স্মৃতি: স্টিভ-সৌরভের সেই ঐতিহাসিক টসের রোমাঞ্চ কি হারিয়ে যাবে?
টস করতে এসে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের অপেক্ষায় স্টিভ ও!
ইডেনে সতেরো বছর আগের সেই নাটক ভোলার নয়। ভারত অধিনায়ক বলেছিলেন, ব্লেজারটা পরতে ভুলে যাওয়ায় বিলম্ব।
তবে স্টিভের বিরক্তি দেখে মজা পেয়েছিলেন সৌরভ। তাঁর মনে হয়েছিল, প্রতিপক্ষ অধিনায়ককে চটিয়ে দিলে ম্যাচে সুবিধা পাওয়া যেতে পারে। তাই পরে একই কাণ্ড করেছেন ইচ্ছে করেই।
টেস্ট ক্রিকেটের উপকথা লেখা হলেই ‘টস’ যে তার বর্ণময় এক চরিত্র হয়ে উঠবে সে আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অথচ কী আশ্চর্য, ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসি-তে এখন টস তুলে দেওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। এমনকী একাধিক দেশ নাকি এই প্রস্তাবের পক্ষেই সায় দিয়েছে।
আইসিসি-র যুক্তিটা কী? নিজেরে দেশে খেলা থাকলে সে দেশের অধিনায়ক সব সময়ই পছন্দের পিচ বানায়। তাই সফরকারী দেশের অধিনায়ককে অন্তত একটা সুবিধা দেওয়া উচিত বলে মনে করা হচ্ছে। আর সেটা দেওয়া হতে পারে ‘টস’ তুলে দিয়ে। যাতে সফরকারী অধিনায়কের কাছে সব সময়ই আগে ব্যাট বা ফিল্ডিং করার স্বাধীনতাটুকু থাকে। প্রাক্তন দুই অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক রিকি পন্টিং আর স্টিভ ও-র কিন্তু প্রস্তাবটা বেশ পছন্দই হয়েছে। তাঁদের কথা, সত্যিই তো, এটা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করাই যায়। আর দশ পা এগিয়ে কিংবদন্তি ক্যারিবিয়ান বোলার মাইকেল হোল্ডিং আবার আইসিসি-র হয়েই ব্যাট ধরে ফেলেছেন। তাঁর যুক্তি, ঠিকই তো ভাবা হচ্ছে। লড়াইটা সত্যিকারের সেয়ানে-সেয়ানে করতে এই সুবিধাটুকু সফরকারী অধিনায়ক পেলে তো ভালই।
নস্টালজিয়া ও ক্রিকেট রোম্যান্টিসিসজমে আসক্ত প্রাক্তনরা আবার আইসিসি-র এ হেন ভাবনার কথা শুনে একেবারে রে রে করে উঠেছেন। তাঁদের মনে হচ্ছে, টেস্ট ম্যাচ শুরুর আগেই তার সব চেয়ে মোহিনী ভাবনা, ‘টস কে জিতল’ প্রশ্নটাই তো হারিয়ে যাবে তা হলে ক্রিকেট থেকে। এবং আর কী কেউ বলবে, সেই দলেই প্রকৃত বীরেরা বাস করে, যারা বিদেশ থেকে ট্রফি নিয়ে আসে।
সুনীল মনোহর গাওস্কর থেকে সচিন তেন্ডুলকর— যে কারও কেরিয়ারের ময়নাতদন্ত করতে বসলে প্রথমেই গোনা হয় বিদেশে সেঞ্চুরির সংখ্যা। বোলারদের ক্ষেত্রে বিদেশ-বিভুঁইয়ে উইকেট প্রাপ্তির খেরোর খাতার ওজন দেখাটাই চিরাচরিত! সঙ্গতও বটে। এ সবই কী হারিয়ে যাবে তা হলে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy