Advertisement
E-Paper

Tokyo Olympics 2020: ব্রোঞ্জের ছবি অস্ত্র ছিল কোচের, ‘ব্রাত্য’ই ত্রাতা

শুরুতেই জার্মানি ১-০ এগিয়ে যাওয়ার পরে ভারতের হয়ে সমতা ফেরান সিমরনজিৎ। এর পরে আরও একটি গোল করে পদক নিশ্চিত করেন ২৪ বছর বয়সি এই খেলোয়াড়।

কৌশিক দাশ

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২১ ০৭:০৪
নায়ক: জার্মানির বিরুদ্ধে গোল করার পরে সিমরনজিৎ। রয়টার্স

নায়ক: জার্মানির বিরুদ্ধে গোল করার পরে সিমরনজিৎ। রয়টার্স

কোভিড-১৯ অতিমারির জন্য নতুন নিয়মটা চালু না হলে তাঁর এ বারের অলিম্পিক্সে খেলাই হত না। আর সেই সিমরনজিৎ সিংহের জোড়া গোলই বড় ভূমিকা নিল ৪১ বছর পরে ভারতের অলিম্পিক্স পদক জেতার নেপথ্যে।

শুরুতেই জার্মানি ১-০ এগিয়ে যাওয়ার পরে ভারতের হয়ে সমতা ফেরান সিমরনজিৎ। এর পরে আরও একটি গোল করে পদক নিশ্চিত করেন ২৪ বছর বয়সি এই খেলোয়াড়। অথচ এই সিমরনজিতের এ বার অলিম্পিক্সে খেলার কথাই নয়। ভারতের যে ১৬ জনের দল বাছা হয়েছিল, তাতে কিন্তু সুযোগ পাননি তিনি। ধরেই নিয়েছিলেন, টোকিয়ো যাওয়া হচ্ছে না। কিন্তু শেষ মুহূর্তে নিয়মে একটা পরিবর্তন আনে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আই ও সি)। কোভিডের জন্য নিয়ম হয়, বাড়তি দু’জন খেলোয়াড় সঙ্গে নিয়ে যাওয়া যাবে। ফলে, ১৬ জনের দল গিয়ে দাঁড়ায় ১৮। আর এই বাড়তি সদস্য হিসেবেই অলিম্পিক্স দলের সঙ্গে যুক্ত হন বৃহস্পতিবারের নায়ক সিমরন।

কী মনে হয়েছিল যখন দলে সুযোগ পাননি? ঘণ্টা দুয়েক আগে শেষ হয়েছে ভারত বনাম জার্মানির ব্রোঞ্জ ম্যাচের লড়াই। তার পরে টোকিয়ো থেকে বাছাই করা প্রচার মাধ্যমের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে মুখোমুখি হলেন দিনের নায়ক। সিমরনজিৎ বলছিলেন, ‘‘একটু তো খারাপই লেগেছিল। সে দিন রাতে কোচের বার্তা পাই ফোনে। উৎসাহ দিয়েছিলেন স্যর।’’ এর কিছু দিন পরেই নতুন নিয়ম চালু এবং দলে সুযোগ সিমরনজিতের।

কোচ গ্রাহাম রিড এই নিয়ে কী বলছেন? সিমরনের পাশে বসে ভারতীয় হকি দলের কোচ বলে উঠলেন, ‘‘খেলাধুলোর একটা ভাল দিক হল, কখনও না কখনও ঠিক সুযোগ আসবে। আর সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে হবে। সিমরন সেটাই করেছে।’’ এই তরুণকে খেলানো নিয়ে কোচ বলছেন, ‘‘টোকিয়োর প্রচণ্ড গরমের কথা মাথায় রেখে আমরা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সবাইকে খেলানোর চেষ্টা করেছি। যে রকম সিমরনের ক্ষেত্রে হয়েছে।’’

আর ব্রাত্য থেকে নায়ক হয়ে ওঠা এই খেলোয়াড় নিজে কী বলছেন? সিমরনজিতের কথায়, ‘‘কোচ স্যর সুযোগ দিয়েছেন, আমার উপরে আস্থা রেখেছেন। ইচ্ছে ছিল, নিজেকে প্রমাণ করার। সুযোগটা কাজে লাগিয়ে বোঝাতে পেরেছি, আমিও এই মঞ্চে খেলার যোগ্য।’’ পাশ থেকে হাসতে হাসতে কোচ বলে ওঠেন, ‘‘আমি তো ওর থেকে তিনটে গোল চেয়েছিলাম। ও দুটো করেছে। আমি মোটেও খুশি নই!’’ দুটো গোল করার জন্য সিমরনজিৎ অবশ্য কৃতিত্ব দিতে চান সতীর্থদের। বলছেন, ‘‘গোলের কৃতিত্ব তারও থাকে যে প্রথমে আক্রমণটা শুরু করছে। আমার একার নয়।’’

সেমিফাইনালে এ বারের সোনাজয়ী বেলজিয়ামের কাছে হার। তার পরে ব্রোঞ্জ পদকের জন্য জার্মানির মতো শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীর সামনে পড়া। কতটা কঠিন ছিল এই অবস্থায় দলকে তাতিয়ে তোলা?

মনপ্রীত সিংহ, রূপিন্দর সিংহদের তাতিয়ে তুলতে কোচ একটা বিশেষ রাস্তা নিয়েছিলেন। এ দিন খেলতে যাওয়ার আগে দলের সবার সামনে ব্রোঞ্জ পদকের ছবি তুলে ধরেন প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় খেলোয়াড় রিড। এবং বলেন, ‘‘কল্পনা করো এই পদকটা তোমরা গলায় ঝুলিয়ে দেশে ফিরবে। এই কল্পনাটা যেন সত্যি হয়।’’

সেই ভাবনাটা বাস্তবে বদলে দিয়েই এ দিন মাঠ ছাড়েন মনপ্রীতরা। দু’বছর ধরে কোচ হিসেবে যাঁদের নিয়ে কাজ করেছেন রিড। কোচের মন্তব্য, ‘‘সেমিফাইনালে হারের পরে ছেলেরা যে ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাতেই বোঝা যায় ওদের মানসিক শক্তি কতটা। মানসিক শক্তির বিচারে ওদের দশে নয় দেব। এই দলটার সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত।’’

India hockey Tokyo Olympics 2020
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy