Advertisement
১১ মে ২০২৪
চাইলেও ক্যামেরা বসানো হচ্ছে না ঘরে

এশিয়াডে যাওয়া নিয়ে সংশয়ে মীরাবাই

মীরাবাই চাইলেও মেয়েদের ঘরে ক্যামেরা বসানো হলে তা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠবেই, সে জন্যই ক্রীড়ামন্ত্রক তা নিয়ে মাথা ঘামায়নি। দিল্লিতে ফোন করে জানা গেল, ক্রীড়ামন্ত্রকের কেউই চান না কারও ঘরে ক্যামেরা বসাতে।

মরিয়া: চোট সারিয়ে সুস্থ হওয়ার লড়াই মীরাবাইয়ের। —ফাইল চিত্র।

মরিয়া: চোট সারিয়ে সুস্থ হওয়ার লড়াই মীরাবাইয়ের। —ফাইল চিত্র।

রতন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৮ ০৪:০৭
Share: Save:

চার মাস আগের ছবিটা বদলে গিয়েছে এখন।

গত এপ্রিলে অস্ট্রেলিয়ার গোল্ড কোস্টে কমনওয়েলথ গেমসের মেয়েদের ভারোত্তোলনে সোনা জিতে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছিলেন দুই চানু—মীরাবাই এবং সঞ্জিতা।

মণিপুরের দুই মেয়ে এখন দুই প্রান্তে। পিঠের নীচের তীব্র ব্যথা নিয়েও জাকার্তা এশিয়াডের পদক জয়ের স্বপ্ন দেখছেন মীরাবাই। আর ডোপ পরীক্ষায় ধরা পড়ে শিবির থেকেই চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন সঞ্জিতা। তাঁর সোনা কেড়ে নেওয়া হতে পারে বলে খবর। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে এবং তিনি নির্দোষ, এই দাবি নিয়ে তদন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতরের দ্বারস্থ হয়েছেন সঞ্জিতা।

জাতীয় দলের তাঁর দীর্ঘ দিনের সতীর্থের অবস্থা দেখে রীতিমতো আশঙ্কিত মীরাবাই চানু। তাঁর ঘরে, বারান্দায় এবং অনুশীলনের জায়গায় সিসিটিভি বসানোর জন্য ক্রীড়া দফতরের কাছে আবেদন করেছেন তিনি। ‘‘আমি কী খাচ্ছি, কোনও ওষুধ খাচ্ছি কি না এটা রেকর্ড হয়ে থাকলে সেটা ভাল। সে জন্যই চিঠি দিয়েছি যাতে সব জায়গায় ক্যামেরা বসানো হয়। ঘরে বসালেও আপত্তি নেই।’’ পাতিয়ালায় অনুশীলনের ফাঁকে বুধবার বিকেলে বলে দেন মীরাবাই। সাই সূত্রের খবর, রিও অলিম্পিক্সে নরসিংহ যাদবের ডোপ কেলেঙ্কারি নিয়ে বিতর্কের জেরে স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (সাই) তাদের সব সেন্টারেই রান্নাঘর ও ডাইনিং হল-এ সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছে। কারণ নরসিংহ অভিযোগ করেছিলেন, সুশীলকুমারের লোকজন তাঁকে ফাঁসানোর জন্য খাবারে ওষুধ মিশিয়েছেন। মীরাবাই কি সে রকম কিছু আশঙ্কা প্রকাশ করছেন? বিশ্বাস করছেন না কাউকে? প্রশ্ন শুনে সরাসরি কোনও আশঙ্কার কথা সরাসরি স্বীকার করতে চাননি মণিপুরের মেয়ে।

কমনওয়েলথ গেমসে ৪৮ কেজিতে সোনা জেতা মেয়ের জবাব, ‘‘মে মাস থেকে আমার পিঠের ব্যথাটা হচ্ছে। দিল্লি, মুম্বইতে অনেক ডাক্তারের কাছে গিয়েছি। কেন ওটা হচ্ছে, তা কেউ বলতে পারছেন না। তবে ওঁরা কয়েকটা ওষুধ দিয়েছেন, সেগুলো খেতে হচ্ছে। সাইয়ের ডাক্তারের সঙ্গে যা করার করছি। তা ছাড়া ডাইনিং হলে গিয়ে খাওয়ার বাইরেও তো অনেক কিছু খেতে হয়। কী খাচ্ছি সেটাও সবাই দেখুক। সব ভেবেই ক্যামেরা লাগানোর কথা বলেছি।’’

মীরাবাই চাইলেও মেয়েদের ঘরে ক্যামেরা বসানো হলে তা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠবেই, সে জন্যই ক্রীড়ামন্ত্রক তা নিয়ে মাথা ঘামায়নি। দিল্লিতে ফোন করে জানা গেল, ক্রীড়ামন্ত্রকের কেউই চান না কারও ঘরে ক্যামেরা বসাতে। তাঁরা খোঁজ নিয়েও দেখেছেন, ঘরে ক্যামেরা বসানোর ব্যাপারে আপত্তি আছে প্রায় সব মেয়ে অ্যাথলিটের। যেমন ৬৩ কেজি বিভাগে এশিয়াডে সুযোগ পাওয়া বাংলার রাখী হালদার পাতিয়ালা থেকে ফোনে বললেন, ‘‘ও চাইলেও শুনছি ক্যামেরা বসানো নিয়ে অন্য সবার আপত্তি আছে।’’

কিন্তু মীরাবাই কি আদৌ জাকার্তা যেতে পারবেন? কারণ হিমাচল প্রদেশের শিবির থেকে ফেরার পর এক মাসেরও বেশি সময় ট্রেনিং থেকে দূরে তিনি। গত দু’দিন ব্যথা কম হওয়ায় অন্যদের সঙ্গে অনুশীলনে নেমেছেন সোনার মেয়ে। তবে ওজন তোলা শুরু করেননি। শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানোর অনুশীলন করছেন শুধু। বলছিলেন, ‘‘ব্যথাটা একটু কমেছে। আর একটু বিশ্রাম পেলেই ঠিক নেমে পড়ব। এশিয়াডে একটা পদক চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Saikhom Mirabai Chanu Weightlift Asiad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE