Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
cricket

ক্রিকেট থেকে বহুদূরে অসংলগ্নতার অন্ধকারে তলিয়ে গিয়েছেন অতীতের ভয়ঙ্করতম ফাস্ট বোলার

৫৫ বছর বয়সি প্যাটারসন তখন থাকেন জামাইকায় ছোট্ট একটা একতলা বাড়িতে। ক্রিকেট থেকে বহুদূরে। জানেনই না মেয়েদের ক্রিকেট এতদূর এগিয়েছে! ক্রিকেট থেকে সরে আসার পরে কী করেননি তিনি! পরিবার-বিচ্ছিন্ন হয়ে আশ্রয় হারিয়ে এক সময় ভবঘুরের মতো জীবনও কাটিয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৯ ১০:৫৪
Share: Save:
০১ ১৩
নিজেই বিস্মৃত নিজের সোনালি অতীত। জানেন না আধুনিক ক্রিকেটের খুঁটিনাটিও। তিনি সচিন তেন্ডুলকর-সহ একাধিক বিশ্বমানের ব্যাটসম্যানের এক সময়ের ত্রাস, পৃথিবীর অন্যতম দ্রুতগতির বোলার। তিনি প্যাট্রিক প্যাটারসন। প্রতিভাবান এই ক্যারিবিয়ান ফাস্ট বোলার অকালেই ঝরে গিয়েছেন ক্রিকেট-বৃত্ত থেকে।

নিজেই বিস্মৃত নিজের সোনালি অতীত। জানেন না আধুনিক ক্রিকেটের খুঁটিনাটিও। তিনি সচিন তেন্ডুলকর-সহ একাধিক বিশ্বমানের ব্যাটসম্যানের এক সময়ের ত্রাস, পৃথিবীর অন্যতম দ্রুতগতির বোলার। তিনি প্যাট্রিক প্যাটারসন। প্রতিভাবান এই ক্যারিবিয়ান ফাস্ট বোলার অকালেই ঝরে গিয়েছেন ক্রিকেট-বৃত্ত থেকে।

০২ ১৩
শুধু তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন বলে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছেন তাঁকে— এই কথা শোনার পরে প্যাটারসন কথা বলেছিলেন এক ভারতীয় সাংবাদিকের সঙ্গে। কার্যত ওই সাংবাদিকই প্যাটারসনকে খুঁজে বের করেছিলেন অন্ধকার থেকে।

শুধু তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন বলে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছেন তাঁকে— এই কথা শোনার পরে প্যাটারসন কথা বলেছিলেন এক ভারতীয় সাংবাদিকের সঙ্গে। কার্যত ওই সাংবাদিকই প্যাটারসনকে খুঁজে বের করেছিলেন অন্ধকার থেকে।

০৩ ১৩
ক্যারিবিয়ান ফাস্ট বোলার বললে প্যাটারসনের নাম অবশ্য সহজে মনে পড়ে না ক্রিকেটদর্শকদের। তাঁর জন্ম ১৯৬১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর, জামাইকায়। আটের দশকের মাঝামাঝি থেকে নয়ের দশকের গোড়া অবধি ছিল তাঁর সংক্ষিপ্ত কেরিয়ার।

ক্যারিবিয়ান ফাস্ট বোলার বললে প্যাটারসনের নাম অবশ্য সহজে মনে পড়ে না ক্রিকেটদর্শকদের। তাঁর জন্ম ১৯৬১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর, জামাইকায়। আটের দশকের মাঝামাঝি থেকে নয়ের দশকের গোড়া অবধি ছিল তাঁর সংক্ষিপ্ত কেরিয়ার।

০৪ ১৩
টেস্টে আত্মপ্রকাশ ১৯৮৬ সালে, সাবাইনা পার্কে। মাইকেল হোল্ডিংয়ের জায়গায় তিনি সুযোগ পেয়েছিলেন। অবির্ভাবেই সাত উইকেট। সহজেই দলের নিয়মিত স্কোয়াডে জায়গা পেয়ে যান। প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক গ্রাহাম গুচ বলেছিলেন, তিনি প্যাটারসনের গতির মুখোমুখি হতে ভয় পেতেন।

টেস্টে আত্মপ্রকাশ ১৯৮৬ সালে, সাবাইনা পার্কে। মাইকেল হোল্ডিংয়ের জায়গায় তিনি সুযোগ পেয়েছিলেন। অবির্ভাবেই সাত উইকেট। সহজেই দলের নিয়মিত স্কোয়াডে জায়গা পেয়ে যান। প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক গ্রাহাম গুচ বলেছিলেন, তিনি প্যাটারসনের গতির মুখোমুখি হতে ভয় পেতেন।

০৫ ১৩
নিজের সময়ে প্যাটারসন ছিলেন বিশ্বের দ্রুততম বোলার। তিনি যত বোলারের মুখোমুখি হয়েছেন, প্যাটারসন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ভয়ঙ্কর ছিলেন, বলেছেন তেন্ডুলকর। মাত্র ২৮টি টেস্টে প্যাটারসনের শিকার ৯৩টি উইকেট। ৫৯ ওয়ানডে খেলে পেয়েছেন ৯০ টি উইকেট। ১৬১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে উইকেট পেয়েছেন ৪৯৩টি।

নিজের সময়ে প্যাটারসন ছিলেন বিশ্বের দ্রুততম বোলার। তিনি যত বোলারের মুখোমুখি হয়েছেন, প্যাটারসন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ভয়ঙ্কর ছিলেন, বলেছেন তেন্ডুলকর। মাত্র ২৮টি টেস্টে প্যাটারসনের শিকার ৯৩টি উইকেট। ৫৯ ওয়ানডে খেলে পেয়েছেন ৯০ টি উইকেট। ১৬১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে উইকেট পেয়েছেন ৪৯৩টি।

০৬ ১৩
১৯৮৮-৮৯ সালে বড়দিনের সময়ে অস্ট্রেলিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট ম্যাচটি প্যাটারসনের জীবনে উল্লেখযোগ্য। মেলবোর্নের মাঠে প্যাটারসনকে বাউন্সার দিয়েছিলেন স্টিভ ওয়। এর জেরে অস্ট্রেলিয়ার সাজঘরে গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছিলেন প্যাটারসন, তিনি একাই শেষ করবেন অজিদের ইনিংস।

১৯৮৮-৮৯ সালে বড়দিনের সময়ে অস্ট্রেলিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট ম্যাচটি প্যাটারসনের জীবনে উল্লেখযোগ্য। মেলবোর্নের মাঠে প্যাটারসনকে বাউন্সার দিয়েছিলেন স্টিভ ওয়। এর জেরে অস্ট্রেলিয়ার সাজঘরে গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছিলেন প্যাটারসন, তিনি একাই শেষ করবেন অজিদের ইনিংস।

০৭ ১৩
কথা রেখেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪০০ রান তাড়া করতে গিয়ে ১১৪ রানে অল আউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। প্যাটারসন পেয়েছিলেন ৫ উইকেট। গোটা টেস্টে তাঁর শিকার ছিল ৯।

কথা রেখেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪০০ রান তাড়া করতে গিয়ে ১১৪ রানে অল আউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। প্যাটারসন পেয়েছিলেন ৫ উইকেট। গোটা টেস্টে তাঁর শিকার ছিল ৯।

০৮ ১৩
শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ১৯৯২-৯৩ সালের অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে বাদ পড়েন প্যাটারসন। এরপর তাঁর কে‌রিয়ারও গুটিয়ে যায়। প্যাটারসনের শেষ টেস্ট ছিল ১৯৯৩-এর নভেম্বরে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। শেষ ওয়ানডে-ও খেলেছিলেন ওই বছরেরই ফেব্রুয়ারিতে, পাকিস্তানের বিপক্ষে।

শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ১৯৯২-৯৩ সালের অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে বাদ পড়েন প্যাটারসন। এরপর তাঁর কে‌রিয়ারও গুটিয়ে যায়। প্যাটারসনের শেষ টেস্ট ছিল ১৯৯৩-এর নভেম্বরে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। শেষ ওয়ানডে-ও খেলেছিলেন ওই বছরেরই ফেব্রুয়ারিতে, পাকিস্তানের বিপক্ষে।

০৯ ১৩
অবসরের পরে তিনি কার্যত হারিয়ে যান। পরিবার বা ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটও কোনও খোঁজ পায়নি তাঁর। দীর্ঘ সন্ধানের পরে ২০১৭ সালে জামাইকার কিংস্টোনে প্যাটারসনকে খুঁজে পান এক ভারতীয় সাংবাদিক।

অবসরের পরে তিনি কার্যত হারিয়ে যান। পরিবার বা ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটও কোনও খোঁজ পায়নি তাঁর। দীর্ঘ সন্ধানের পরে ২০১৭ সালে জামাইকার কিংস্টোনে প্যাটারসনকে খুঁজে পান এক ভারতীয় সাংবাদিক।

১০ ১৩
৫৫ বছর বয়সি প্যাটারসন তখন থাকেন জামাইকায় ছোট্ট একটা একতলা বাড়িতে। ক্রিকেট থেকে বহুদূরে। জানেনই না মেয়েদের ক্রিকেট এতদূর এগিয়েছে! ক্রিকেট থেকে সরে আসার পরে কী করেননি তিনি! পরিবার-বিচ্ছিন্ন হয়ে আশ্রয় হারিয়ে এক সময় ভবঘুরের মতো জীবনও কাটিয়েছেন।

৫৫ বছর বয়সি প্যাটারসন তখন থাকেন জামাইকায় ছোট্ট একটা একতলা বাড়িতে। ক্রিকেট থেকে বহুদূরে। জানেনই না মেয়েদের ক্রিকেট এতদূর এগিয়েছে! ক্রিকেট থেকে সরে আসার পরে কী করেননি তিনি! পরিবার-বিচ্ছিন্ন হয়ে আশ্রয় হারিয়ে এক সময় ভবঘুরের মতো জীবনও কাটিয়েছেন।

১১ ১৩
ভারতীয় সাংবাদিক যখন দেখা করেন, তখন প্যাটারসনের মানসিক স্থিতিও টলমল। ক্রিকেটের স্মৃতি আবছা। ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে মনে করতে পেরেছিলেন শ্রীকান্ত, অরুণলাল, আজহারউদ্দিনকে এবং খুব ক্ষীণ ভাবে সচিন তেন্ডুলকরকে।

ভারতীয় সাংবাদিক যখন দেখা করেন, তখন প্যাটারসনের মানসিক স্থিতিও টলমল। ক্রিকেটের স্মৃতি আবছা। ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে মনে করতে পেরেছিলেন শ্রীকান্ত, অরুণলাল, আজহারউদ্দিনকে এবং খুব ক্ষীণ ভাবে সচিন তেন্ডুলকরকে।

১২ ১৩
অথচ একদিন তাঁর ডেলিভারির মুখোমুখি হতে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যান্ড্রু হাডসনের হাত থেকে ব্যাটই উড়ে গিয়েছিল। সহযোদ্ধা উইকেটরক্ষক দুজোঁ বলেছিলেন, প্যাটারসনের গতিময় বল গ্লাভসবন্দি করতেই সবথেকে বেশি সমস্যা হত। অ্যান্ডি রবার্টস, মাইকেল হোল্ডিং থেকে শুরু করে ম্যালকম মার্শাল বা কার্টলে অ্যামব্রোজ— সবাইকে মাথায় রেখেই এই দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন দুজোঁ।

অথচ একদিন তাঁর ডেলিভারির মুখোমুখি হতে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যান্ড্রু হাডসনের হাত থেকে ব্যাটই উড়ে গিয়েছিল। সহযোদ্ধা উইকেটরক্ষক দুজোঁ বলেছিলেন, প্যাটারসনের গতিময় বল গ্লাভসবন্দি করতেই সবথেকে বেশি সমস্যা হত। অ্যান্ডি রবার্টস, মাইকেল হোল্ডিং থেকে শুরু করে ম্যালকম মার্শাল বা কার্টলে অ্যামব্রোজ— সবাইকে মাথায় রেখেই এই দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন দুজোঁ।

১৩ ১৩
টানা ছ’বছরের চেষ্টার পরে ভারতীয় সাংবাদিক খুঁজে পেয়েছিলেন প্যাটারসনকে। বিদায় নেওয়ার সময় তিনি বলেছিলেন, যোগাযোগ রাখবেন অতীতের অন্যতম ভয়ঙ্কর এই ফাস্ট বোলারের সঙ্গে। কিন্তু উত্তর পেয়েছিলেন, ‘বিশ্বাস করুন, সেটা আমার জন্য খুব সোজা কথা নয়। কারণ আমার ফোন ওরা নিয়মিত ট্যাপ করে…বিশ্বাস করুন আপনি!’ প্রাক্তন ফাস্ট বোলারের কথায় অসংলগ্নতার নজির এখন বিরল নয়। দাবি অনেকেরই।  (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)

টানা ছ’বছরের চেষ্টার পরে ভারতীয় সাংবাদিক খুঁজে পেয়েছিলেন প্যাটারসনকে। বিদায় নেওয়ার সময় তিনি বলেছিলেন, যোগাযোগ রাখবেন অতীতের অন্যতম ভয়ঙ্কর এই ফাস্ট বোলারের সঙ্গে। কিন্তু উত্তর পেয়েছিলেন, ‘বিশ্বাস করুন, সেটা আমার জন্য খুব সোজা কথা নয়। কারণ আমার ফোন ওরা নিয়মিত ট্যাপ করে…বিশ্বাস করুন আপনি!’ প্রাক্তন ফাস্ট বোলারের কথায় অসংলগ্নতার নজির এখন বিরল নয়। দাবি অনেকেরই। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE