয়ে তিন সপ্তাহের প্রস্তুতির পরে ফিরে এসে রবি কিনের মতো মহাতারকা যাঁদের প্রশংসা করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে প্রথম ম্যাচেই হিতেশ শর্মা চমকে দিয়েছেন। চণ্ডীগড়ের এই অচেনা মিডিও-কে নিয়ে দেখা গেল প্রশংসায় পঞ্চমুখ এটিকে কোচ। বললেন, ‘‘ছেলেটার বয়স ২৫ হলে দেখবেন ভারতের সেরা মিডিও হবে।’’ উদ্বোধনী ম্যাচে বের্বাতভ-হিউমদের বিরুদ্ধে ম্যাচে হিতেশকে ‘হোল্ডিং মিডিও’ হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন টেডি। বল ধরে লিংডোর সঙ্গে এক-দুই পাস খেলে হিতেশ তা পাঠাচ্ছিলেন উইং-এ। সেখান থেকেই ব্র্যাঙ্কো আক্রমণ তুলছিলেন কেরল বক্সে।

রবি কিন না থাকার আক্ষেপ, গোল করতে না পারা এবং তিন পয়েন্ট না পাওয়া নিয়ে আফসোস থাকলেও রক্ষণ ও মাঝমাঠ নিয়ে সন্তুষ্ট টেডি। বুলগেরিয়ার গোল মেশিন কেরল স্ট্রাইকার বের্বাতভ-কে নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। এক ফুটবলার বলছিলেন, ম্যাচের আগে টিম মিটিং-এ কোচ বলেছিলেন, ‘‘বের্বাতভ পাঁচ মিনিট দৌড়বে। তার পর বিশ্রাম নেবে। ওই পাঁচ মিনিটে কিন্ত অনেক কিছু করে দিতে পারে। ওকে খেলতে দেওয়া যাবে না। আমরা সেটাই করেছি।’’ এ দিন একান্তে কথা বলার সময় সে সব কথা প্রকাশ্যে আনেননি ব্রিটিশ কোচ। তবে বললেন, ‘‘বের্বাতভ দারুণ ফুটবলার। ওকে আটকানোর জন্য আমার রক্ষণ যথেষ্ট হোমওয়ার্ক করে নেমেছিল। পুরো ডিফেন্স আমার স্ট্র্যাটেজি মেনে খেলেছে।’’

টেডি যখন কথা বলছিলেন, তখন পুরো টিম চলে গেল হোটেলের সুইমিং পুলে। আশুতোষ মেহতা, জয়েস রানের চোট থাকলেও তাঁরা গেলেন। শুধু কার্ল বেকারকে দেখা গেল খুঁড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটছেন। টেডি বললেন, ‘‘আশুতোষ ফিরবে পরের সপ্তাহেই। তবে ওর পজিসনে প্রবীর ভাল খেলেছে। জয়েশের আরও সময় লাগবে। বেকারকেও ফেরাতে দু’তিন সপ্তাহ লাগবে। তবে রবি এলে টিমটা বদলে যাবে।’’

রবি ফিরলে ইয়র্ডি আর অধিনায়ক থাকবেন না তা হলে? ব্রিটিশ কোচের মনোভাবটা বেরিয়ে পড়ল মুহূর্তে। ‘‘আমার টিমে যে যে জায়গায় খেলবে, সে-ই সেখানকার লিডার। রবিকে দরকার গোলের জন্য।’’

শনিবার রাতেই শহরে ফিরছে এটিকে। সোমবার থেকে পুণে ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE