Advertisement
E-Paper

পিছিয়ে পড়েও ভলিতে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন বাংলার মেয়েরা

বাংলার সমর্থনে বহু দর্শক মাঠে এসেছিলেন এ দিন। শুরু থেকেই দর্শকদের চিৎকার করে বাংলা দলকে উজ্জীবিত করলেও সাই-এর সামনে প্রথমে কার্যত দাঁড়াতে পারেনি বাংলা। প্রথম সার্ভিস থেকেই পয়েন্ট পেতে থাকে সাই।

সুপ্রকাশ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:২৩
লড়াই: বর্ধমানের অরবিন্দ স্টেডিয়ামে। —নিজস্ব চিত্র।

লড়াই: বর্ধমানের অরবিন্দ স্টেডিয়ামে। —নিজস্ব চিত্র।

দু’ সেটে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ৩-২ সেটে ৪৪ তম জুনিয়র (অনূর্ধ্ব ১৮) ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপ জিতল বাংলার মেয়েরা। বর্ধমানের অরবিন্দ স্টেডিয়ামে ফাইনালে তারা স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া (সাই) কে হারিয়ে দেয়। এই অসাধ্য সাধন করে রিজার্ভ বেঞ্চে বসেই একাই কাঁদছিলেন কোচ নবকুমার বসু। খেলোয়াড় থেকে দর্শকরা তাঁকে জড়িয়ে ধরতেই সম্বিৎ ফিরে কোচের একটাই কথা, “আমার মেয়েরা ভারত সেরা। আর কিছু চাই না।’’ আনন্দে তখন চোখে জল স্নেহা ঘোষ, তিথি ধারা, রক্তিমা সাহাদের। এই জয়ের খবর শুনে জয়ী দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।

বাংলার সমর্থনে বহু দর্শক মাঠে এসেছিলেন এ দিন। শুরু থেকেই দর্শকদের চিৎকার করে বাংলা দলকে উজ্জীবিত করলেও সাই-এর সামনে প্রথমে কার্যত দাঁড়াতে পারেনি বাংলা। প্রথম সার্ভিস থেকেই পয়েন্ট পেতে থাকে সাই। ৮-৪, ১৮-১৪ ব্যবধানে বারবার বাংলাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যায় সাই। স্নেহার স্ম্যাশ বা সেন্ট্রাল ব্লকার তিথির ব্লক— কিছুই যেন ঠিকঠাক হচ্ছিল না। ২৫-২৩ ব্যবধানে প্রথম সেট জেতে সাই। দ্বিতীয় সেটেও একই পরিস্থিতি। প্রাধান্য নিয়ে খেলা শুরু করে সাই। প্রথমেই ৪-০ সেটে এগিয়ে যায় সাই। এর পরে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টা করে প্রথম বার ম্যাচে ৬-৪ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলা। কিন্তু ও-টুকুই। ডিফেন্সের ভুল, তিথির হাত থেকে ব্লক বেড়িয়ে যাওয়া— সব মিলিয়ে ২৫-২১ পয়েন্টে দ্বিতীয় সেটও হাতছাড়া হয় বাংলার।

দু’টি সেট হেরে যাওয়ার পরে দর্শকদের একাংশ তখন ঘরমুখো। সাই এর প্লেয়ারদের স্বাস্থ্য আর উচ্চতা বাংলার থেকে তাঁদের ফারাক করে দিচ্ছে ইত্যাদি মন্তব্যও শুরু হয়ে যায়। কিন্তু ঘরমুখো দর্শকদের ভুল প্রমানিত করে তিন নম্বর সেটে ম্যাচে ফেরে বাংলা দল। ৪-০ পয়েন্টে এগিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দেয় বাংলা শিবির। বেশ কয়েক বার শরীর ছুঁড়ে দিয়ে বাংলার পয়েন্ট নিশ্চিত করেন লিবেরো অনন্যা দাস। এই সেটে কার্যত সাই কে দাঁড় করিয়ে বাংলা ২৫-১৩ পয়েন্টে জয় তুলে নেয়। জিততে মরিয়া বাংলা দল আর আর দর্শকদের চিৎকারের সামনে আর মাথা তুলতে পারেনি সাই। প্রতীক্ষা দাস, অষ্টমী শীল, রক্তিমা সাহারা তখন আহত বাঘিনীর মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছে। চতুর্থ সেটে এক সময় ১০-৫ পয়েন্টে এগিয়ে যায় বাংলা। স্নেহা- অনন্যা যুগলবন্দি তখন ফুল ফোটাচ্ছে অরবিন্দ স্টেডিয়ামের দু’নম্বর কোর্টে। ২৫-২১ ব্যবধানে চতুর্থ সেট যেতে বাংলা।

১৫ পয়েন্টের ফাইনাল সেটে প্রথম থেকে দাপট দেখাতে শুরু করেন টিম রক্তিমা। বাংলা দল ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে যেতেই গ্যালারিতে আনন্দোৎসব শুরু হয়ে যায়। ১০-০৭, ১৩-০৯, ১৪-০৯ এ ভাবে এগোতে থাকে বাংলা। শেষ পয়েন্ট জয়ের সঙ্গে সঙ্গেই কোর্টে ভিতরে দর্শক ঢুকে পড়ে। গতবার তামিলনাড়ুর কাছে হেরে রানার্স হওয়ার দুঃখ ভুলে এ বার ভারত সেরার সম্মান। খুশি পৌলমী, অনন্যা, রক্তিমা, তিথি, অষ্টমীরা। সরকারী কোচ স্বপন দত্ত, ম্যানেজার শ্রাবণী ঘোষরা কৃতজ্ঞতা জানালেন দর্শকদের। জাতীয় কোচ জিই শ্রীধরণ বলেন, ‘‘২-০ পিছিয়ে পড়েও পর পর তিন সেটে জয় আশ্চর্যের। তিথি ধারা ও স্নেহা ঘোষের খেলা বিশেষ করে ভাল লেগেছে। বাংলা দল থেকে আরও কয়েক জন জাতীয় দলে সুযোগ পেতে পারে।’’ পুরস্কার তুলে দেন জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) অনুরাগ শ্রীবাস্তব।

Volleyball অনূর্ধ্ব ১৮ জুনিয়র ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy