Advertisement
E-Paper

ইডেনে আজ ডালমিয়া নেই, আবার আছেনও

ইডেনে বড় ম্যাচ মানেই তিনি। এত দিন তাই জানত ইডেন। সেই ইডেনে ম্যাচ আছে। কিন্তু তিনি নেই। থাকছে শুধু তাঁর ছবি। ক্লাব হাউসে, মাঠে, গ্যালারিতে, প্রতিটি প্রবেশপথে।

রাজীব ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৩৬

ইডেনে বড় ম্যাচ মানেই তিনি। এত দিন তাই জানত ইডেন।

সেই ইডেনে ম্যাচ আছে। কিন্তু তিনি নেই। থাকছে শুধু তাঁর ছবি। ক্লাব হাউসে, মাঠে, গ্যালারিতে, প্রতিটি প্রবেশপথে।

জগমোহন ডালমিয়া।

যাঁর অঙ্গুলিহেলন, ফোন, মিটিংয়ের পর মিটিং ছাড়া ইডেনে বড় ম্যাচ ভাবাই যেত না।

সেই জগমোহন ডালমিয়াকে ছাড়াই বৃহস্পতিবার ইডেনে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।

ডালমিয়ার উত্তরসূরি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে বড় পরীক্ষা ছাড়া কী? সৌরভ নিজে অবশ্য তা মানতে রাজি নন। বুধবার বিকেলে ইডেনের মাঠে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘আমার আবার কীসের পরীক্ষা? আমি কি একা? সিএবি-র গোটা টিম আমার সঙ্গে রয়েছে। ম্যাচ সংগঠনের ব্যাপারে প্রত্যেকেই এক একজন বিশেষজ্ঞ। বরং আমিই ওদের চেয়ে অনেক কম জানি। দেখে নেবেন, সবার টিমওয়ার্কেই ম্যাচটা উতরে যাবে।’’

ম্যাচ ঠিক ভাবে উতরে যাওয়াটা যেমন সিএবি-র নতুন প্রজন্মের সংগঠকদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ, তেমনই এই ম্যাচে জগমোহন ডালমিয়াকে স্মরণ করাটাও কম বড় কাজ বলে মনে করছে না সিএবি-র একাংশ। যে ইডেনকে তাঁর মন্দির মনে করতেন জগমোহন ডালমিয়া, সেই ইডেনকে কাল ডালমিয়াময় করে তোলার সব ব্যবস্থা প্রায় পাকা।

ক্লাব হাউসের উল্টো দিক থেকে শুরু করে প্রতিটি প্রবেশ পথে, টিকিটে, কর্মকর্তা, আমন্ত্রিতদের দেওয়া ব্যাজে ডালমিয়া তো থাকছেনই। এ ছাড়াও ম্যাচ শুরুর আগে তাঁকে নিয়ে তিন মিনিটের মিনি ডকুমেন্টারি ছবিও দেখাবে স্টার স্পোর্টস। সেই ডকুমেন্টারি জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখানোর পরই দুই দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে সারা ইডেন দু’মিনিটের নীরবতা পালন করবে, এমনই পরিকল্পনার কথা শোনা গেল সিএবি-তে। থাকবেন তাঁর পরিবারের সদস্যরাও।

নিখুঁত ম্যাচ আয়োজন করে জগমোহন ডালমিয়ার আত্মাকে শান্তি দেওয়া যেমন মাঠের বাইরে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর দলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ, তেমনই মাঠের মধ্যে চ্যালেঞ্জটা মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ও তাঁর দলের। যদিও সিরিজ হাতছাড়া করেই শহরে ঢুকেছে ধোনির দল, কিন্তু সিরিজ ০-৩ হারলে তার চেয়ে বড় অসম্মানজনক আর কী হতে পারে? বৃহস্পতিবার ইডেনের ম্যাচ জিতে অন্তত সেই লজ্জার হাত থেকে বাঁচানোটাই ধোনিদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যার জন্য মরিয়া ‘ক্যাপ্টেন কুল’।

এ দিন সকালে ইডেনে ঢুকেই মাঝের বাইশ গজের চরিত্রটা পরখ করে নিয়ে হাসিমুখেই সেই অঞ্চল ছেড়ে নেটের দিকে যেতে দেখা গেল ভারত অধিনায়ককে। শোনা গেল উইকেট দেখে নাকি তিনি খুশি। যে রকম একটা লড়াকু ইনিংস খেলে নিজেকে লড়াইয়ে টিকিয়ে রাখতে চান ধোনি, সে রকমই ইনিংস খেলতে না কি ইডেনের এই উইকেট তাঁকে সাহায্য করবে। কিউরেটরদের কাছ থেকে এমন আশ্বাস পেয়ে তিনি বেশ খুশি।

ক্যাপ্টেন কুল অবশ্য তেমন চাপ নেন না কখনওই। তাই কেরিয়ারের এই দুঃসময়েও তাঁকে নেটে ঝাঁপিয়ে পড়ে পাগলের মতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাট করতে দেখা গেল না। আগেই দলের টেল এন্ডার ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যাট করতে পাঠিয়ে নিজে নামলেন বেশ খানিকক্ষণ পরে। এমন কিছু বেশি সময় ব্যাটও করলেন না। বৃহস্পতিবার ইডেনেই এই লড়াইয়ে সরাসরি নামার সংকল্প নিলেন বোধহয়। ইডেন ছেড়ে বেরনোর সময় এক ভক্ত এক টিপিক্যাল ধোনি-ঝড়ের আবদার করতে তাঁর দিকে তাকিয়ে শুধু হাসলেন। আর কিছুই না।

বৃহস্পতিবার ম্যাচ জিততে অজিঙ্ক রাহানে আর স্টুয়ার্ট বিনিকে প্রথম এগারোয় রাখবেন কি? বুধবার প্রস্তুতিতে এঁদের দু’জনকে বেশ ভাল রকম ঘাম ঝরাতে দেখে তেমন মনে হওয়াই স্বাভাবিক। আগের ম্যাচে রাহানেকে না নামানোটা যে চরম ভুল হয়েছিল, তা বিশেষজ্ঞরা অনেকেই বলেছেন। ইডেনে তিন স্পিনারে না নামার পক্ষেও অনেকে। সে জন্যই বোধহয় বিনিকে নামানোর ভাবনা।

অন্য দিকে সিরিজ জিতে যাওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে বেশ ঢিলেঢালা ভাব। যদিও বেশ শৃঙ্খলাবদ্ধ, তবে এ দিন সকালে তাদের প্র্যাকটিস হল মেরেকেটে ঘণ্টা দেড়েক। তা-ও অনেককে ছাড়াই। ডে’ভিলিয়ার্স তো মাঠেই এলেন না। হোটেলেই বিশ্রাম নিলেন।

বৃহস্পতিবার ইডেনে ম্যাচ নিখুঁত আয়োজন করে যেমন জগমোহন ডালমিয়ার আত্মাকে শান্তি দিতে চাইছে সিএবি, তেমনই তাঁর ঘরের মাঠে ম্যাচটা জিতে প্রয়াত বোর্ড প্রেসিডেন্টকে শ্রদ্ধার্ঘ্য দিতে চাইছেন ধোনিরাও।

এ জন্যই কাল ইডেন যতটা না হয়ে উঠবে ক্রিকেটময়, তার চেয়েও হয়তো বেশি হয়ে উঠবে জগমোহন ডালমিয়াময়।

rajib ghosh dalmiya eden gardens eden india vs south africa match
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy